বাম গণতান্ত্রিক জোটের মিছিলে পুলিশি লাঠিচার্জের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, আওয়ামী সরকারের জুলুমে সারা দেশের মানুষ আজ দিশাহারা। এদেশে কারো কোনো অধিকার নেই, মনে হয় সব অধিকার কেবল আওয়ামী লীগের। বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর কেবল সভা-সমাবেশই নয়, শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন কিংবা ঘরোয়া কোনো কর্মসূচিতেও প্রচণ্ড বাধা দিয়ে পণ্ড করছে বর্তমান সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বেপরোয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল ও গরম পানি নিক্ষেপ এবং গুলিবর্ষণ করে বর্তমান গণবিরোধী ও ভোটারবিহীন সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসন ও নির্যাতন নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী আন্দোলনকারীদের ক্ষতবিক্ষত করছে। তিনি বলেন, হত্যা, গুম, ক্রসফায়ারের হিড়িক লেগেই আছে। বাম গণতান্ত্রিক জোটের মিছিলের ওপর পুলিশের বর্বর হামলায় এটাই প্রমাণিত হলো যে, সরকার আবারও ৫ই জানুয়ারির মতো আগামী জাতীয় নির্বাচন একতরফাভাবে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জোর করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে রাখার মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু জনগণ সরকারের কোনো অশুভ পরিকল্পনাই বাস্তবায়িত হতে দেবে না।
মির্জা আলমগীর বলেন, আমি বাম গণতান্ত্রিক জোটের শান্তিপূর্ণ মিছিলের ওপর পুলিশি হামলা ও নেতাকর্মীদেরকে গুরুতর আহত করার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করছি। উল্লেখ্য, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙে দিয়ে ‘নিরপেক্ষ তদারকি সরকার’ গঠনের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ ১০ দফা দাবি নিয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
পরে মিছিল নিয়ে নির্বাচন কার্যালয় অভিমুখে রওনা দিয়ে কাওরান বাজারের সার্ক ফোয়ারার কাছে পৌঁছলে পুলিশ বিনা উস্কানিতে মিছিলের ওপর চড়াও হয় এবং নির্মমভাবে লাঠিচার্জ করে। পুলিশি হামলায় জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি ও সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লুনা নূরসহ অনেক নেতাকর্মী আহত হন। এদিকে অপর এক বিবৃতিতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেলকে গ্রেপ্তারের পর ৫ দিনের পুলিশি রিমান্ডে নেয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য বিএনপিকে কাঁটা ভেবে দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে গণহারে গ্রেপ্তারে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বর্তমান জনসমর্থনহীন আওয়ামী লীগ সরকার। আর সেটিরই শিকার হয়েছেন হাবিব-উন নবী খান সোহেল। তিনি সোহেলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব মামলা প্রত্যাহার, রিমান্ড বাতিল ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান। এছাড়া বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর বাসভবনে সরকার সমর্থকদের হামলা ও ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনার প্রতিবাদ জানান।