পাবনার সুজানগর পৌরসভায় এক কাউন্সিলরের বাড়িতে স্কুলছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণ শেষে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে ওঠেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। সুজানগর থানার ওসি শরিফুল আলম বলেন, শুক্রবার বিকালে অভিযোগ পাওয়ার পর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাহেব আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খুঁজছেন তারা। পৌর আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক নায়েব আলীর ছোট ভাই সাহের আলী তার বাড়িতে ওই কিশোরীকে নেয়া হয়েছিল স্বীকার করলেও ধর্ষণ বা মুক্তিপণ আদায়ের কথা তার জানা নেই বলে দাবি করেন।
স্থানীয় একটি বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রীর মায়ের অভিযোগ, ভবানীপুর এলাকার সজীব নামের এক তরুণের সঙ্গে তার মেয়ের প্রেমেরা সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। বুধবার সন্ধ্যায় পরিবারকে না জানিয়ে সজীবের সঙ্গে বেরিয়ে যায় তার মেয়ে। তাদের বিয়ে করতে সহযোগিতা করার কথা বলে ভবানীপুর এলাকার আনাই তাদের নিয়ে কাউন্সিলর সাহেব আলীর বাড়িতে যায়। সেখানে নিয়ে মেয়ের কাছ থেকে টাকা-পয়সা আর সোনার গয়না কেড়ে নেয়া হয়। পরে সাতজন মিলে তাকে ধর্ষণ করে।
মেয়েটির মা বলছেন, ধর্ষণের কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে বৃহস্পতিবার বাসায় খবর দিয়ে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন কাউন্সিলর সাহেব আলী।
তিনি জানান, আমি বাড়ির আসবাবপত্র বেচে ২০ হাজার টাকা সাহেব আলীকে দিয়ে শুক্রবার মেয়েকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। স্থানীয়রা জানান, ভবানীপুর এলাকার জয়নাল খানের ছেলে আনাই কাউন্সিলর সাহেব আলীর সহযোগী হিসেবে পরিচিত।
ওসি শরিফুল বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করার পাশাপাশি অন্যদের আটকের চেষ্টা চলছে। কাউন্সিলর সাহেব আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খোঁজা হচ্ছে। মেয়েটিকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাবনা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে শুক্রবার রাত পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি বলে জানান ওসি। আটক তিনজনের নাম পরিচয়ও তিনি তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ করেননি।
আর মেয়েটির মা বলছেন, তার স্বামী নেই। মেয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে গেছে বুঝতে পারার পর তিনি একা কী করবেন বুঝে উঠতে পারেননি।
পাবনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই স্কুলছাত্রী সাংবাদিকদের বলেন, তাকে কাউন্সিলরের বাড়িতে বুধবার রাত থেকে আটকে রাখা হয়। শুক্রবার ওই বাড়ির সামনে থেকেই তার মা তাকে নিয়ে যায়।
হাসপাতালের চিকিৎসক শামিমা খাতুন পলি বলেন, মেয়েটি বলেছে, তাকে দলবেঁধে ধর্ষণ করা হয়েছে। প্রাথমিক পরীক্ষায় সে রকমই আলামত মিলেছে।
অভিযোগের বিষয়ে কাউন্সিলর সাহেব আলী বলেন, ওই স্কুলছাত্রীকে কয়েকজন ছেলেপেলে বুধবার সন্ধ্যায় আমার বাড়িতে নিয়ে এসেছিল। রাত দেড়টার দিকে আমি তাদের বের করে দিয়েছি। এখন শুনছি আনাই তার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। ধর্ষণের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।