ফরিদগঞ্জে পারিবারিক অস্থিরতা থেকে মুক্তি পেতে শনিবার সন্ধ্যায় ফাঁসীতে ঝুলে মুত্যু বরণ করেছেন সুমী আশরাফ নামের নবম শ্রেণির ছাত্রী। ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ রোববার সকালে সুমীর লাশ উদ্ধার করে চাঁদপুর মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় ফরিদগঞ্জ থানায় ইউডি মামলা দায়ের করা করা হয়েছে। এমন ঘটনায় পরিবার, সহপাঠী ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পুলিশ জানায়, গ্রামের অস্বচ্ছল পরিবারের সন্তান সুমী আশরাফ (১৫) স্থানীয় আলীয়া মাদ্রাসার ভোকেশনাল শাখায় নবম শ্রেণিতে পড়তেন। বাবা আবুল বাশার (৫৫) গ্রামের পথে আইসক্রীম বিক্রি করেন। তিন ভাই রাসেল (২২), রাজু (২০) ও সাথী (১৮) সমাজের অপরাধমূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত। তাদের নামে সংশ্লিষ্ট থানায় চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতিসহ কয়েকটি মামলা রয়েছে।
বর্তমানে তারা তিনজনই পলাতক। একদিকে অভাব অনটনের সংসার অন্যদিকে বখে যাওয়া তিন ছেলের ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে পারছিলেন না বাবা আবুল বাশার। এতে বাবা ও মা ফিরোজা বেগমের মধ্যে দিনরাত অনবরত ঝগড়া লেগেই থাকতো। এমনকি গত দুদিন আগেও তিন ভাইকে ধরতে থানা পুলিশ তল্লাশী চালায় তাদের বাড়িতে। এরপর থেকে বাবা মায়ের ঝগড়া আরও বেড়ে গেছে। শুক্র ও শনিবার দিনরাত অনবরত ঝগড়া করছিলো তার বাবা-মা। মাদ্রাসা পড়–য়া সুমী আশরাফ বাবা মায়ের ঝগড়া থামানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে ঝগড়া চলাকালীন সময়েই সকলের অলক্ষে ঘরের আড়ার সঙ্গে ফাঁসীতে ঝুলে নিজের প্রাণ বিসর্জন দেন। ঝগড়া শেষে বাবা-মা ঘরে ঢুকলে সুমীর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে গিয়ে সুমীর দেহ নামিয়ে পার্শ্ববর্তী স্বাস্থ কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ পরান জানান, পারিবারিক অস্থিরতার কারণে সুমী ফাঁসীতে ঝুলেছে বলে বাড়ির লোকজন মনে করছেন।
এ ব্যপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাছির জানান, বাবা মায়ের ঝগড়া ও সংসারে লেগে থাকা অশান্তির জের ধরেই সুমী ফাঁসীতে ঝুলেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে তদন্ত করা হবে।