ধোবাউড়া উপজেলায় অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর গ্রুপিংয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়েছে। সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাড. প্রমোদ মানকিনের মৃত্যুর পর থেকেই ধোবাউড়া আওয়ামী লীগে একক ক্ষমতার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নিজেদের মাঝে শুরু হয় কোন্দল আর গ্রুপিং। নিজেদের কোন্দলে দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে যায় উপজেলা আওয়ামী লীগ। ৬৮ সদস্যের কমিটিতে ৫৫ জন সদস্যকেই অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন প্রয়াত সাবেক প্রতিমন্ত্রীর মনোনীত করা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. আঃ মান্নান আকন্দকে। উপজেলা আওয়ামী লীগ দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে সভাপতিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করলেও দলের কোনো বিষয়েই হস্তক্ষেপ করেন নি ময়মনসিংহ-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জুয়েল আরেং। এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিকে অবৈধ কমিটি বলে দাবি করছে উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশ। দলীয় একটি সূত্রে জানা যায়, প্রমোদ মানকিন পাঁচ বছর আগে আঃ মান্নান আকন্দকে সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফুরকান উদ্দিন সেলিম মৃধাকে সাধারণ সম্পাদক করে ৬৮ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি জেলা এবং কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে জমা দেন। তবে সেটি অনুমোদন দেয় নি জেলা বা কেন্দ্রীয় কমিটি।
অনুমোদনহীন এ কমিটি দিয়েই চলতে থাকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম। ২০১৩ সালের ১লা সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত হয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফুরকান উদ্দিন সেলিম মৃধা। এরপর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয় আরেক নেতা প্রিয়তোষ বিশ্বাস বাবুলকে। গ্রুপিং আর কোন্দলের মধ্য দিয়ে দলীয় কার্যক্রম চলতে থাকলেও হঠাৎ আকস্মিক ভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. আঃ মান্নান আকন্দ। সভাপতির মৃত্যুর পর উপজেলা আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য, শূন্য থাকা সভাপতি ও সদস্য পদ পূরণসহ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের লক্ষ্যে ৮ই সেপ্টেম্বর ধোবাউড়া মহিলা কলেজ হলরুমে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির উদ্যোগে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। দলীয় কোন্দলে নিজেদের মাঝে কোনো সমঝোতা না থাকায় কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই সভা সমাপ্ত ঘোষণা করেন উপস্থিত থাকা সংসদ সদস্য মি. জুয়েল আরেং। উপজেলা আওয়ামী লীগকে আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে ঐক্যবদ্ধ উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটির কোনো অনুমোদন না থাকায় বর্তমানে কেউ কাউকে মানছে না, নিজেদের দলীয় কোন্দল চরম আকার ধারণ করছে বলে জানান উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত উসমান বলেন, বর্তমানে আওয়ামী লীগে গ্রুপিং ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী সংসদ নির্বাচনের নৌকাকে জয়ী করা প্রায় অসম্ভব। নতুন করে উপজেলা কমিটি না করলে এ গ্রুপিং নিরসন হবে না। এ নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়তোষ বিশ্বাস বাবুল বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগে বর্তমানে কোনো গ্রুপিং ও কোন্দল নাই। আমরা সকলেই আগামী সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীককে বিজয়ের লক্ষ্যে মাঠে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছি।