× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কালাম-আজিলের পরিবারে শুধুই কান্না

বাংলারজমিন

আশরাফুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ থেকে
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, মঙ্গলবার

সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে রাজধানীতে গিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালানোর কাজ নিয়েছিলেন ইটনা উপজেলার আড়ালিয়া গ্রামের মো. আবুল কালাম (৪০) ও মো. আজিল হক (৩৫)। ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে রাজধানীর অলিগলি-সড়কে দু’জনেই নিত্য অটোরিকশা চালালেও কোনদিন তাদের অটোরিকশা দুর্ঘটনার কবলে পড়েনি। কিন্তু সড়কে যান চালানো মানুষ দু’টোই এবার মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অকালে ঝরে গেলেন। কফিনবন্দী লাশ হয়ে ফিরে এলেন চিরচেনা গ্রামের নিজ বাড়িতে। রোববার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডে ঘটে মর্মান্তিক এই সড়ক দুর্ঘটনাটি। নিহত মো. আবুল কালাম আড়ালিয়া গ্রামের মৃত মো. সামসুদ্দিনের ছেলে এবং আজিল হক পাশাপাশি বাড়ির মৃত ফজর আলীর ছেলে। স্বজনরা জানান, মো. আবুল কালাম ও মো. আজিল হক রাজধানীর রায়ের বাজার এলাকার সাদেক খান রোডে বাসা ভাড়া নিয়ে সপরিবারে বসবাস করতেন। তারা মোহাম্মদপুর বিহারী ক্যাম্প এলাকার একটি গ্যারেজ থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে ভাড়ায় চালাতেন।
প্রতিদিনের মতো রোববার ভোর ৫টার দিকে আবুল কালাম, আজিল হক ও আজিল হকের ছোট ভাই আজিজুল হক রিকশাযোগে রাজধানীর রায়ের বাজার থেকে মোহাম্মদপুর বিহারী ক্যাম্পে যাচ্ছিলেন গ্যারেজ থেকে অটোরিকশা সংগ্রহ করতে। কিন্তু পথে নূরজাহান রোডে বেপরোয়া এক ট্রাক চাপা দেয় তাদের রিকশাটিকে। এতে ঘটনাস্থলেই আবুল কালাম ও আজিল হকের মৃত্যু হয়। আহত হন নিহত আজিল হকের ছোট ভাই আজিজুল হক। থানা পুলিশের অনুমতি নিয়ে সন্ধ্যায় স্বজনেরা দু’জনের কফিনবন্দি লাশ নিয়ে আসেন নিজগ্রাম আড়ালিয়ায়।
এমন করুণ মৃত্যু আর স্বজন হারানোর খবর পেয়ে শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়ে আড়ালিয়া গ্রাম। গ্রামে দু’টি লাশ পাশাপাশি রাখার পর সৃষ্টি হয় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের। এসময় স্বজনসহ এলাকাবাসীর আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে আকাশ-বাতাস। পরে গ্রামের সামনের মাঠে নামাজে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়। জানা গেছে, নিহত মো. আবুল কালামের স্ত্রী নাছিমা আক্তার অন্তঃসত্ত্বা। তার দু’টি শিশু সন্তান রয়েছে। এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে তন্বী (৭) আর ছোট ছেলে নাজমুল (৫)। অন্যদিকে নিহত আজিল হকের স্ত্রী রিনা আক্তার ছাড়াও চারটি শিশু সন্তান রয়েছে। দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে সবার বড় সানজিদা (১২), তারপর তানিয়া (৮) এবং ছোট দুই ছেলে আরিফ (৫) ও আড়াই বছরের শরীফ।
স্বজনেরা জানান, এই দুর্ঘটনা দু’টি পরিবারের সবকিছু তছনছ করে দিয়েছে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারানোয় দু’টি পরিবারেই এখন বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে। অবুঝ সন্তানদের নিয়ে তারা এখন পড়েছেন অকূল পাথারে। পরিবার দু’টিতে এখন শুধুই কান্না আর আহাজারি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর