× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা, আজ শুনানি

দেশ বিদেশ

স্টাফ রিপোর্টার
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, বুধবার

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় অসমাপ্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আজ বুধবার দিন ধার্য করেছেন আদালত। ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান গতকাল শুনানি শেষে এদিন ধার্য করেন। একই সঙ্গে এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন বর্ধিত করেছেন বিচারক। আর গত সোমবার মামলার দুই আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান আদালতের প্রতি যে অনাস্থা জানিয়েছিলেন সে বিষয়ে আজ আদেশ দেবেন বলে গতকাল আইনজীবীদের জানান আদালত। গতকাল এ মামলায় আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য ছিল। এদিন আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার ছাড়া আর কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। তবে, আদালতের আদেশ অনুযায়ী বিরতির পর যুক্তিতর্কের শুনানির কথা থাকলেও এ সময় খালেদা জিয়ার কোনো আইনজীবী আদালতে না থাকায় উষ্মা প্রকাশ করে অন্য আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে বিচারক বলেন, ‘আপনারা কি আদালতে আসেন জামিন নেয়ার জন্য? আপনারা বিচারকাজকে বিলম্বিত করছেন।’ গত সোমবার শুনানিকালে আদালতের প্রতি অনাস্থা জানান জিয়াউল ইসলাম মুন্না। অনাস্থা জানানোর পর পরই তাঁর অন্তর্বর্তীকালীন জামিন বাতিল করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালতের বিচারক।
গতকাল শুনানির সময় তাঁকে আদালতের কাটগড়ায় হাজির করা হয়। তবে, তাঁর আইনজীবী মো. আমিনুল ইসলাম আদালতে আসেননি। আসামি মনিরুল ইসলাম খানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আখতারুজ্জামান। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচারকাজ নাজিমউদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারে চলছে। গত ২০শে সেপ্টেম্বর এক আদেশে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই এই মামলার বিচারকাজ চলবে বলে আদালতের আদেশে জানানো হয়। গতকাল আসামিপক্ষের আইনজীবীরা যৌক্তিক সময়ের জন্য শুনানি মুলতবির আবেদন জানান। অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল অসমাপ্ত যুক্তিতর্কের শুনানি শুরুর আবেদন জানান। শুনানিতে দুদকের আইনজীবী বলেন, ‘এই আদালত নিয়ে ভিতরে বাইরে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কেমন যেন গুমোট অবস্থা তৈরি হয়েছে। আইনের আশ্রয়ে এসেও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতকে কোনো ধরনের সহযোগিতা করছেন না।’ তিনি বলেন, ‘দুদকের পক্ষে যুক্তিতর্কের শুনানি শেষ হয়েছে। আসামিপক্ষের আংশিক যুক্তিতর্ক হয়ে গেছে। যুক্তিতর্কের জন্য ধার্য আছে কিন্তু আসামিপক্ষের আইনজীবীরা শুনানি করছেন না। তাঁরা যুক্তিতর্কের পরিবর্তে আদালতের প্রতি অনাস্থা জানাচ্ছেন। কিন্তু এমন কোনো প্রেক্ষাপট তৈরি হয়নি যে আসামিপক্ষ অনাস্থা দেবে।’ মোশাররফ হোসেন কাজল আরো বলেন, ‘এই মামলার চারজন আসামি। কোনো কোনো সময় তাঁদের আইনজীবীরা একত্রিত হয়ে আবেদন করছেন আবার কখনো পরিস্থিতি বুঝে পৃথক আবেদন করছেন। আমরা এখানে স্বচ্চ বিচার প্রক্রিয়ার জন্য এসেছি। কিন্তু তাঁরা বিচারিক প্রক্রিয়ার সেই আকাঙ্ক্ষিত আচরণ থেকে সরে যাচ্ছেন। একদিকে তাঁরা বলছেন এই আদালতে তাঁরা ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন। অন্যদিকে এই আদালতের বিরুদ্ধে কথায় কথায় অনাস্থা দিচ্ছেন। এটি দ্বিমুখী ও স্ববিরোধী আচরণ। তাঁদের এই আচরণ দুরভিসন্ধিমূলক। মামলার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করার জন্য আদালতে দাঁড়িয়ে যে ধরনের কার্যকলাপ তাঁরা করছেন তা অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক। এভাবে চললে বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে।’ দুদকের আইনজীবী বলেন, ‘খালেদা জিয়া আদালতে আসতে অনিচ্ছুক। তিনি না আসলে তাকে তো জোর করে আনা সম্ভব না। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী। সম্মানীয় ব্যক্তি। একজন বয়স্ক মহিলা। তাঁর সুবিধার কথা ভেবেই এখানে আদালত বসানো হয়েছে। তাঁর সম্মানের কথা ভেবে কারা কর্তৃপক্ষ তাঁকে আনছেন না। কিন্তু এ সুযোগ তাঁরা নিচ্ছেন।’ আদালতের বিচারকের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘ফৌজদারি আইন অনুযায়ী এমন অবস্থায় আপনি কোনোভাবেই এই মামলার কার্যক্রম স্থগিত করতে বাধ্য নন। আইন তাঁর নিজস্ব গতিতে চলবে। যদি আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতে না আসেন, যুক্তিতর্কের শুনানিতে অংশ না নেন তাহলে রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হোক।’ শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘একটা বিচার প্রক্রিয়া শেষ করার দায়িত্ব শুধু আসামিপক্ষের নয়, রাষ্ট্রপক্ষেরও দায়িত্ব আছে। কিন্তু খালেদা জিয়া অসুস্থ। তাঁর উপস্থিতি ছাড়া আমরা যুক্তিতর্ক করতে চাচ্ছি না।’ আদালতের বিচারকের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘গত ২০শে সেপ্টেম্বর আপনি যে আদেশ (খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচার) দিয়েছিলেন সেই আদেশের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাব। কিন্তু উচ্চ আদালতে অবকাশ চলছে। আমাদের ওই পর্যন্ত সময় দেন। আমরা যুক্তিতর্কের শুনানি করবো।’ মাসুদ আহমেদ তালুকদার আরো বলেন, ‘খালেদা জিয়া নিজে আদালতে এসে বলে গেছেন যে তিনি গুরুতর অসুস্থ। আমরাও তাঁকে দেখে এসেছি। তিনি একা চলতে পারেন না। এক জায়গায় বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারেন না। কয়েকদিন আগে বাথরুমে পড়ে গিয়েছিলেন। তাঁর চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড হয়েছে। আইজি প্রিজনের বক্তব্য আমরা পেয়েছি। সম্ভবত দু-এক দিনের মধ্যেই খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থা হবে। তিনি সুস্থ হলেই আদালতে আসবেন।’ খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে এই মামলার বিচারকাজ চলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে। তাই যুক্তিতর্কের শুনানির জন্য যৌক্তিক সময়ের আর্জি জানান তিনি। আসামি মনিরুল ইসলাম খানের আইনজীবী মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ২০শে সেপ্টেম্বর যে আদেশ দেয়া হয়েছে সেই আদেশের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে রিভিশন আবেদন করবো। সেই পর্যন্ত সময়ের আর্জি জানান তিনি। ফৌজদারি কার্যবিধির ৫২৬ ধারা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আদালতের প্রতি যদি অনাস্থা জানানো হয় তাহলে তৎক্ষণাত বিচার কার্যক্রম বন্ধ করার কথা বলা হয়েছে। তবে, দুদকের আইনজীবী তাঁর এই বক্তব্যে আপত্তি জানিয়ে বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির এই বিধান এই পরিস্থিতিতে প্রযোজ্য হবে না। মামলার বিচারকাজ তাঁর নিজস্ব গতিতে চলবে। শুনানি নিয়ে খালেদা জিয়ার জামিন বর্ধিতকরণের আদেশ দেন বিচারক। একই সঙ্গে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে আধা ঘণ্টার বিরতিতে যাওয়ার আগে আদালত আইনজীবীদের বিরতির পর যুক্তিতর্কের শুনানি করার আদেশ দেন। তবে, বিরতির পর মনিরুল ইসলাম খানের আইনজীবী মো. আখতারুজ্জামান আদালতকে এই বলে অবহিত করেন যে, খালেদা জিয়ার পক্ষে কোনো আইনজীবী নেই। তাঁরা তাঁদের নিজেদের মামলায় জামিনের জন্য হাইকোর্টে গিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে আদালতের বিচারক বলেন, ‘ওনাদের বলা হয়েছে যুক্তিতর্কের জন্য। কিন্তু জামিন (খালেদা জিয়ার জামিন বর্ধিতকরণ) পেয়েই তারা চলে গেলেন। আপনারা কি আদালতে আসেন কেবল জামিন নেয়ার জন্য? আপনারা বিচারকাজকে বিলম্বিত করছেন।’ একপর্যায়ে আদালত বুধবার (আজ) যুক্তিতর্কের শুনানির আদেশ দেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর