× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক /অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় সরকার

প্রথম পাতা

কূটনৈতিক রিপোর্টার, নিউ ইয়র্ক থেকে
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, বুধবার

আগামী সাধারণ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে এবং সব রাজনৈতিক দল এতে অংশ নেবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ বিষয়ক মন্ত্রী জেরেমি হান্ট সোমবার সকালে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক কক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। বৈঠকের পরে পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। জেরেমি হান্ট বলেন, বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করছে যুক্তরাজ্য। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরাও চাই আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে এবং সব রাজনৈতিক দল এই নির্বাচনে অংশ নেবে। বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে আলোচনাকালে বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোরপূর্বক বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, এই সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশ মিয়ানমারের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে। তবে, তারা চুক্তি অনুযায়ী কাজ করছে না।

শেখ হাসিনা বলেন, যদি আমরা উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে পারি এবং তাদের দেশে ফেরার জন্য নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে রোহিঙ্গারা তাদের দেশে ফিরবে।
তবে তেমনটি ঘটছে না। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের ভাসানচর নামে একটি দ্বীপে স্থানান্তরে সবার সহযোগিতা কামনা করেন। জেরেমি হান্ট অচিরেই বাংলাদেশ সফরে তার আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী মিশন আয়োজিত গ্লোবাল কল টু অ্যাকশন অন ওয়ার্ল্ড ড্রাগ প্রোবলেম বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে অংশ নেন। অন্যান্য বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জে. ট্রাম্প অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর তিন দফা
শরণার্থী বিষয়ক বৈশ্বিক প্রভাব শীর্ষক এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে যোগদান করে রোহিঙ্গা সংকট চিরতরে সমাধানের লক্ষ্যে বৈষম্যমূলক আইনের বিলোপ, নীতিমালা এবং রোহিঙ্গাদের প্রতি নিষ্ঠুরতা বন্ধসহ তিন দফা সুপারিশ উপস্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিন দফা সুপারিশ উপস্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ স্বল্প সময়ের মধ্যে ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বাসস্থান, খাদ্য ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করেছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে জোরপূর্বক তাদের ঘর-বাড়ি থেকে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে। অথচ তারা সেখানে কয়েকশ’ বছর ধরে বসবাস করে আসছে। প্রথম সুপারিশে প্রধানসন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারকে অবশ্যই বৈষম্যমূলক আইন ও নীতি বিলোপ এবং রোহিঙ্গাদের প্রতি নিষ্ঠুরতা বন্ধ ও তাদের সে দেশ থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে হবে। দ্বিতীয় সুপারিশে তিনি বলেন, মিয়ানমারকে অবশ্যই সব রোহিঙ্গার নাগরিকত্ব প্রদানের সঠিক উপায়, নিরাপত্তা নিশ্চিত ও আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। প্রয়োজনে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষায় মিয়ানমারের ভেতরে ‘সেফ জোন’ তৈরি করতে হবে। তৃতীয় সুপারিশে শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৈরাজ্য রোধে অপরাধীদের জবাবদিহি, বিচার, বিশেষ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের সুপারিশমালার আলোকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।

জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেজের উপস্থিতিতে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক হাইকমিশনার ‘শরণার্থী বিষয়ক বৈশ্বিক প্রভাবের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক: এ মডেল ফর গ্রেটার সলিডারিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন’ শীর্ষক এ বৈঠকের আয়োজন করে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছি, যা আমাদের জন্য মারাত্মক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা তাদের জন্য ৬ হাজার একরের বেশি জমি বরাদ্দ দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক ও অন্যান্য সম্পদ, সমাজ, পরিবেশ ও অর্থনীতি আন্তর্জাতিক অংশীদার, বিশেষ করে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো সাহায্য দিয়ে আসছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট মিয়ানমার সরকারই তৈরি করেছে এবং মিয়ানমারকে এর সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। তিনি বলেন, দায়িত্বশীল সরকার হিসেবে আমরা মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য আমরা আমাদের সীমান্ত খুলে দিয়েছি। এটা করে আমরা শুধু তাদের জীবন রক্ষা করিনি বরং আমরা আমাদের সীমান্ত সুরক্ষিত করে পুরো অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বজায় রেখেছি। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ও নিরাপত্তা এবং মর্যাদার সঙ্গে নিজ দেশে স্থায়ীভাবে ফেরত নেয়া দেখতে চায়। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত না নেয়া পর্যন্ত আমরা তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণের চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা ভাষানচর নামক একটি দ্বীপের ব্যাপক উন্নয়ন করে রোহিঙ্গাদের সেখানে স্থানান্তর করবো, যাতে তারা ওই দ্বীপে উন্নত জীবনযাপন ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারে। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কম্প্যাক্ট অন রিফিউজি’ এমন সময় গ্রহণ করা হলো যখন সারা বিশ্ব মারাত্মক শরণার্থী সংকট মোকাবিলা করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব দেশ শরণার্থীদের বোঝা কাঁধে নেয় বিশ্বের উচিত তাদের এ অবদানকে স্বীকৃতি দেয়া এবং বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে অবশ্যই রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, শরণার্থী সংকট সমাধানে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্থায়ীভাবে ফেরত নেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর