ভারতে আটক হওয়া ৭ রোহিঙ্গাকে গতকাল বৃহষ্পতিবারই মিয়ানমার সরকারের হাতে তুলে দিয়েছে ভারত। আর এ নিয়েই ভারতে প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। দেশটির মানবাধিকার সংগঠনের পাশাপাশি রাষ্ট্রপুঞ্জও এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার ও বিষয়ে বলেছেন, নিয়ম মেনেই মিয়ানমার সরকার নাগরিক হিসেবে তাদের স্বীকৃতি দেবার পরই দেশে, ফিরে যেতে আগ্রহী ৭ রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ভারতের হস্তান্তরের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, জোর করে ওই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে পাঠিয়ে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে ভারত। রোহিঙ্গা হস্তান্তরের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও করেছিলেন ভারতে আশ্রয় নেওয়া দুই রোহিঙ্গা মহম্মদ সালিমুল্লা ও মহম্মদ শাকির। আদালতে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ আবেদনকারীদের পক্ষে বলেছেন, আদালতের কর্তব্য রাষ্ট্রহীনদের রক্ষা করা। ওই রোহিঙ্গারা শরণার্থী, অনুপ্রবেশকারী নয়। ওই সাত জনের সঙ্গে কথা বলার জন্য আগে রাষ্ট্রপুঞ্জের হাইকমিশনার বা তার প্রতিনিধিদের পাঠানো হোক।
তার আর্জি অবশ্য খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। এরপরই ৭ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারের হাতে তুলে দিযেছে ভারত।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার মণিপুরের মোরে-তামু সীমান্তের জিরো পয়েন্টে দুই দেশের মধ্যে বন্দি হস্তান্তর সংক্রান্ত নথি স্বাক্ষরিত হয়েছে। পরে মিয়ানমার পুলিশ তাদের নিয়ে চলে গিয়েছেন। এই প্রথম সরকারিভাবে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের মিয়ানমারের হাতে তুলে দিয়েছে ভারত। সরকারের শীর্ষ আইনজীবী তুষার মেটা জানান, মিয়ানমার দূতাবাস এই সাত জনকে তাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে শংসাপত্র দেবার পরই তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে। শিলচর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে আটক বাকি ৬ জনও অপেক্ষায় রয়েছেন দেশে ফেরার। তাদের ঠিকানা খুঁজে পেলে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছে মিয়ানমার সরকার।
জানা গেছে, আসামের জেলগুলিতে এখনও ৩২ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছেন। যাদের মধ্যে তেজপুরেই রয়েছেন ১৫ জন। তাদের সাত জন আবার নাবালক। আসামের সাবেক কংগ্রেস বিধায়ক আতাউর রহমান মাঝার ভুঁইয়ার বক্তব্য, নির্যাতনের শিকার হয়েই মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা দেশ ছাড়ছেন। একই কারণে এ দেশে আসা হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা ভাবা হলে, রোহিঙ্গাদেরও একই মর্যাদা দেয়া প্রয়োজন।