ছাতকের চরমহল্লা ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি দীর্ঘদিন ধরে অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। বছরের প্রায় সময়ই পরিবার কেন্দ্রটি তালাবদ্ধ অবস্থায় থাকে। সংশিষ্টদের দায়িত্বহীনতার কারণে পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি থেকে স্থানীয়রা কোন সুবিধা নিতে পারছে না বলে অভিযোগ তুলেছে। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চরমহল্লা ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৪ সালে। প্রতিষ্ঠার পর কয়েক বছর মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবা নিয়মিতভাবে চলে আসছিল পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি। বর্তমানে ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি অবহেলা ও অযত্নে নোংরা পরিবেশে কার্যক্রম দায়সারাভাবে চলে আসছে। প্রায় সময়ই কল্যাণ কেন্দ্রটির তালাবদ্ধ পড়ে থাকে। মাসে দুয়েকবার খোলা হয় কিনা তা নিয়ে সন্দিহান রয়েছেন এখানের ভুক্তভোগী মানুষ।
এ পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে উপসহকারী কমিউনিটি অফিসার পদে সাজির উদ্দিন, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা (ভিজিটর) আয়েশা হারুন আশা ও আয়া পদে স্বপ্না রানী কর্মরত রয়েছেন বলে জানা গেছে। তাদের বিরুদ্ধে অনিয়মিত উপস্থিতি ও দায়সারা কর্তব্য পালন করার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। বর্তমানে কল্যাণ কেন্দ্রটির সার্বিক পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। সন্ধ্যা নেমে আসলেই কেন্দ্রের আশেপাশে স্থানীয় বখাটেরা বিভিন্ন অপরাধ ও অসামাজিক কর্মকাণ্ড লিপ্ত হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় পরিবার কেন্দ্রের সামনে সেবা গ্রহণকারী ১০-১২ জন নারী-পুরুষ পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকার অপেক্ষা করছেন। তাদের মধ্যে ইউনিয়নের ছিক্কা গ্রামের বাসিন্দা বুরহান উদ্দিন, নানকার গ্রামের আবদুল মোমিন, শাখাইতি গ্রামের আলী হুসেনসহ রোকজন জানান, তারা দূর-দূরান্ত থেকে এসেছেন চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ গ্রহণ করতে। এখানে এসে সংশিষ্ট কাউকে না পেয়ে তাদের নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য হুসিয়ার আলী জানান, এলাকার লোকজন এ প্রতিষ্ঠান থেকে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না। ইউপি সচিব মাসুক মিয়া জানান, প্রায়ই এলাকার লোকজন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের কর্মরতদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করে থাকেন। এ ব্যাপারে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা (ভিজিটর) আয়েশা হারুন আশা মুঠোফোনে জানান, তিনি সপ্তাহে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার এখানে দায়িত্ব পালন করেন। সোমবার অফিসের কাজে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে যেতে হয় বলে ওইদিন তিনি পরিবার কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে পারেন না। কল্যাণ কেন্দ্রে কর্মরত উপসহকারী কমিউনিটি অফিসার সাজির উদ্দিন জানান, তিনি দুটি ইউনিয়নে দায়িত্ব পালন করছেন। সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার এ কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করেন। এ ব্যাপারে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চৌধুরী রাজিব মোস্তফা জানান, চরমহল্লা ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণটি নিয়মিত পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ শিঘ্রই নেয়া হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা অভিজিৎ শর্ম্মার সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।