ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের গোকর্ণঘাট বাজার থেকে এবার প্রশাসনের অস্তিত্ব গুড়িয়ে দিলো অবৈধ দখলদাররা। তাদের নির্মিত টিনের দোকান কোঠা নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়েছে রাতের আঁধারে। ঘটনার ৫ দিন পেরুলেও রহস্যজনক কারণে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেননি তারা। তবে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোহেল রানা পরদিন সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। অন্যদিকে অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা রয়েছে বহাল। প্রশাসনসূত্রে জানা যায়-২০১৭ সালে গোকর্ণঘাট বাজারটি পেরিফেরি করা হয়। ওই বছরের ১৫ই এপ্রিল জেলা প্রশাসক এই পেরিফেরি অনুমোদন করেন। এতে বাজারের দক্ষিণ দিকে নতুন সংযুক্ত হওয়া ১২ শতক জায়গায় ৩টি সারিতে মোট ৪৪টি দোকানঘর করে বন্দোবস্ত দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
চলতি বছরের ১৫ই মার্চ লিজ গ্রহীতাদের নামে বন্দোবস্ত প্রস্তাব অনুমোদন করেন জেলা প্রশাসক। তবে আরো আগে থেকেই বাজারে নতুন সংযুক্ত অংশ দখলে মরিয়া হয়ে উঠে ওই এলাকার জনপ্রতিনিধি, সরকারদলীয় নেতা ও সর্দার-মাতুব্বরদের একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। জেলেদের সুবিধা দেয়ার কথা বলে একপর্যায়ে পৌর কর্তৃপক্ষকে এতে যুক্ত করা হয়। প্রশাসনের পেরিফেরি নকশা লঙ্ঘন করে পৌরসভার অর্থে সেখানে প্রায় ২২-২৩ লাখ টাকা খরচ করে পাকাস্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু করেন তারা। অবশ্য ভিট ও কলাম পর্যন্ত কাজ হওয়ার পর প্রশাসনের বাধায় তা বন্ধ থাকে। জায়গার বেশির ভাগ অংশ পাকাস্থাপনা এবং একটি অংশে রাস্তা বানিয়ে দখল করা হয়। আরেকটি অংশ দখল করা হয় মার্কেট করে। এভাবে পেরিফেরি করা পুরো জায়গা দখল করে নেয়া হয়। পরে রাস্তা করে দখলে নেয়া অংশটিতে প্রশাসন তাদের পেরিফেরি নকশা অনুসারে একসারি দোকান ভিটি করে। ৯ই আগস্ট বন্দোবস্ত গ্রহীতা ১৯ জনের অনুকূলে এসব দোকান ভিটি বুঝিয়ে দেয়া হয়। এরপর সেখানে টিন দিয়ে দোকানকোঠা করা হয়। গত ৮ই অক্টোবর রাতে শতশত লোক নিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হয় প্রশাসনের সহায়তায় নির্মিত ওইসব দোকানকোঠা। প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এলাকার ওই প্রভাবশালীরা তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।