মর্মস্পর্শী ঘটনা। হাজারো মানুষের অশ্রুসিক্ত নয়নে পাবনার সাঁথিয়ার পল্লীতে ৩ মাসে ৪ যমজ শিশুসহ ৬ শিশুর পানিতে ডুবে সলিল সমাধি হয়েছে। তারা বিদায় নিয়েছে মায়াবী এই দুনিয়া থেকে। হৃদয়ের বোঁটা ছেঁড়া বেদনাপ্লুত হয়ে মা-বাবা এবং নিকটতম স্বজনরা দুঃখ-বেদনা-অন্তহীন দহনে তাদের স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছে। জানা যায়, চলতি বছরের ৬ই অক্টোবর সকালে সাঁথিয়া উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের সাগরদাঁড়িয়া গ্রামের শহিদুলের কন্যা প্রথম শ্রেণির ছাত্রী আয়েশা খাতুন (৭) তার সহপাঠী শিশু শ্রেণির ছাত্রী নাইমা খাতুন (৫)কে নিয়ে বাড়ি সংলগ্ন ধলার বিলে শাপলা ফুল তুলতে যায়। দুপুর পর্যন্ত তারা বাড়ি না ফেরায় স্বজনরা খোঁজাখুঁজি করতে থাকে। বিলের ধারে আয়েশার ব্যবহৃত ওড়না পরে থাকতে দেখে এলাকাবাসী বিলে নেমে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করে। শিশু নায়মা সাগরদাঁড়িয়া গ্রামে নানার বাড়ি বেড়াতে এসেছিলো।
সে পার্শ্ববর্তী ভদ্রকুলা গ্রামের নাজমুলের মেয়ে। ২৮শে আগস্ট দুপুরে উপজেলার কাশিনাথপুর পশ্চিমপাড়া ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন জিলাল শেখের স্ত্রী কলি খাতুন তার ৪ মাসের যমজ শিশু জিহাদ ও রিফাতকে নিয়ে তার ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুম থেকে উঠে দেখেন তার পাশে জিহাদ ও রিফাত নাই। ঘরের চকির নিচে গামলার মধ্যে পড়ে আছে। তার চিৎকারে বাড়ির সদস্য ও প্রতিবেশীরা গামলা থেকে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু দুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। কলি খাতুনের গায়ে জিনের আছর আছে বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়। পাবনা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেড়া সার্কেল আসিস বিন হাসান ও থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল মজিদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে লাশ ২টি পাবনা মর্গে প্রেরণ করেন। ১২ই জুলাই দুপুরের দিকে উপজেলার নন্দনপুর ইউনিয়নের বোয়াইলমারি গ্রামের দিনমজুর আলাউদ্দিনের আড়াই বছর বয়সের আহাদ ও সামাদ নামে ২ যমজ শিশু বাড়ির পাশে পুকুরে ডুবে মারা যায়। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আহাদ ও সামাদ বাড়িতে খেলতে খেলতে সবার অজান্তে তারা নিখোঁজ হয়। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে আলাউদ্দিনের ঘরের পেছনের পুকুরে ২ ভাইয়ের ভাসমান লাশ দেখতে পায় এলাকাবাসী।
তাদের পানি থেকে উপরে উঠালে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে। মা-বাবা, স্বজনসহ হাজারো মানুষের অশ্রুসিক্ত নয়নে কান্নায় পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। পরিবারের অসাবধানতার কারণে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ শিশুরা অসময়ে সুন্দর পৃথিবী থেকে বিদায় নিচ্ছে বলে সমাজ সচেতনরা জানান।