× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বিজয়নগরে সরকারি চাল আত্মসাতের মচ্ছব, তদন্ত কমিটি

বাংলারজমিন

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া/বিজয়নগর প্রতিনিধি
১৫ অক্টোবর ২০১৮, সোমবার

নানা কর্মসূচির জন্য বরাদ্দ দেয়া সরকারি চাল আত্মসাতের মচ্ছব চলছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে। অভিযোগ, বিভিন্ন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি এবং সরকার নিয়োগকৃত ডিলাররা এসব চাল সুবিধাভোগীদের না দিয়ে সরাসরি বিক্রি করে দিচ্ছেন। গত ৩ সপ্তাহের মধ্যে কয়েক শ’ বস্তা সরকারি চাল উদ্ধারও হয়। কিন্তু এসব ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। হয়েছে তদন্ত কমিটি। বিজয়নগরের মোল্লারটেক থেকে গত ১৯শে সেপ্টেম্বর ভিজিডি কর্মসূচির ২৩ বস্তা চাল উদ্ধার করে পুলিশ। একটি অটোতে ভর্তি করে এই চাল নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তাৎক্ষণিক পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে এই চাল ইছাপুরা ইউনিয়ন পরিষদের।
ইউনিয়ন পরিষদের উল্টো দিকেই আড়িয়ল বাজারের সাধনের মুদি দোকানে এসব চাল মজুদ ছিল। সেখান থেকে বিভিন্ন গাড়িতে করে সরকারি বস্তা ভর্তি এই চাল চম্পকনগরের চাল ব্যবসায়ী কবিরের দোকানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। চালগুলো ইছাপুরা ইউনিয়নের ৯৫জন ভিজিডি সুবিধেভোগীর ছিল বলেও জানা যায়। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী আফরোজ ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেন। কমিটির প্রধান করা হয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মশকর আলীকে। তদন্ত শেষে এই কমিটি যে প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে চেয়ারম্যান বা ইউপি সদস্য চাল বিক্রির সঙ্গে জড়িত নয় বলে উল্লেখ করা হয়। তবে পরিষদের ঠিক উল্টোপাশের দোকানে চাল পাওয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যকে সতর্ক করে দেয়ার সুপারিশ করে এই কমিটি। চাল সুবিধাভোগীরা বিক্রি করেছে উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদনে ২৮ জনের কার্ড বাতিলেরও সুপারিশ করা হয়। আর দোকানদার সাধন পালকে জরিমানা করার কথা বলা হয় প্রতিবেদনে। এ ঘটনার মাস না পেরুতেই গত ১৩ই অক্টোবর ২৪৮ বস্তা সরকারি চাল ভর্তি ট্রাক আটক করে বিজয়নগর থানা পুলিশ। ডিলারের মাধ্যমে দরিদ্রদের মধ্যে ১০ টাকা কেজিতে বিক্রির জন্য দেয়া এসব চাল ট্রাক বোঝাই করে সিলেটের শ্রীমঙ্গল পাঠিয়ে দেয়ার সময় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) দেয়া তথ্যানুসারে পুলিশ ট্রাকটি আটক করে। এ সময় ট্রাকের চালক আবদুর রহিম (৩৮) ও সহকারী জামাল মিয়া (৫০)কে আটক করা হয়। পুলিশ জানায়-আটকরা এই চালগুলো চম্পকনগরের চাল ব্যবসায়ী দুলাল মিয়ার বলে তাদেরকে জানায়। আগে ধরা পরা চাল সরকারি বস্তাভর্তি পাওয়া গেলেও এবার সাধারণ বস্তায় ভরে এই চাল পাচার করা হচ্ছিল। দুলালও সাংবাদিকদের কাছে বাজার থেকে এসব চাল কেনার কথা স্বীকার করে। এ ঘটনায়ও এলাকার খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খাদিজা বেগমকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। গতকাল খাদিজা বেগম জানান-চাল সরকারি কিনা তা যাচাই করতে যাচ্ছেন তিনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী আফরোজ বলেন, চাল মোটা এবং সুবিধেভোগীরা তাদের সঞ্চয়ের টাকা জোগাড় করতে সেগুলো বাজারে বিক্রি করে দেন। এদিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে- বিজয়নগর উপজেলায় বিভিন্ন সুবিধা ভোগীদের মধ্যে বিতরণের জন্য বরাদ্দ করা সরকারি চাল চম্পকনগরের চাল ব্যবসায়ী দুলাল, জাকির, সাদির, কবির এবং আড়িয়লের সাধন কেনাবেচা করেন। তাদের মধ্যে দুলাল হচ্ছে সরকারি চালের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য, উপজেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের লোকজন সবারই যাওয়া-আসা আছে তার দোকানে। স্থানীয় খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়- এখন খাদ্যবান্ধব এবং পূজার জন্য বরাদ্দ করা চাল বিতরণ করছেন তারা। এ ছাড়া বছরজুড়ে ভিজিডি, ভিজিএফ, টিআর এবং কাবিখার চাল দেয়া হয়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর