× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

২১শে আগস্টের বোমা হামলায় আওয়ামী লীগ দায়ী: রিজভী

দেশ বিদেশ

স্টাফ রিপোর্টার
১৫ অক্টোবর ২০১৮, সোমবার

২১শে আগস্ট বোমা হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগই দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গতকাল নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন। রিজভী বলেন, সবকিছু বিচার বিশ্লেষণে এটা মনে করার যথেষ্ট কারণ সৃষ্টি হয় যে, ২১শে আগস্ট বোমা হামলায় আওয়ামী লীগ বা তাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরাই দায়ী। যেহেতু তখন সরকার পরিচালনা করেছে বিএনপি সেহেতু নিজের সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হবে, এমন আত্মবিধ্বংসী কাজ বিএনপি কেন করতে যাবে? আওয়ামী লীগের সভার ওপর ভয়াবহ বোমা হামলা হলে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের প্রতি সাধারণ মানুষের ব্যাপক সহানুভূতির সৃষ্টি হবে এবং বিএনপি’র বিরুদ্ধে মানুষের আস্থা কমবে। এতে আওয়ামী লীগেরই লাভ। এই উদ্দেশ্য নিয়েই আওয়ামী লীগের সভার ওপর বোমা হামলা করা হয়েছে, শেখ হাসিনার মঞ্চকে পাশ কাটিয়ে। তিনি বলেন, এই বোমা হামলার আরেকটি উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারকে জঙ্গি সরকার বা তার পৃষ্ঠপোষক হিসেবে প্রমাণ করা, সেজন্য পরবর্তীতে শেখ হাসিনা ও তার সহকর্মীরা হীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সম্মিলিত কণ্ঠস্বরে দেশে-বিদেশে বিএনপি ও জোট সরকারের বিরুদ্ধে অপবাদের কোরাস গেয়েছেন। অথচ জঙ্গি উৎপাদন করেছে আওয়ামী লীগ, আর তাদের দমন করেছে বিএনপি।
রিজভী বলেন, দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার এমন হঠকারী কাজ করে নিজেদের ‘পাকা ধানে মই’ দেয়ার মতো নির্বোধ কাজ করবে, এটা পাগলেও বিশ্বাস করবে না। সুতরাং এক ঢিলে কয়েকটা পাখি মারার কাজ নেপথ্যে ও প্রকাশ্যে সম্পন্ন করেছে আওয়ামী লীগ। বিএনপি কখনোই আওয়ামী লীগের মতো কূটকৌশল ও নিষ্ঠুরতা শিখতে পারেনি। তিনি বলেন, একইভাবে ২০০৯ সালে বিডিআর সদর দপ্তরের পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড আওয়ামী সরকারের আমলেই ঘটেছে। এর জন্য কেন আওয়ামী সরকার দায়ী নয়? দরবার হলের এধরনের অনুষ্ঠানে সবসময় প্রধান অতিথি থাকেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কেন সেদিন যাননি? আওয়ামী মন্ত্রী ও নেতারা যথাক্রমে সাহারা খাতুন, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মীর্জা আজম প্রকাশ্যে সদর দপ্তরে প্রবেশ করে ঘাতক বিডিআর সদস্যদের সঙ্গে দেন-দরবার করেছেন। সদর দপ্তরের বাইরে হত্যাকারী ঘাতকদের নেতা ডিএডি তৌহিদসহ তার সঙ্গীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নিজের সরকারি বাসভবনে বৈঠক করেন। ফাইভ স্টার হোটেল থেকে সেদিন তাদের জন্য খাবারও আনা হয়েছিল। তৎকালীন সেনাপ্রধান মইন উদ্দিন দ্রুত বিডিআর সদর দপ্তরে সেনাবাহিনী পাঠানোর নির্দেশ চেয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমান অবৈধ সরকার সেই নির্দেশ দেয়নি। কেন এই বিলম্ব করা হলো? আর এই বিলম্ব না হলে প্রাণ দিতে হতো না অর্ধ শতাধিক চৌকস সেনা কর্মকর্তাদের। এর জন্য কি আওয়ামী সরকার দায়ী নয়? একজন ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তার নেতৃত্বে যে তদন্ত হয়েছিল সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হলেও কেন তা প্রকাশ করা হয়নি? সে আলোকে কোনো ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়নি কেন? এগুলোর জবাব তো একদিন বর্তমান অবৈধ শাসকগোষ্ঠীকে দিতে হবে। রিজভী বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনে গোয়েবলসীয় কায়দায় ক্ষমতাসীন দলের নেতারা সারাদিন অপপ্রচারে ব্যস্ত থাকলেও সত্যকে কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে পারবে না। অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর মনে নিত্য ত্রাস আর আশঙ্কার মেঘের আনাগোনা। তাই নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অনবরত মিথ্যা ভাষণ দিয়ে যাচ্ছেন। তার বক্তব্যের বৈশিষ্ট্য ক্রোধপরায়ণতা ও কলহপ্রিয়তা। আওয়ামী লীগের গেম প্ল্যান খুব স্পষ্ট। আইন, আদালত, বিচার তাদের হাতের মুঠোয় থাকায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় একের পর এক সাজা দিয়ে ফাঁকা ময়দানে ইলেকশনের নামে সিলেকশন করে ক্ষমতা ধরে রাখা। সে জন্যই ছিনতাইবাজ সরকার গণতন্ত্র ছিনতাই করে ফ্যাসিবাদের বিশুদ্ধ শাসন কায়েম করেছে। এরা গণতন্ত্রের শক্তি শুষে নিয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর ওপর নজরদারির শক্তি বৃদ্ধি করেছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হামলা-মামলার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলাম নয়নকে ১১ই অক্টোবর হাইকোর্ট এলাকা থেকে সাদা পোশাকধারী পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও এখনো পর্যন্ত নয়ন কোথায় আছে তা স্বীকার করছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শনিবার ঢাকা জেলা ছাত্রদলের মিছিল চলাকালে ধামরাই থানার পুলিশ অতর্কিত হামলা চালিয়ে জহির, খোকন, শাকিব, নাজিরসহ ৭ জনের অধিক ছাত্রদল নেতাকর্মীকে আটক করেছে। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল কোম্পানিকে শনিবার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। আমি দলের পক্ষ থেকে তাদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি। ব্রিফিংয়ে তিনি সারা দেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে গায়েবি মামলার তথ্য তুলে ধরেন। সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সাংগঠনিক সহ-সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ ও দপ্তর সহ-সম্পাদক বেলাল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর