ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করছি যেকোনো সময় আলোচনাটা হবে এবং আলোচনা করলে আবারও সম্পাদক পরিষদ ও সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হবো। আলোচনাটা চালু আছে, বন্ধ হয়ে যায়নি। তিনমন্ত্রী কথা রাখেননি এই মন্তব্য আমাদের কাছে হৃদয়বিদারক, দুঃখজনক।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’ জোট নয়, এটা ঘোঁট। এই ঘোঁট পাকানোর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করতে চাচ্ছে। গতকাল সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ঐক্যফ্রন্টের ঘোষণার বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবি ও ১১ লক্ষ্যের মধ্যে কিছু অমিশন আছে, কিছু কমিশন আছে। কিছু জিনিস উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কামাল হোসেন ও বিএনপি’র ওনারা বাদ দিয়েছেন, কিছু জিনিস উদ্দেশ্যমূলকভাবে যোগ করেছেন।
তিনি বলেন, কী কী বিষয়ে এই জোট নীরব সেই বিষয়ে আমি বলবো- রহস্যজনকভাবে তারা বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে দৃঢ় ঐক্যের বিষয়ে নীরব। বিএনপি রাজাকারদের সম্পর্কে নীরব।
বিএনপি সব জঙ্গি, সন্ত্রাস, হত্যা-খুনের পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে- সেই ব্যাপারে ঐক্যফ্রন্ট নীরব। বিএনপি সংবিধানের চার নীতিকে সরাসরি অস্বীকার করে, সেই ব্যাপারেও ঐক্যফ্রন্ট নীরবতা পালন করেছে। বিএনপি সরাসরি ৩০ লাখ শহীদের ব্যাপারটিকে বিতর্কিত করেছে, সেই ব্যাপারেও নীরবতা পালন করেছে ফ্রন্ট। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও স্বাধীনতার ঘোষণা সম্পর্কে বিএনপি’র ন্যক্কারজনক ভূমিকা সম্পর্কেও নীরবতা পালন করেছে ঐক্যফ্রন্ট। ঐক্যফ্রন্ট তারেক, কোকো, খালেদা জিয়ার মহাদুর্নীতির ঘটনা অমিশন বা বাদ দিয়েছেন।
জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, কমিশন হচ্ছে, বিএনপি-জামায়াত-রাজাকার-জঙ্গি ও সব অপরাধীকে হালাল করার একটা প্রস্তাব হচ্ছে ৭ দফার প্রস্তাব। আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাতে চাচ্ছি- জঙ্গি, সন্ত্রাসবাদ, যুদ্ধাপরাধী, স্বীকৃত দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্র উদ্ধারের ঘোষণাটা হচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের জাতির সঙ্গে একটা ঠাট্টা-মশকরা। আমি মনে করছি, এই ৭ দফা দাবি ও ১১ লক্ষ্যের আড়ালে জঙ্গি-সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজদের রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনার এটা একটা প্রকল্প।
একটি অস্বাভাবিক সরকার আনার প্রস্তাব। গণতন্ত্রকে জিম্মি করে সব ধরনের অপরাধীকে মুক্ত করার, পুনর্বাসন করার, রাজনীতি করার এটা ব্যবস্থা। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি বিএনপি হচ্ছে রাজাকার-জঙ্গি জামায়াতের আশ্রয়ণ প্রকল্প বা সংস্থা, আর ড. কামাল হোসেন এই জঙ্গি, সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ, স্বাধীনতাবিরোধী বিএনপি’র আশ্রয়ণ সংস্থা হিসেবে ভূমিকা রাখা শুরু করেছেন।
বিএনপি ১৯৭৫-এর পর ধারাবাহিকভাবে মুক্তিযুদ্ধের মীমাংসিত বিষয় অমীমাংসিত করেছে। বিএনপি হচ্ছে মীমাংসিত বিষয় অমীমাংসিত করার মাস্টার। একাত্তরের পর জেনারেল জিয়া যেভাবে মুক্তিযোদ্ধা-রাজাকার-খুনিদের সহাবস্থানের রাজনীতি-অপরাজনীতি অনুসরণ করেছেন এই কামাল হোসেন ও বিএনপি’র ঐক্যফ্রন্ট ঠিক সেই সহাবস্থানের প্রস্তাব জাতির সামনে হাজির করলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, যে ঐক্যের যাত্রা শুরু হলো এর সঙ্গে কোনো সুশাসন, গণতন্ত্র, দুর্নীতিমুক্ত সমাজের কোনো সম্পর্ক নেই। আমি পরিষ্কার বলছি- বাংলাদেশে কোনো রাজবন্দি নেই, যারা আছে সব অপরাধী। খালেদা জিয়া একজন চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তারেক একটা চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ খুনি অপরাধী।