× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মন্ত্রিসভায় আজ উঠছে /এবার আসছে সম্প্রচার আইন

প্রথম পাতা

দীন ইসলাম
১৫ অক্টোবর ২০১৮, সোমবার

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাসের পর এবার আসছে ‘সমপ্রচার আইন-২০১৮’। অনলাইন গণমাধ্যম, বেসরকারি টেলিভিশন ও রেডিও সম্পর্কিত আইনটি দ্রুত অনুমোদনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আজ সকাল ১০টায় সচিবালয়ে অনুষ্ঠেয় মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে সম্প্রচার আইন-২০১৮ অনুমোদনের জন্য উঠবে। এ ছাড়া বৈঠকে ‘গণমাধ্যম কর্মী (চাকরির শর্তাবলী) আইন-২০১৮ এর খসড়া অনুমোদনের জন্য উঠবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি খসড়া আইন দুটি অন্যান্য আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিনা তা এরই মধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। আইন ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এ কাজে সহায়তা করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত সম্প্রচার আইনের খসড়া দ্রুত চূড়ান্ত করতে সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত  সচিব সাহান আরা বানুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে খসড়াটি মন্ত্রিসভার নীতিগত অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়।
তবে ওই বৈঠকে এ ধরনের একটি গুরুত্বপূর্ণ আইন মন্ত্রিসভায় পাঠানোর আগে আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরামর্শ দেয় আইন ও বিচার বিভাগ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত সম্প্রচার আইনের সঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০০১ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ প্রায় ১৭টি আইনের সম্পৃক্ততা রয়েছে। ফলে অন্যান্য আইনের সঙ্গে এই আইন যেন সাংঘর্ষিক না হয় সে বিষয়টি আরো গভীরভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিত বলে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে নিজের মতামত তুলে ধরেন আইন ও বিচার বিভাগের প্রতিনিধি।

একই ধরনের বিভিন্ন আইনের মধ্যে শাস্তির পার্থক্য রয়েছে কিনা তাও পরীক্ষা করে দেখার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন তিনি। আইন ও বিচার বিভাগের নেতিবাচক মতামতের পর সিদ্ধান্ত হয়, সমপ্রচার আইনের খসড়ায় বর্ণিত বিষয়গুলো অন্যান্য আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিনা সে বিষয়টি যাচাই করে দ্রুত এটি চূড়ান্ত করতে হবে। এরপর দ্রুততার সঙ্গে আইনটি আবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে মন্ত্রিসভা বৈঠকের জন্য পাঠিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়।

এর আগে ২০১৪ সালে জাতীয় সমপ্রচার নীতিমালা প্রকাশ করে সরকার। তখন এনিয়ে বেশ হইচই হলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্প্রচার নীতিমালাটি বাস্তবায়নের জন্য একটি আইন প্রণয়ন করা হবে। ওই আইন প্রণয়নে তখন ৪০ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি বিভিন্ন বৈঠকে মিলিত হয়ে একটি খসড়া প্রণয়ন করে। ২০১৬ সালের ৩০শে নভেম্বর প্রস্তাবিত খসড়া আইনটি সবার মতামতের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া হয়। প্রস্তাবিত খসড়া অনুযায়ী এই আইনের ধারা লঙ্ঘন করলে ৩ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং অনধিক ৫ কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া সমপ্রচার আইনে অপরাধ চলতে থাকলে প্রতিদিনের জন্য অপরাধীকে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা জরিমানার সুযোগও রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনের অধীনে সাত সদস্যের একটি সমপ্রচার কমিশন গঠন করবে সরকার। এ কমিশন সমপ্রচারের লাইসেন্স ছাড়াও সমপ্রচার যন্ত্রপাতির লাইসেন্স দেবে। কমিশনের অনুমতি ছাড়া সমপ্রচার লাইসেন্স হস্তান্তর করলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে। অনুমতি নিয়েও ৪৯ শতাংশের বেশি শেয়ার হস্তান্তর করা যাবে না। নির্ধারিত ফি দিয়ে লাইসেন্স নবায়ন করা যাবে। এই কমিশনই আলোচ্য আইনে শাস্তির বিধান নিশ্চিত করবে।

খসড়ার ২৬ (৮) ধারায় বলা হয়েছে, কমিশন নিজ উদ্যোগে সমপ্রচারকারী বা নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানকে অনধিক ৫ কোটি টাকা জরিমানা করতে পারবে। যদি কমিশনের বিশ্বাস জন্মায় যে, সমপ্রচারকারী বা নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান পরিচালনা আচরণ নিয়ন্ত্রণ বিধি বা শৃঙ্খলাবিধি বা জাতীয় সমপ্রচার নীতিমালা বা জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা ভঙ্গ করেছে বা এমন কোনো বিষয়বস্তু সমপ্রচার করে যা দেশের নিরাপত্তা ও অখণ্ডতার প্রতি হুমকি হবে; সারা দেশে বা দেশের অংশবিশেষে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, নাশকতা ও সহিংসতা উৎসাহিত করবে বা জনশৃঙ্খলা বিনষ্টের আশঙ্কা সৃষ্টি করবে; অশ্লীল ও অশিষ্ট এবং মিথ্যা ও বিদ্বেষমূলক বলে বিবেচিত হবে। এদিকে চাকরির ধরন ভিন্ন হওয়ায় সংবাদপত্র, টেলিভিশন, রেডিও এবং অনলাইন গণমাধ্যমের কর্মীদের জন্য ‘গণমাধ্যম কর্মী (চাকরির শর্তাবলী)’ নামে নতুন আইন তৈরি করা হয়েছে।

এই আইনের অধীনে পাঁচ বছর পর পর গণমাধ্যমকর্মীদের বেতন-ভাতা ঠিক করতে ওয়েজবোর্ড গঠন করবে সরকার। প্রয়োজন মনে করলে অন্তর্বর্তী মজুরির হার নির্ধারণ করতে পারবে এই ওয়েজবোর্ড। প্রস্তাবিত আইনে কোনো গণমাধ্যমকর্মীকে সপ্তাহে (একদিন ছুটি বাদে অন্য ছয় দিন) ৪৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করালে অতিরিক্ত কর্মঘণ্টার জন্য আর্থিক সুবিধা দিতে হবে। নতুন আইন প্রণয়নের প্রেক্ষাপটে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমকর্মীদের চাকরির ধরন সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের চেয়ে ভিন্ন হওয়ায় এবং সময়ের পরিক্রমায় সংবাদপত্র জগতে বহুমাত্রিক পরিবর্তন হওয়ায় সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে একটি যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এ দুইটি আইন ছাড়াও মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘জাতীয় উদ্ভাবন ও মেধাসম্পদ নীতিমালা-২০১৮ এর খসড়া অনুমোদনের জন্য উঠবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর