কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচারকাজ চলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিভিশন আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি নিয়ে গতকাল এ আদেশ দেন।
এর ফলে বিএনপি’র চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে এ মামলার বিচারকাজ চলতে আইনি বাধা নেই বলে জানান দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানান তারা এ আদেশের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করবেন। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচারকাজ চলছে রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরের একটি ভবনে স্থাপিত অস্থায়ী এজলাসে।
গত ২০শে সেপ্টেম্বর ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান এক আদেশে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে এ মামলার বিচারকাজ চলবে বলে আদেশ দেন। এর আগে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বিচারিক আদালতকে জানানো হয়, খালেদা জিয়া যেহেতু আদালতে আসতে অনিচ্ছুক তাই ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪০ (এ) ধারা অনুযায়ী তার অনুপস্থিতিতেই বিচারকাজ চালানোর আবেদন করে প্রসিকিউশন। তবে, বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীদের যুক্তি ছিল, খালেদা জিয়া আদালতে আসতে ইচ্ছুক। কিন্তু অসুস্থতার কারণে আদালতে হাজির হতে পারছেন না।
আগে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। আর তিনি যেহেতু কারাবন্দি, সেহেতু তার অনুপস্থিতিতে এ মামলার বিচারকাজ চালানো যায় না। শুনানি নিয়ে বিচারিক আদালত প্রসিকিউশনের আবেদনটি গ্রহণ করে এ মামলায় খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত হাজিরা অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য মওকুফ করে তার অনুপস্থিতিতে মামলার কার্যক্রম চলবে বলে আদেশ দেন। একই সঙ্গে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে পারবেন বলে আদেশে জানান আদালত। পরে ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবীরা গত ২৭শে সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন।
গতকাল আদেশের পর খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, বিচারিক আদালতের ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেছিলেন খালেদা জিয়া। আদালত আদেশে আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে, খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতেই মামলার বিচারকাজ চলবে। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, আদালত আমাদের আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন। এ ধরনের আদেশ আমরা আশা করিনি।
আমরা ভেবেছিলাম বিষয়টি আদালত সহানুভূতির সঙ্গে দেখবে। কিন্তু তারপরও আদালত আমাদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। এটা খুবই দুঃখজনক। তিনি বলেন, অসুস্থ অবস্থায় বিচারকাজের নজির নেই। আমাদের আশা ছিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত স্বাধীনভাবে বিচারকাজ পরিচালনা করবেন। বিশেষ করে বেগম জিয়ার মামলাটি নিয়ে তারা গভীরভাবে চিন্তা করবেন। কিন্তু আমরা সেটাও পেলাম না। জয়নুল আবেদীন বলেন, যেহেতু হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার বিধান রয়েছে, আমরা সেটি করব এবং আশা করি সেখানে ন্যায়বিচার পাবো।