× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

জাফরুল্লাহর বিরুদ্ধে জিডি তদন্তে ডিবি

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
১৬ অক্টোবর ২০১৮, মঙ্গলবার

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে জিডি করেছেন সেনা কর্মকর্তা মেজর এম রকিবুল আলম। বেসরকারি টেলিভিশন ‘সময়’-এর একটি টকশো’তে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করায় এ জিডি করা হয়েছে। মেজর এম রকিবুল আলম গত শুক্রবার ক্যান্টনমেন্ট থানায় এই জিডি করেন। যার নম্বর-৪৯৮। জিডির তদন্ত করছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি দক্ষিণ)। ক্যান্টনমেন্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন হাওলাদার মানবজমিনকে জিডির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। জিডিতে গত ৯ই অক্টোবর রাতে সময় টিভির সম্পাদকীয় অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান সম্পর্কে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বক্তব্যকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত, বিদ্বেষপ্রসূত ও ষড়যন্ত্রমূলক আখ্যায়িত করা হয়েছে। পাশাপাশি কেন, কী উদ্দেশ্যে এবং কাদের প্ররোচনায় তিনি সেনাপ্রধান সম্পর্কে এসব কথা বলেছেন তা তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।


জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ সম্পর্কে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বক্তব্যটি ছিল একটি দায়িত্বজ্ঞানহীন, অসত্য বক্তব্য। কারণ, বর্তমান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ চাকরি জীবনে কখনোই চট্টগ্রামে জিওসি বা কমান্ড্যান্ট হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন না। তিনি ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১১ সালের জুন পর্যন্ত কুমিল্লায় ৩৩ আর্টিলারি ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার, ২০১১ সালের জুন থেকে ২০১২ সালের মে পর্যন্ত ঢাকার মিরপুরে ৬ স্বতন্ত্র এডিএ ব্রিগেডের ব্রিগেড কমান্ডার এবং ২০১২ সালের মে থেকে ২০১২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কুমিল্লায় ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময়ে চট্টগ্রাম বা কুমিল্লা সেনানিবাসে কোনো সমরাস্ত্র বা গোলাবারুদ চুরি বা হারানোর কোনো ঘটনা ঘটেনি। জিডিতে বলা হয়, চাকরিরত সেনাবাহিনী প্রধান সম্পর্কে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মতো একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির এরূপ বানোয়াট, সৃজিত এ অসত্য বক্তব্য সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যা সেনাবাহিনী প্রধানসহ সেনাবাহিনীর মতো রাষ্ট্রীয় একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে জনসম্মুখে হেয় করার হীন অপচেষ্টা।

ডা. জাফরুল্লাহর উপরোক্ত উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও অসত্য বক্তব্য লাইভ টকশোতে উপস্থাপন কেবল সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে জেনারেল আজিজ আহমেদের সামরিক সুনাম ও সামাজিক অবস্থানকে ক্ষুণ্ন করেনি, বরং তা সেনাবাহিনী প্রধানের সম্মানজনক পদকে চরমভাবে হেয় প্রতিপন্ন করেছে। এধরনের বক্তব্য প্রকারান্তরে কর্মরত সেনাবাহিনীর সদস্যদের বিভ্রান্ত করেছে এবং তাদের মনোবলের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

এছাড়া, এরূপ অপপ্রচার সেনাবাহিনীর মতো সুশৃঙ্খল বাহিনীর সংহতি ও একতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মাধ্যমে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতি বিদ্বেষ ও ঘৃণা সৃষ্টি করে। সরকারকে অস্থিতিশীল করার নিমিত্তে সেনাবাহিনীর সদস্যদের বিভ্রান্ত করেছে এবং তাদের মনোবলের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এছাড়া, এরূপ অপপ্রচার সেনাবাহিনীর মতো সুশৃঙ্খল বাহিনীর সংহতি ও একতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার উদ্দেশে করা হয়েছে। ডা. জাফরুল্লাহ তার বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর ঐক্যকে বিনষ্ট করাসহ সাধারণ জনগণের মধ্যেও বিভ্রান্তিকর তথ্য ও উদ্দেশ্যমূলক গুজব ছড়িয়ে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ও সাধারণ জনগণের মধ্যে সেনাবাহিনী সম্পর্কে বিরূপ ও নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি করে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন বলে প্রতীয়মান।

বাদী জিডিতে বলেছেন, উক্ত অনুষ্ঠানটি সম্প্রচারকালে আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন সেনাবাহিনীর সেনা সদর অফিসার্স মেসের টিভি রুমে একা বসে উল্লিখিত অনুষ্ঠানটি দেখছিলাম। অনুষ্ঠান চলাকালে বক্তা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মুখে উপরের উল্লিখিত বক্তব্য শুনে আমি বেশ অবাক ও হতভম্ব হয়ে যাই এবং আমার মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। কারণ, যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক হিসেবে গণ্য, সেই বাহিনীর প্রধান সম্পর্কে এরূপ বক্তব্য আমার মতো সেনাবাহিনীর অন্য সদস্যদের মধ্যেও অনুরূপ হতাশা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করাই স্বাভাবিক।

জিডিতে বলা হয়, সেনাবাহিনী স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। সময় টিভিতে বিগত ৯ই অক্টোবর রাতে সম্পাদকীয় নামের টকশোতে ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায়ের পূর্ব রাতে হঠাৎ অপ্রাসঙ্গিকভাবে সেনাপ্রধান সম্পর্কে প্রদত্ত বক্তব্যটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, বিদ্বেষপ্রসূত ও ষড়যন্ত্রমূলক, যা সেনাবাহিনীর মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি, তথা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মতো একজন উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তি কেন, কী উদ্দেশ্যে এবং কাদের প্ররোচনায় এ ধরনের উদ্দেশ্যমূলক, বানোয়াট ও অসত্য বক্তব্য টকশোতে বলেছেন তা তদন্তের দাবি রাখে। উল্লিখিত ঘটনার বিষয়ে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা ও নির্দেশক্রমে অভিযোগটি দায়ের করতে কিছুটা বিলম্ব হলো।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর