× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

২৫ মামলায় কাবু বিয়ানীবাজার ছাত্রলীগ

বাংলারজমিন

মিলাদ জয়নুল, বিয়ানীবাজার (সিলেট) থেকে
১৮ অক্টোবর ২০১৮, বৃহস্পতিবার

সারা দেশ থেকে বিয়ানীবাজারের চিত্র ভিন্ন। ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের এখানকার নেতাকর্মীরা এখন এলাকাছাড়া। ২৫টি মামলায় তাদের জীবন দুর্বিষহ। রাজনীতি তাদের কাছে এখন এক বিভীষিকা। এ উপজেলায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের কেউ আছেন কারাগারে, মামলার ঘানি টানতে না পেরে কেউ পাড়ি জমিয়েছেন বিদেশ বিভূঁইয়ে। মামলায় জর্জরিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দলটির নীতি-নির্ধারকদের ওপর বেজায় নাখোশ।
অভিভাবক সংগঠন আওয়ামী লীগ টানা দশ বছর ক্ষমতায়। এরপরও একের পর এক মামলায় তাদের অনেকই ফেরারি।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতি উৎসাহী মনোভাবের কারণে বিয়ানীবাজারে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের এরকম করুণ দশা। এখানে আসা পুলিশ কর্মকর্তারা ছাত্রলীগ নিধনের মিশন নিয়ে আসেন বলে আমাদের কাছে মনে হয়।’

বিস্ময়কর হলেও সত্য, এসব মামলার সবক’টি আবার টানা দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দায়ের করা হয়। যদিও এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মামলা আদালতে নিষ্পত্তি হয়েছে। নিজ ভাগ্যগুণ এবং ব্যক্তিগত চেষ্টা তদবিরে এসব মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে বলে অন্য কাউকে কৃতজ্ঞতা দিতে চায় না ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তাদের ভিতরে অনেক ক্ষোভ, যন্ত্রণা যা কেউ শুনতে চায় না। প্রায় মাসখানেক আগে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এসব নিয়ে ক্ষোভ ঝাড়েন। এদিন রিভারবেল্ট গ্রুপের কর্মী আজাদ জিসান মন্ত্রীর সামনে প্রকশ্যেই বলেন, ছাত্রলীগের এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে পোস্টার সাঁটানোর লোকও পাওয়া যাবে না।
বিয়ানীবাজারে ছাত্রলীগের মোট ৬টি গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থানে। একযুগ ধরে উপজেলায় কমিটি না থাকায় ছাত্রলীগের এসব বিবদমান গ্রুপের কেউ কারো কথা শুনে না।

বিয়ানীবাজার উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম পল্লব জানান, ‘২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে তার অনুসারী নেতাকর্মীদের ওপর মোট ৯টি মামলা করা হয়। এর মধ্যে একটি মামলার বাদী সিলেট জেলা বিএনপি নেতা বিভু সেন। সর্বশেষ গত ৬ই অক্টোবর পুলিশের অতি উৎসাহী ভূমিকায় বিরোধীয় পক্ষ তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা করে।’ এখানকার স্বাধীন  গ্রুপের নেতা ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য কেএইচ সুমন বলেন, ‘তাদের গ্রুপের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা করা হয়। একটি মামলায় আপস নিষ্পত্তি হলেও পুলিশ আদালতে প্রতিবেদন প্রেরণ করছে না।’ ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক মো. জামাল হোসেন বলেন, ‘তার অনুসারীদের মধ্যে ৩টি মামলা করা হয়। এর মধ্যে একটি হত্যা মামলায় তিনি নিজে দীর্ঘদিন কারাবরণ করেছেন। সিলেটের আদালত পাড়া থেকে র‌্যাবের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে।’ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও মূলধারা গ্রুপের নেতা কাওছার আহমদ জানান, ‘তাদের বিরুদ্ধে ১টি মামলা  করা হয়।’ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক গ্রন্থনা বিষয়ক সম্পাদক ও রিভার বেল্ট গ্রুপের নেতা আমান উদ্দিন জানান, ‘তাদের গ্রুপের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা রয়েছে। একটি মামলায় দীর্ঘদিন থেকে তারা আদালতে নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন।’ সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক আপ্যায়ন সম্পাদক ও একটি গ্রপের কর্ণধার পাভেল মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডসহ ৭টি মামলা হয়। এসব মামলার ঘানি টেনে অনেক ছাত্রলীগ নেতা নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।’

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা জানান, সিলেট কারাগারে তাদের ৪জন কর্মী এখনো জেল খাটছেন। তাদের অবস্থা বিরোধী দলের চেয়ে আরো খারাপ। তুচ্ছ ঘটনায় মামলা নিয়ে পুলিশ তাদের হেনস্থা করে। এ অবস্থার উত্তরণ না হলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর জন্য কঠিন পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে।
সিলেট জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিছবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেন, ‘বিয়ানীবাজারে ছাত্রলীগের কোন্দলের কারণে অনেক মামলা করা হয়। আমি আদালতের মাধ্যমে এগুলো নিষ্পত্তি করে দেয়ার চেষ্টা করি। তবে স্থানীয় দায়িত্বশীলদের আরো সতর্ক ও সচেতন হওয়া উচিত।’
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর