ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসন থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রার্থী কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশকে মারধর করা হয়নি বলে দাবি করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সদর সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন- তাকে ফুলের টোকাও দেয়নি কেউ। কেউ কিছু করার আগেই আমি তাকে সেখান থেকে নিয়ে গেছি। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের জড়িত থাকার অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি। একটি প্রাইভেট টিভি চ্যানেলের সংসদ নির্বাচনী আয়োজনের সরাসরি সম্প্রচারে অংশ নিতে এসে মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হামলার শিকার হন বিএনপির ওই মনোনয়ন প্রার্থী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান- চ্যানেল-২৪ এর সরাসরি সম্প্রচারিত নির্বাচনী আয়োজনে পলাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয়ে সারা দেশে মাদক পাচার হয় এবং এটি একটি সমস্যা বলে বক্তব্য রাখেন। সম্প্রচার শেষে বের হয়ে যাওয়ার পথে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখান। মামুন বলেন-৫০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে আমি তাকে (পলাশ) দেখিনি। সে কোত্থেকে এসেছে, হাইব্রিড নেতা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে শেষ করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে উপস্থিত থাকা দলের কর্মী-সমর্থকরা তাকে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করে। সদর সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী পলাশকে তাদের হাত থেকে উদ্ধার করে সার্কিট হাউজে নিয়ে যান। পরে পুলিশ প্রহরায় তাকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিশ্বরোডে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পলাশ ঢাকায় চলে যান। হামলাকারীরা পলাশের গাড়িটিও ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল এক নেতা জানান- যে অবস্থা হয়েছিল তাকে মেরেই ফেলা হতো যদি না মোকতাদির চৌধুরী তাকে রক্ষায় এগিয়ে আসতেন। জেলা সদরের সরকারি মহিলা কলেজ মাঠে আয়োজিত ‘ভোটের হাওয়া’ নামের সরাসরি সম্প্রচারে যোগ দেয়ার জন্য জেলার ৬টি আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রার্থীদের নিমন্ত্রণ করা হলেও পলাশ ছাড়া সেখানে আর কেউ যোগ দেননি। পুরো আয়োজন বলতে গেলে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তবে ২/১ জন ছাড়া জেলার অন্যান্য আসনের আওয়ামী লীগের অনেক মনোনয়ন প্রার্থীও এই আয়োজনে যোগ দেননি। কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ বলেন-জেলার সব আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রার্থীরা এবং দলের সিনিয়র নেতারা সেখানে যাবেন বলে আয়োজকরা আমাকে জানিয়েছিলেন। সেকারণে আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া যাই ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। তিনি জানান-জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতার উস্কানিতেই তার ওপর হামলা হয়েছে। তবে ওই সময় সদরের এমপি সাহেব শক্ত ভূমিকা না রাখলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারতো।