× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সক্ষমতা সূচকে পেছালো বাংলাদেশ

প্রথম পাতা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
১৮ অক্টোবর ২০১৮, বৃহস্পতিবার

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) ২০১৮ সালের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচকে পিছিয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বের ১৪০টি দেশের মধ্যে এবার বাংলাদেশের অবস্থান ১০৩। গত বছর (২০১৭) ছিল ১৩৫ দেশের মধ্যে ১০২তম অবস্থানে। বিশ্বব্যাপী একযোগে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা সূচক-২০১৮ প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেয়া হয়। বাংলাদেশে তাদের পক্ষে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। গতকাল রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে প্রতিবেদনটির বিস্তারিত তুলে ধরেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম  মোয়াজ্জেম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, সিনিয়র গবেষণা পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম খান।

প্রতিবেদনের শুরুতেই বলা হয়, একটি দেশের অবস্থান বিচারের জন্য প্রতিষ্ঠান, অবকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার, সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্য, দক্ষতা, পণ্য বাজার, শ্রম বাজার, আর্থিক ব্যবস্থা, বাজারের আকার, বাজারের গতিশীলতা, নতুন ধারণার আত্তীকরণ- এই ১২টি মানদণ্ড ব্যবহার করেছে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম। এসব মানদণ্ডের ভিত্তিতে ১০০ ভিত্তিক সূচকে সব মিলিয়ে এবার বাংলাদেশের স্কোর হয়েছে ৫২.১, যা গতবছরের স্কোরের চেয়ে ০.৭ বেশি। গতবছর এ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানে সাত ধাপ, তার আগের বছর এক ধাপ অগ্রগতি হয়েছিল।

এবার ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের এই সূচক তৈরির মেথডলজিতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। তুলনা করার সুবিধার জন্য এ প্রতিবেদনে গত বছরের সূচকের অবস্থানও নতুন মেথডলজিতে প্রকাশ করা হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বলছে, সূচকের মানদণ্ডগুলোর মধ্যে প্রতিষ্ঠান, অবকাঠামো, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার, সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্য, দক্ষতা, শ্রম বাজার, বাজারের আকার, উদ্ভাবনী ক্ষমতায় বাংলাদেশের উন্নতি হলেও পণ্য বাজার, আর্থিক ব্যবস্থা, বাজারের গতিশীলতায় অবনতি হয়েছে।

বাংলাদেশের ৮৩টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এই জরিপে অংশ নেয়। জরিপে দেখা গেছে বাংলাদেশ সক্ষমতা অর্জনের পথে মূল বাধা হচ্ছে চারটি। সেগুলো হলো- দুর্নীতি, অপেক্ষাকৃত দুর্বল অবকাঠামো, অদক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থা এবং অদক্ষ শ্রমশক্তি। তবে ইতিবাচক দিক হলো- বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী চীন, ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়ার মতো দেশগুলোর অবস্থান ক্রমাগত নিম্নমুখী। আর বাংলাদেশ ২০১০ সাল থেকে ক্রমেই উন্নতি করছে।
৮৩টি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীদের বক্তব্য তুলে ধরে সিপিডি জানিয়েছে, অবকাঠামো উন্নয়ন, আইসিটি ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তির ব্যবহার, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতের মতো ১২টি সূচকের ৯টিতেই খারাপ করেছে বাংলাদেশ। যার ফলে আগের ১০২তম স্থান থেকে পিছিয়ে ১০৩তম হয়েছে।

খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, গত বছরগুলোর মতো এবারও দুর্নীতির ক্ষেত্রটিকে তারা (ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম) সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মনে করছে। অবকাঠামো ক্ষেত্রে উন্নতি হয়েছে কিছুটা। কিন্তু অবস্থানের খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। পাশাপাশি প্রশাসনের অদক্ষতা এবং একই সঙ্গে লেবার ফোর্স অর্থাৎ শিক্ষিত শ্রমশক্তির অভাব, এই জিনিসগুলো কিন্তু আগের মতোই রয়ে গেছে। তিনি বলেন, সার্বিকভাবে এবার বাংলাদেশের পয়েন্ট কমেনি বরং ০.৭ পয়েন্ট বেড়েছে। কিন্তু এবার নতুন করে তথ্যপ্রযুক্তি খাত অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এ খাতে অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ কিছুটা পিছিয়ে থাকায় সার্বিকভাবে অবস্থানগত পরিবর্তন হয়েছে।

সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমি যদি হাঁটতে থাকি আর আমার পাশাপাশি কেউ যদি দৌড়াতে থাকে, তাহলে আমার রাস্তার দূরত্ব বাড়লেও আমি তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে যাবো। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই ঘটেছে।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আগামীর জন্য ৫টি ফ্যাক্টর এখানে উঠে এসেছে। অবকাঠামোগত প্রস্তুতি, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা, প্রশিক্ষিত জনবল, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা আর নীতিমালার উপযোগিতা। শ্রমনির্ভরতা দিয়ে আমরা আমাদের অর্থনীতিকে প্রতিযোগিতাসক্ষম করে তুলতে পারবো না। সুতরাং যদি এই ৫টিকে সমন্বিত রাখতে পারি তাহলেই আমরা অর্থনীতিকে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা অব্যাহত রাখতে পারবো। তিনটা স্টেজেই প্রতিযোগিতা সক্ষমতা আমাদের বাড়াতে হবে।

তালিকায় সুইজারল্যান্ডকে পেছনে ফেলে শীর্ষস্থান ফের দখলে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের স্কোর ৮৫.৬। সিঙ্গাপুর ও জার্মানি রয়েছে যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে। আর ভারতের অবস্থান ৫৮তম। শীর্ষ ১০-এ থাকা অন্য দেশগুলো হলো যথাক্রমে- সুইজারল্যান্ড, জাপান, নেদারল্যান্ডস, হংকং, যুক্তরাজ্য, সুইডেন ও ডেনমার্ক। এই সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবার চেয়ে এগিয়ে আছে ভারত। ৬২ স্কোর নিয়ে ভারত আছে সূচকের ৫৮ নম্বরে। গতবারের চেয়ে ৫ ধাপ উন্নতি হয়েছে দেশটির। শ্রীলঙ্কা ৫৬ স্কোর নিয়ে সূচকের ৮৫তম, ৫১ স্কোর নিয়ে পাকিস্তান সূচকের ১০৭ নম্বরে এবং নেপাল ৫০.৮ স্কোর নিয়ে ১০৯ নম্বর অবস্থানে রয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম ২০০১ সাল থেকে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে। সিপিডি বাংলাদেশে বৈশ্বিক এই ফোরামের সহযোগী হিসেবে কাজ করে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর