সৌদি আরবের সাংবাদিক ও কলামিস্ট জামাল খাশোগির হত্যা রহস্য ক্রমেই জটিল হচ্ছে। তুরস্ক অব্যাহতভাবে হত্যাকান্ডের জন্য সৌদি আরবকে দোষারোপ করলেও সৌদি কর্তৃপক্ষ তা আমলে নিচ্ছে না। এবার তুরস্ক দাবি করেছে, জামাল খাশোগির সন্দেহভাজন ঘাতকদের অন্তত চার জন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ঘনিষ্ঠ। দের একজন মেহের আব্দুল আজিজ মুত্রেব। তিনি লন্ডনের সৌদি দূতাবাসের কূটনীতিক ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে তাকে ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে সফর করতে দেখা গেছে। সম্ভবত তিনি মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) এর দেহরক্ষীর দায়িত্ব পালন করেন। সম্প্রতি এমবিএসের প্যারিস ও মাদ্রিদ সফরেও তাকে একই ছবিতে দেখা গেছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, খাশোগি হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে আরো তিন জনের সঙ্গে সৌদি আরবের নিরাপত্তাজনিত সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।
সন্দেহভাজন ঘাতকদের পঞ্চম ব্যক্তি একজন ফরেনসিক ডাক্তার। যিনি সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন পদস্থ কর্মকর্তা। তিনি এতই উচ্চপদস্থ যে, শুধু শীর্ষ কর্তৃপক্ষই তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তুরস্কের দাবি, এ ৫ ব্যক্তি ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে খাশোগি গায়েব হয়ে যাওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন। ২রা অক্টোবর কনস্যুলেটের ভেতরে কি ঘটেছিল, এদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তা বিস্তারিত জানা যাবে। সন্দেহভাজন ১৫ ঘাতকের মধ্যে ৯ জনের পরিচয় শনাক্ত করার দাবি করেছে তুরস্ক। নিউইয়র্ক টাইমসও তাদের পরিচয় যাচাই করে দেখেছে। তাদের সবারই সৌদি আরবের নিরাপত্তা বাহিনী, সামরিক বা সরকারি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। ক্রাউন প্রিন্সের নির্দেশনা ছাড়া ভুলক্রমে খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে এই মর্মে সৌদি আরব যে বিবৃতি প্রস্তুত করছে বলে কূটনৈতিক সূত্রে বলা হচ্ছে, তুরস্কের দাবি তার সম্পূর্ণ বিপরীত। তুরস্ক সন্দেহভাজন ঘাতকদের পরিচয় শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। সৌদি আরবের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে যাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
তুরস্ক বলছে, ২রা অক্টোবর ১৫ সৌদি এজেন্ট দুইটি ব্যক্তিগত বিমানে চড়ে ইস্তাম্বুলে প্রবেশ করেন। তারা কনস্যুলেটের মধ্যে খাশোগিকে হত্যা করে তার দেহ চাকু দিয়ে টুকরা টুকরা করে। কিছুক্ষণ পরেই তারা সৌদি ফিরে যায়। বিমানের বিস্তারিত তথ্য তুরস্কের হাতে রয়েছে। কনস্যুলেটের প্রবেশ করার মাত্র দুই ঘন্টার মধ্যে খাশোগির হত্যাকান্ড সম্পন্ন হয়।