× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

রাস্তা পারাপারে লাল পতাকা

বাংলারজমিন

চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
১৯ অক্টোবর ২০১৮, শুক্রবার

 ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী এলাকায় অর্ধশতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ২০ হাজার ছাত্রছাত্রী প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন লেখাপড়া করতে যাচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয়। ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পেরিয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া নিয়ে অভিভাবক মহল সদা উদ্বিগ্ন থাকলেও প্রশাসন এ ব্যাপারে নির্বিকার। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহসড়কের কুমিল্লায় গত ৫ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় কমপক্ষে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন দুই শতাধিকের বেশি ছাত্রছাত্রী। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী কুটুম্বপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, তাদের বিদ্যালয়ের সামনে গতি নিয়ন্ত্রক বাঁধ বা জেব্রা ক্রসিং না থাকায় মহাসড়কে চলাচলরত দ্রুতগামী গাড়িগুলোর ড্রাইভারা গতি নিয়ন্ত্রণে কোনো ভূমিকাই রাখছে না। বরং জেব্রা ক্রসিং না থাকায় দ্রুত ও বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর কারণে দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী দোতলা ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আব্দুল ছাত্তার বলেন, আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠারটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী হওয়ায় ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা মাদরাসায় আসতে কিংবা যেতে সমস্যা হয়। প্রতিদিন ছাত্রছাত্রীদের রাস্তা পারাপারে লাল পতাকা ব্যবহার করতে হয়। মহাসড়কে জেব্রা ক্রসিং দেয়া হলে সড়ক দুর্র্ঘটনা অনেকাংশেই রোধ করা সম্ভব বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
আকলিমা (১৬) গোমতা ইসহাকিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনার গোমতা নামক স্থানে গত ৩১শে মে স্কুলে শেষে বাড়ি ফেরার পথে আকলিমাকে দ্রুতগ্রামী একটি ট্রাক চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা তার সহপাঠী তামান্না ও মেহেদী হাসানও গুরুত্বর আহত হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে সৃষ্ট ছোট-বড় দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে পাওয়া গেছে অনেক কারণ। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সহকারী দিয়ে যানবাহন চালানো, দুটি যানবাহনের মধ্যবর্তী দূরত্ব বিপদসীমার মধ্যে, অপরিপক্ক চালক, চালকের বেপরোয়া গতি, অভিযুক্ত চালকের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান না থাকা, চলন্ত অবস্থায় চালকের মোবাইল ফোন ব্যবহার, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো, যত্রতত্র ওভারটেক, পথচারী পারাপারে অব্যবস্থাপনা, সড়ক দিয়ে গবাদিপশু পারাপার, যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা, লক্কড়ঝক্কর যানবাহন চলাচল, খানাখন্দ সড়ক, অনুমোদনহীন যানবাহন, নিষিদ্ধ যানবাহন অবাধে চলাচল, মহাসড়কে রিকশা-ঠেলাগাড়ি চলাচল, সড়ক ঘিরে স্থায়ী-অস্থায়ী বাজার গড়ে ওঠা। এ ব্যাপারে হাইওয়ে ইলিয়টগঞ্জ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনা রোধে ইতিমধ্যে হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্পিং করা হচ্ছে; যা বর্তমানে চলমান আছে। তাছাড়া আমরা উর্ধ্বতন মহলকে মহাসড়কের পাশে প্রতিটা স্কুলের সামনে ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করার জন্য লিখিতভাবে জানিয়েছি।
কুমিল্লা রিজিয়নের উদ্যোগে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পরিবহন সেক্টরের প্রায় ৭০ জন চালক ও হেলপাদেরকে আমরা এক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ দিয়েছে। আমরা এই ধরনের প্রশিক্ষণ চালকদের নিয়মিত দিতে পারলে আগামীদিনে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশেই কমে যাবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন। এ ব্যাপারে দেশের বিশিষ্টজনরা মনে করছেন সড়ক দুর্ঘটনা রোধে দেশের বিদ্যমান আইনগুলো মেনে চলার জন্য চালকদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করা ছাড়া কোনো গত্যন্তর নেই। বর্তমানে দেশের প্রতিটি সড়ক-মহাসড়ক যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। যানবাহন ব্যবহার করাই যেন বর্তমানে সুস্থ-সবল যাত্রীদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর