× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নি র্বা চ নী হা ল চা ল টাঙ্গাইল ১ / আওয়ামী লীগে স্বস্তি বিএনপিতে টানাপড়েন

শেষের পাতা

মো. নজরুল ইসলাম, মধুপুর (টাঙ্গাইল) থেকে
১৯ অক্টোবর ২০১৮, শুক্রবার

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে টাঙ্গাইল-১ আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থীর প্রচারণা চলছে। মধুপুর ও ধনবাড়ি উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনটি এক সময় আওয়ামী লীগ বিরোধী হিসেবে খ্যাত হলেও বর্তমানে তা আওয়ামী লীগের দূর্গ।

১৯৭৩ সালে দেশের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৩টি আসন পেয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলেও মধুপুরের এ আসনটি তাদের হাতছাড়া হয়ে যায়। তখন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহেন্দ্র লাল বর্মণকে প্রায় ৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন জাসদের মো. আবদুস সাত্তার।
 ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী আসাদুজ্জামকে প্রায় ২৯ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন বিএনপির প্রার্থী ধনবাড়ির নওয়াব সৈয়দ হাসান আলী চৌধুরী।
১৯৮৬ সালের তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করে। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ডা. নিজামুল ইসলাম এমপি নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সালের নির্বাচনেও বিএনপি না আসায় খন্দকার আনোয়ারুল হক (স্বতন্ত্র) এমপি নির্বাচিত হন।

১৯৯১ সালের পঞ্চম  জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির আশিকা আকবরকে পরাজিত করেন আওয়ামী লীগের আবুল হাসান চৌধুরী কায়সার।
১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারির ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদার এমপি নির্বাচিত হন। একই বছর ১২ই জুনের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আবুল হাসান চৌধুরী কায়সার প্রায় ১১ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিএনপির মহাসচিব ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদারকে পরাজিত করেন।
সে সময় আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে তিনি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।

২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে আসেন নতুন মুখ। ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদারের মৃত্যুতে বিএনপির মনোনয়ন পান ব্যবসায়ী ফকির মাহবুব আনাম স্বপন। তৎকালীন বিএনপি নেতা অধ্যাপক আব্দুল গফুর মন্টু মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হন। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান কৃষিবিদ ড. আব্দুর রাজ্জাক। ঐ নির্বাচনে ড. আব্দুর রাজ্জাক  ৯৮,৪১৩ ভোট পেয়ে প্রথমবার এমপি নির্বাচিত হন। বিএনপির ফকির মাহবুব আনাম স্বপন পান ৪০,৯৭২ ভোট অপরদিকে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী অধ্যাপক আব্দুল গফুর মন্ট পান ৫৩,৫৩৯ ভোট। ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথমেই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। পরে আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ও খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ড. আব্দুর রাজ্জাক প্রায় ৮০ হাজার ভোটের ব্যবধানে ফকির মাহবুব আনাম স্বপনকে পরাজিত করেন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ড. আব্দুর রাজ্জাক বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগে ড. আব্দুর রাজ্জাক ছাড়াও  আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা মনোনয়ন চাইতে পারেন।
আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা জানান, জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করব।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি  ফকির মাহবুব আনাম স্বপন এবারও মনোনয়ন চাইবেন। তিনি ছাড়াও আগামী নির্বাচনে মধুপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তিনবারের সাবেক পৌর মেয়র শহিদুল ইসলাম সরকার (শহিদ), সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী মনোনয়ন চাইতে পারেন।
ফকির মাহবুব আনাম স্বপন বলেন, দল পুনরায় আমাকে মনোনয়ন দিলে দু’টি উপজেলাকেই আধুনিক উপজেলায় রূপান্তিত করব।

উপজেলা বিএনপির সভাপিত মো. জাকির হোসেন সরকার বলেন, বিএনপির মতো বড়দলে যে কেউ মনোনয়ন চাইতে পারেন। স্বপন ফকির মধুপুর-ধনবাড়ির অনেক উন্নয়ন মূলক কাজ করেছেন। তৃণমূল থেকে শীর্ষ রাজনৈতিক পর্যন্ত স্বপন ফকিরকে চায়। এবারও তিনি মনোনয়ন পাবেন।

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম সরকার বলেন, টাঙ্গাইল-১ আসনে যারা এমপি হয়েছেন তাদের মধ্যে শুধুমাত্র জাসদের আ. ছাত্তার মধুপুরের স্থায়ী নাগরিক ছিলেন আর সবাই ধনবাড়ি উপজেলার। কেউবা আবার অন্য উপজেলার। তিনি জানান, দল আমাকে মনোনীত করলে আমি নির্বাচন করব ইনশাআল্লাহ।
অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী বলেন, যদি নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ হয় এবং দল আমাকে মনোনয়ন দেন, তবে আসনটি ফিরিয়ে আনতে পারব।

এছাড়া জাতীয় পার্টির মধুপুর উপজেলা সভাপতি এম এ হান্নান (ইস্পাহানি) এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মধুপুর উপজেলা শাখার সভাপতি মাও.মো.আশরাফ আলী দলের মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন।
এম এ হান্নান (ইস্পাহানি) বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নির্দেশে মধুপুরে তৃনমূলে পার্টিকে সুসংগঠিত করা হয়েছে। আমাকে মনোনয়ন দিলে বিজয়ী হব ইনশাআল্লাহ। এ আসনে মধুপুর উপজেলায় মোট ভোটার ২ লাখ ১৫ হাজার ৮৫৩ জন। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৭ হাজার ৬৬১ জন আর মহিলা ভোটার ১ লাখ ৮ হাজার ১৯২ জন। ধনবাড়ি উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৪০ হাজার ৭৬৫ জন। দুই উপজেলা মিলে এ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৬৬ হাজার ৬০৮ জন।

আগামীকাল: বরিশাল-২
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর