× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

তিনদিনে ডিজিটাল আইনে ১৬ মামলার আবেদন

প্রথম পাতা

রুদ্র মিজান
১৯ অক্টোবর ২০১৮, শুক্রবার

সদ্য পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার সংখ্যা বাড়ছে। এই আইনে মামলা দায়েরের জন্য প্রতিদিনই সাইবার ট্রাইব্যুনালে আবেদন করা হচ্ছে। গত তিনদিনে ১৬টি মামলার আবেদন করা হয়েছে। ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করেই এসব মামলার অভিযোগ। ট্রাইব্যুনাল ছাড়াও মামলা হচ্ছে বিভিন্ন থানাতে। এই আইনে প্রথম মামলা করেছে ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)। পল্টন থানায় করা হয় মামলাটি।
গত মঙ্গলবার শেরপুরের ঝিনাইগাতী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত মামলায় রওশন আরা রুমি নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপরই পুলিশ জানতে পারে অভিযোগ সত্য না।
কিন্তু ততক্ষণে গ্রেপ্তারের পর আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে তাকে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৯ ও ৩১ ধারায় ওই নারীর বিরুদ্ধে মামলা করেন উপজেলার আওয়ামী লীগের এক নেতা।

রুমির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও  সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছবি বিকৃত করে ফেসবুকে প্রচার করেছেন। এ বিষয়ে গতকাল ঝিনাইগাতী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস মানবজমিনকে বলেন, রওশন আর রুমি তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে এত সচেতন না। তিনি ফেসবুকে প্রায়ই অন্যের পোস্ট করা ছবি শেয়ার দেন। সেভাবেই ওবায়দুল কাদেরের একটি বিকৃত ছবি শেয়ার দিয়েছিলেন। রুমিকে গ্রেপ্তারের পর আমরা জানতে পারি, ওই ছবি পোস্ট করে মূলত বিকৃতকারীদের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান প্রকাশ করেছিলেন তিনি। ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেছিলেন, কাউকে সম্মান করতে না পারলেও অসম্মান করা উচিত না। ওসি বলেন, এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পর গত বুধবার আমরা এই মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছি। আজ (বৃহস্পতিবার) রুমির জামিন মঞ্জুর হয়েছে। এটা একটা ভুল বুঝাবুঝি বলে জানান ওসি।

গত তিন দিনে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার আবেদন করা হয়েছে ১৬টি। এর মধ্যে ছয়টি তদন্তে এবং দুটি সংশ্লিষ্ট থানাকে মামলা হিসেবে রেকর্ডের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। বাকি আটটি আবেদন খারিজ করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

এ বিষয়ে জজ কোর্টের আইনজীবী সোমাইয়া  আজিজ  জানান, নতুন আইনে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে। যে কারণে এই আইনে মামলা দায়েরে বাদীরা আগ্রহী। সদ্য পাস হওয়া এই আইনের বেশির ভাগ ধারাই জামিন অযোগ্য। তবে এর মধ্যে মানহানির ২৯ ধারাসহ ২০, ২৫ ও ৪৮ ধারার অপরাধে জামিনের বিধান আছে বলে জানান তিনি।
ডিএমপি’র সাইবার ক্রাইম ইউনিটের উপ-কমিশনার মো. আলীমুজ্জামান জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে তাদের কাছে একটি মামলা রয়েছে। মামলাটি গত ১০ই অক্টোবর করা হয়েছে। একটি দূতাবাসের ওয়েবসাইটে ঢুকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে মামলাটি করা হয়। এ ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাইবার ক্রাইম ইউনিটের বেশির ভাগ মামলাই ব্যক্তিতগত, প্রেম-ভালোবাসা, ব্ল্যাকমেইল, যৌন হয়রানি বিষয়কেন্দ্রিক বলে জানান তিনি। ডিসি আলীমুজ্জামান বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপত্তিকর ছবি প্রকাশ, প্রকাশের হুমকি দিয়ে ক্ষুদেবার্তা পাঠানো, এছাড়াও সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ছবি বিকৃত করা, ভুল তথ্য প্রচার করা মূলত এসব মামলার বিষয়। এছাড়াও অন্যান্য বিষয়েও মামলা রয়েছে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম মামলা করা হয়েছে পল্টন থানায়। মেডিকেলে ভর্তিসহ বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে আটক পাঁচজনের বিরুদ্ধে এই মামলা করে সিআইডি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন আইনে মামলার সংখ্যা বাড়বে বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাসলিমা ইয়াসমিন বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বাদী পক্ষ বিভিন্ন সুবিধা পাবেন। বিশ্বের যেকোনো দেশে বসে বাংলাদেশের কোনো নাগরিক এই আইন লঙ্ঘন করেন, তাহলেই তার বিরুদ্ধে এই আইনে ব্যবস্থা নেয়া যাবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিচার হবে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে। অভিযোগ গঠনের ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে মামলার নিষ্পত্তি করতে হবে। তবে এর মধ্যে করা সম্ভব না হলে সর্বোচ্চ ৯০ কার্যদিবস পর্যন্ত সময় বাড়ানো যাবে।

ইতিমধ্যে এই আইন সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মত প্রকাশের অন্তরায় বলে অভিহিত করা হয়েছে এই আইনকে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নয়টি ধারা সংশোধনের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে সম্পাদক পরিষদ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর