তিনি অভিনয় খুব পছন্দ করতেন। কয়েক বছর আগে আমার মডেল হওয়া গ্রামীণফোনের বিজ্ঞাপনের কাজের সময় তার সঙ্গে প্রথম দেখা হয়। সেই বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলটি আমি গেয়েছিলাম তার সংগীত পরিচালনায়। সেই সময় দেখেছি কাজের বাইরেও তিনি অনেক ভালো মনের একজন মানুষ- এভাবেই সদ্য প্রয়াত ব্যান্ড তারকা আইয়ুব বাচ্চুকে নিয়ে বললেন জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। তিনি আরো বলেন, একবার আমেরিকায় একটি শোতে গিয়েছি। সেখানে আমি এবং বাচ্চু ভাই একসঙ্গে থেকেছি দু’তিন দিন। এছাড়া বেশ কয়েকবার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। তিনি কয়েকদিন আগেই আমাদের ‘দেবী’র জন্য শুভ কামনা জানিয়েছেন।
আমি নিজেও বাচ্চু ভাইয়ের ভক্ত। তার চলে যাওয়াতে ব্যান্ড সংগীতের সত্যি অনেক বড় ক্ষতি হলো বলে আমি মনে করি। এদিকে আজ মুক্তি পাচ্ছে চঞ্চল অভিনীত ‘দেবী’ চলচ্চিত্রটি। অভিনয়ের পাশাপাশি এটি প্রযোজনা করেছেন জয়া আহসান। এটি পরিচালনা করেছেন অনম বিশ্বাস। নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের মিসির আলি চরিত্রকে নিয়ে লেখা প্রথম উপন্যাস ‘দেবী’ অবলম্বনে এ ছবিটি নির্মাণ করা হয়েছে। এটিতে চঞ্চল থাকছেন মিসির আলির চরিত্রে। ছবিটি নিয়ে এই অভিনেতা বলেন, অবশেষে আজ ‘দেবী’ মুক্তি পেয়েছে। সবার অপেক্ষার পালা শেষ হলো। শুরু থেকে এই ছবিটি নিয়ে সবার অনেক আগ্রহ দেখেছি। আমি বিশ্বাস করি, ‘দেবী’ সকলের প্রত্যাশা পূরণ করবে। ছবিটি দেখে কেউ নিরাশ হবেন না। বইয়ের পাতা থেকে পর্দায় মিসির আলিকে নিয়ে আসার এ যাত্রা কতটুকু চ্যালেঞ্জিং ছিল চঞ্চলের জন্য? কেমন ছিল মিসির আলি হয়ে ওঠার অভিজ্ঞতা? এসব প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটি আমার জন্য অনেক কঠিন ছিল। মিসির আলি চরিত্রে অভিনয় করা বড় একটি চ্যালেঞ্জ ছিল দুটি কারণে। একটি হলো ‘আয়নাবাজি’র পর দর্শকদের বাড়তি একটা প্রত্যাশা আমার কাছে। এছাড়া মিসির আলি বহুল পঠিত একটা উপন্যাসের চরিত্র। সাধারণ চিত্রনাট্যের চরিত্র হলে এত চিন্তা করতাম না। মিসির আলি এত জনপ্রিয় যে প্রত্যেক পাঠক-দর্শকের ভেতরে একজন মিসির আলি বাস করেন। উপন্যাসে কীভাবে পড়েছেন, আর পর্দায় কীভাবে দেখছেন, সেটা কিন্তু দর্শকরা ভাববেন। এ কারণে চরিত্রটি নিয়ে অনেক গবেষণা করতে হয়েছে। এই সময়ের চলচ্চিত্র নিয়ে এই অভিনেতার মন্তব্য কি জানতে চাইলে বলেন, ‘আয়নাবাজি’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে সিনেমা হলে অনেক নতুন দর্শক এসেছেন। এছাড়া চলতি বছরেও বেশ কয়েকটি ছবি দর্শকের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। দর্শক এখন নতুন কন্সেপ্টের কাজ দেখতে চায়। দর্শককে ভালো কিছু দেয়া প্রয়োজন। কিন্তু আমরা ভালো কিছু না দিয়েই বলি দর্শক সিনেমা দেখছে না। দর্শক এখন নিমিষে দেশের বাইরের ফিল্ম দেখতে পাচ্ছে। যেখানে সব কিছুর পরিবর্তন আসছে সেখানে আমরা পিছিয়ে থাকলে সেটির দায়ভার আমাদেরকেই নিতে হবে। জনপ্রিয় এই অভিনেতা মুঠোফোন প্রতিষ্ঠান রবির দুই বছরের জন্য ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এই প্রতিষ্ঠানের আটটি বিজ্ঞাপনে তাকে দেখা যাবে। এরই মধ্যে চারটি বিজ্ঞাপনের প্রচার শুরু হয়েছে। এগুলো দর্শকের মধ্যেও বেশ সাড়া ফেলেছে। বিজ্ঞাপনগুলো নির্মাণ করছেন তানভির। রোমাঞ্চ, হুমকি আর রহস্যতে ভরপুর এই বিজ্ঞাপনগুলো। প্রথমবারের মতো একসঙ্গে এতগুলো বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন বলে জানান চঞ্চল চৌধুরী। বর্তমানে ছোট পর্দার নাটকেও এই অভিনেতা ব্যস্ত সময় পার করছেন। তার হাতে রয়েছে অনিমেষ আইচের ‘জোসনাময়ী’, সাগর জাহানের ‘সোনার খাঁচা’ মাসুদ সেজানের ‘ডুগডুগি’ এবং ‘খেলোয়াড়’ শিরোনামের ধারাবাহিকগুলো। আলাপনের শেষভাগে এই অভিনেতা ছোট পর্দার এই সময়ের কাজ নিয়েও কথা বলেন। তার মতে, একজন শিল্পীকে সব ধরনের ভালো কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে হয়। কিন্তু এই সময়ে টিভি ধারাবাহিক নাটকে আগের মতো বৈচিত্র্যময় চরিত্র পাওয়া যায় না। সেই কারণে অনেকে টিভি ধারাবাহিকে কাজ করার অনীহা প্রকাশ করছে। তাই টিভি নাটক নির্মাতাদের বৈচিত্র্যময় গল্প নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।