রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিবির সন্দেহে চার শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে পুলিশে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম পাড়া এলাকা থেকে মোট ১৩ জন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। পরে তাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের একটি কক্ষে আটকে রেখে ঘণ্টাব্যাপী মারধর ও জিজ্ঞাসাবাদের পর চারজনকে পুলিশে সোপর্দ করে তারা। বাকি নয়জনকে ছেড়ে দেয়া হয়। ওই চার শিক্ষার্থীকে আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদিকে, আটককৃতরা বঙ্গবন্ধু হলে থাকাকালীন মতিহার হল ও মমতাজ উদ্দীন ভবনের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ক্যাম্পাসের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
আটককৃতরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী লিটন, দ্বিতীয় বর্ষের মুহাইমিন, সমাজকর্ম বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের নাসিম হাসান ও আরবি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাহরুখ। এদের মধ্যে লিটনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মারধরে তার পা রক্তাক্ত হয়ে যায় এবং দুই হাতে গুরুতর জখম হয়। ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কয়েকজন শিক্ষার্থী দল বেঁধে মন্নুজান হলের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী ১৩ জন শিক্ষার্থীকে আটক করে বঙ্গবন্ধু হলে নিয়ে যায়। এক ঘণ্টারও বেশি সময় আটকে রেখে মারধর ও জিজ্ঞাসাবাদের পর চারজনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। প্রমাণ না পাওয়ায় বাকি নয়জনকে ছেড়ে দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘শিবিরের ক্যাডাররা ক্যাম্পাসের পশ্চিম পাড়ায় শোডাউন দিচ্ছে এমন একটি ফোন পেয়ে আমরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে যাই। এ সময় কয়েকজনকে একসঙ্গে ঘুরতে দেখে সন্দেহ হয়। আমাদের দেখে কয়েকজন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। পরে আমরা তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে চারজন শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে।’ মারধরের পর পুলিশের গাড়িতে তোলার সময় লিটন ও মুহাইমিনের সঙ্গে কথা বললে তারা শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসে বিকালে ঘুরতে এসেছিলাম। এ সময় সন্দেহবশত আমাদের আটক করা হয়। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিনা কারণে আমাদের খুব মারধর করেছে। আমরা শিবির করি না।’ এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ‘শিবির সন্দেহে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কয়েকজনকে আটক করেছিলো। তাদের মধ্যে চারজনকে পুলিশে দেয়া হয়েছে।’ জানতে চাইলে নগরীর মতিহার থানার ওসি শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা চারজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। তাদেরকে এখন হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। সুস্থ হওয়ার পর আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবো।’