নবীগঞ্জ পৌর এলাকার জয়নগর গ্রামের বাসিন্দা পিন্টু দাশ। দরিদ্র পরিবারে তার জন্ম। হতদরিদ্র পিতা দেবেশ দাশ পুত্রের বভিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। পারিবারিক দৈন্যদশা আর পিতা-মাতার ভোগান্তি লাগবে লেখাপড়ার পাশাপাশি আখের রস বিক্রি করছে। মেধাবী শিক্ষার্থী পিন্টু হাল ছাড়তে নারাজ। মানসিক যন্ত্রণাকে শক্তিতে পরিণত করে এগিয়ে যেতে চায় পিন্টু। ছোট বেলা থেকেই দেখছে বাবা-মায়ের ভোগান্তি। পিন্টুর বাবা দেবেশ দাশ বিগত ১৫ বছর ধরে নবীগঞ্জ শহরে ঠেলাগাড়ি চালান।
কিশোর পিন্টু নবীগঞ্জ শহরে আখের রস বিক্রি করে। দরিদ্রতা তাকে দমাতে পারেনি। অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে সে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পিতা-মাতার দৈন্যদশা লাগবে বিক্রি করছে আখের রস। লেখাপড়ার পাশাপাশি সংসার পরিচালনায় হাল ধরতে চায় পিন্টু। নবীগঞ্জ সরকারি কলেজের দ্বাদশ বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী পিন্টু উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চায়। শিক্ষিত হয়ে সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চায়। শহরের ঐতিহ্যবাহী সরকারি জে কে মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াকালীন দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে সে মেধা পুরস্কারে ভূষিত হয়। আখের রস বিক্রি করে পরিবারের জীবিকা ও লেখাপড়া করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চায় পিন্টু। দরিদ্র পরিবারের গৃহবধূ পিন্টুর মা বলেন, ছেলের বাবা ঠেলা গাড়ি চালান। পিন্টু বাজারে আখের রস বিক্রি করে তার লেখাপড়া ও আমাদের পরিবারের ভরণ-পোষণ করছে। মরার আগে যেন দেখে যেতে পারি পিন্টু একজন উচ্চপদস্থ অফিসার হয়ে দেশ ও সমাজের উপকার করছে। ছেলের জন্য আমি সব সময় এই প্রার্থনা করি। মেধাবী শিক্ষার্থী পিন্টু জানায়, দরিদ্রতায় উদ্বিগ্ন মা-বাবা একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারে না। সেই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে আমি লেখাপড়া করছি। আমার বাবা ঠেলা চালিয়ে আমাকে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। আমি কিছুটা বড় হওয়ার পর যখন দেখেছি বাবা ঠেলাগাড়ি চালান, তখন আমি বাবাকে সহযোগিতা করতে শহরে আখের রস বিক্রি করছি। আমার বাবা মায়ের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। ঈশ্বরের কৃপায় তারা আমাকে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন। প্রায়ই পত্রিকার খবরে পড়ি সরকার অসহায় শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ান। তাদের লেখাপড়ার খরচের ভার বহন করেন। যদি আমার লেখাপড়ার দায়িত্ব নেয়া হয়, তাহলে বাবা মায়ের মৃত্যুর পূর্বে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাব।
তার বিশ্বাস জীবনযুদ্ধে হতাশার কিছু নেই। সামনে এগিয়ে যেতে হবে। ভাগ্য পরিবর্তনে এর কোনো বিকল্প নেই।