× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

রংপুরে আওয়ামী লীগ ও জাপা মুখোমুখি

দেশ বিদেশ

জাভেদ ইকবাল, রংপুর থেকে
২০ অক্টোবর ২০১৮, শনিবার

একাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে উত্তপ্ত রংপুর। বৃহত্তর রংপুরের ২২ আসন নিয়ে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মধ্যে চলছে যুদ্ধ। সম্প্রতি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রংপুরে নেতাকর্মীদের বলেছেন বৃহত্তর রংপুরের ২২ আসনের মধ্যে রংপুর-৬ পীরগঞ্জ আসনে আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার আসন ছাড়া বাকি ২১টি আসন জাতীয় পার্টি ছাড় দেবে না। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোনো আপস চলবে না। নির্বাচন ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশও তিনি দেন। এ ঘোষণার পর থেকেই চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মনে করেন, বর্তমান সময়ে রংপুরে জাতীয় পার্টির অবস্থান খুবই দুর্বল। এখানে এখন শক্ত অবস্থান তৈরি হয়েছে আওয়ামী লীগের।
তাই রংপুর সদর আসনও এরশাদকে ছাড় দেয়া হবে না। জোটবদ্ধ নির্বাচন হলেও এবার রংপুর সদর-৩ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দেবে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা চৌধুরী খালেকুজ্জামানকে রংপুর-৩ আসনে মনোনয়নের দাবিতে কাচারী বাজারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন হয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ারুল ইসলামের পক্ষেও অনেকে কাজ করছেন। রংপুরে এখন আওয়ামী লীগের স্লোগান ‘আর পড়বো না ধোঁকায়, ভোট দেবো নৌকায়’। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির মধ্যে মহাজোট গঠন হলেও বুঝে শুনে জাতীয় পার্টিকে রংপুরের আসন ছাড় দেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের জানানো হবে বলে দলীয় সূত্র জানায়। এদিকে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি দুই দলই নিজেদের শক্ত ঘাঁটি দাবি করে রংপুর দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগের ১৪ দলের অন্যতম জাসদ (ইনু) রংপুর-২ (বদরগঞ্জ ও তারাগঞ্জ) আসনে তাদের প্রার্থী কুমারেশ রায়কে এক জনসভায় আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে পরিচয় করে দিয়ে তাকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে সমালোচনা করেন জাতীয় পার্টির। জানা যায়, গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর জেলার ৬টি আসনের মধ্যে ৪টি আসন চলে যায় আওয়ামী লীগের দখলে। জাতীয় পার্টির থাকে ২টি আসন। এর মধ্যে রংপুর সদর-৩ আসনের এমপি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া) আসনে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা। এছাড়া রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক, রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক টিপু মুন্সি, রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান এবং রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি নির্বাচিত হন। বৃহত্তর রংপুরের নীলফামারী জেলার ৪টি আসনেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে এমপি ঘোষণা করা হয়। নীলফামারী-২ আসনে আসাদুজ্জামান নুরের মনোনয়ন প্রায় চূড়ান্ত। বাকি ৩টি আসনই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। লালমনিরহাট জেলার ৩টি সংসদীয় আসনের মধ্যে গত নির্বাচনে ৩টিই যায় আওয়ামী লীগের দখলে। সম্প্রতি লালমনিরহাট-২ আসনে নুরুজ্জামান আহমেদের মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়েছে। অপর ২টি আসনে আওয়ামী লীগের এমপি থাকলেও আগামী নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত হয়নি। গাইবান্ধার ৫টি সংসদীয় আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে ৩টি, ১টি জাতীয় পার্টি ও একটি স্বতন্ত্র এমপি। গাইবান্ধা-২ আসনে মাহাবুব আরা গিনির মনোনয়ন চূড়ান্ত। কুড়িগ্রাম জেলার ৪টি আসনের মধ্যে ২টি আসন আওয়ামী লীগের ও ২টি জাতীয় পার্টির ছিল। সম্প্রতি মাইদুল ইসলামসহ জাতীয় পার্টির ২ এমপি প্রয়াত হলে উলিপুর-চিলমারী আসনে পুনরায় জাতীয় পার্টির ডা. আক্কাস আলী বিজয়ী হন। অপরদিকে কুড়িগ্রাম সদর আসনে এমপি তাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রয়াত হলে এ আসনে উপনির্বাচনের সম্ভাবনা থাকছে না বলে জানান নির্বাচন কমিশনার। রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. রেজাউল ইসলাম রাজু মানজমিনকে জানান, জাতীয় পার্টিকে ২১ আসন ছাড় দেয়ার প্রশ্ন উঠে না। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে রংপুর জেলার ৬টি আসনের মধ্যে জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সঙ্গে ত্রিমুখী লড়াই করে ৩টি আসন পেয়েছিল আওয়ামী লীগ। এরশাদের জনপ্রিয়তা আগের মতো নেই। তার প্রমাণ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। ইউপি নির্বাচনে বৃহত্তর রংপুরে জাতীয় পার্টির ভরাডুবি হয়েছে। তিনি বলেন আমাদের আশা রংপুর সদর আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেয়া। তবে জোটবদ্ধ নির্বাচন হলে দলীয় সিদ্ধান্ত আমাদের মেনে নিতে হবে। অপরদিকে রংপুর জেলা জাতীয় পাার্টির সাধারণ সম্পাদক ফখর-উজ-জামান জাহাঙ্গীর বলেন, জাতীয় পার্টির ঘাঁটি হিসেবে ২১ আসন চাওয়াকে তিনি যুক্তিযুক্ত মনে করেন। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের নির্দেশে বৃহত্তর রংপুরের ২২ আসনের মধ্যে ২১ আসনে প্রার্থী দেয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জাতীয় পার্টি সবকটি আসনে জয়ী হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম মঞ্জু মন্ডল বলেন, বর্তমান আওয়ামী সরকারের আমলে কুড়িগ্রাম জেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এ উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এলাকাবাসী অবশ্যই নৌকা মার্কার প্রার্থীকে বিজয়ী করবে।

অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর