× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির প্রস্তাব ভারতের

প্রথম পাতা

মিজানুর রহমান
২০ অক্টোবর ২০১৮, শনিবার

বাংলাদেশের সঙ্গে সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির প্রস্তাব করেছে ভারত। দিল্লির তরফে প্রস্তাবিত চুক্তিটি দ্রুত সইয়ের তাগিদও রয়েছে। এ নিয়ে গেল মাসে ঢাকায় আলোচনা করে গেছেন দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের মুখ্য আলোচ্য ছিল এটি। চুক্তিটি সইয়ে দু’পক্ষ একমত বলে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। বলা হয়- প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেই এটি সই হবে। কিন্তু কূটনৈতিক সূত্রের খবর চুক্তিটি সইয়ে বাংলাদেশের বিদেশনীতি বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা এখনো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেননি! পেশাদার কূটনীতিকরা বলছেন গুরুত্বপূর্ণ ওই চুক্তি সইয়ের আগে বাংলাদেশকে বহু কিছু ভাবতে হচ্ছে। বাণিজ্য, বিনিয়োগ তথা অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংক্রান্ত এমন চুক্তি সইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় এক যুগের বেশি সময় নিয়েছিল বাংলাদেশ।
ওই সময়ে প্রস্তাবিত চুক্তি টিফা থেকে টিকফা বা ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম এগ্রিমেন্টে পরিবর্তিত হয়েছে। চীনের সঙ্গে অবশ্য বাংলাদেশের এমন চুক্তি ছিল বহু বছর। ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের ঢাকা সফরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত হওয়ায় আগের চুক্তিগুলো এর সঙ্গে মার্চ করেছে বা ঢুকে গেছে- এমনটাই বলা হচ্ছে। পেশাদারদের মতে, খানিক ব্যতিক্রম ছাড়া মোটা দাগে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য চুক্তির আদলেই সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি চাইছে ভারত। এ নিয়ে দিল্লি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ এখনই এটি সইয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে না। দুই দেশেই জাতীয় নির্বাচন সামনে রয়েছে উল্লেখ করে ঢাকার এক কূটনীতিক বলেন, দিল্লির প্রস্তাব আমরা পেয়েছি। এটি এখনো পর্যালোচনার পর্যায়ে রয়েছে। নীতি নির্ধারণী মহলে এ নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে। চটজলদি তা হবে বলে মনে হয় না।

অন্য এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, দূরের দেশের সঙ্গে অনেক কিছু করা সহজ। কিন্তু ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী তা-ও ভারতের মতো বড় প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে কম্প্রিহেনসিভ বা সমন্বিত যেকোনো চুক্তির জন্য আরো প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। এটি দিল্লিও বুঝে। মনে হয় না এটি খুব তাড়াতাড়ি হবে। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সহজীকরণ তথা দুই দেশের সামগ্রিকভাবে অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে এমন চুক্তি সহায়ক হবে- এমনটা মানছেন ঢাকার কর্মকর্তারা। তবে তারা হিসাব কষছেন প্রতিবেশী বড় অর্থনৈতিক শক্তিধর রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে এটি হলে কতটা লাভবান হবে বাংলাদেশ? এক কর্মকর্তার মতে, কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট হচ্ছে দুই দেশের মধ্যে এক ধরনের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি। সমান সমান অর্থনৈতিক শক্তির দুই দেশের মধ্যেই এমনটি হয়। আর তাতে উভয় পক্ষ সমানভাবে লাভবান হয়। ওই কর্মকর্তা অবশ্য বলেন- ভারতের প্রস্তাবিত চুক্তিতে পণ্য বাণিজ্যের বাইরে সেবা ও বিনিয়োগ-সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলোও রয়েছে।

কর্মকর্তা আরো জানান, ভারত ইতিমধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে এমন চুক্তি করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের অনেক  দেশের সঙ্গেও তাদের এ ধরনের চুক্তি রয়েছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ এলডিসি হিসেবে এবং সাফটার অধীনে ভারতের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্তসহ  বেশকিছু সুবিধা পায়। ২০২৭ সালের পরে এই সুবিধা আর থাকছে না। ওই সময়ের পরে ভারতে এমন সুবিধা পেতে কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্টই বাংলাদেশের ভরসা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক এখন অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে সর্বোচ্চ উচ্চতায় রয়েছে। বন্ধুত্বপূর্ণ ওই সম্পর্কের মধ্যেই ৬ দশকের  পুরনো ছিটমহল সমস্যার সমাধান হয়েছে।

বর্তমানে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ৮০০ কোটি ডলারের বেশি বাণিজ্য হচ্ছে। যদিও বাণিজ্যে ভারতের পাল্লা ভারী। বাংলাদেশ ভারত থেকে তুলা, সুতা, মেশিনারিজ, চাল আমদানি করে। আর ভারত বাংলাদেশ থেকে পাট আমদানি করে। তবে ভারতে পাট রপ্তানিতে বাংলাদেশকে অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক দিতে হয়। যদিও ওই শুল্ক তুলে নিতে ঢাকার তরফে অনেকদিন ধরে দেন-দরবার চলছে। ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী অবশ্য পাটের ওপর শুল্ক তুলে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর