দোয়ারাবাজার উপজেলা সীমান্তের উজান থেকে নেমে আসা ঘিলাতলী খালে নির্মিত হয়েছে লাফার্জ হোলসিম লিমিটেডের দৃষ্টিনন্দন বেইলি ব্রিজ। নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হওয়ার আগেই ঘিলাতলী খালের বেইলি ব্রিজের সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিন উৎসুক মানুষজন ছুটে আসছেন এখানে। সীমান্ত এলাকায় দৃষ্টিনন্দন ওই ব্রিজ নির্মাণে একদিকে যেমন দীর্ঘদিনের ভোগান্তি কমবে অন্যদিকে পড়ন্ত বিকালে অবসর সময় কাটাতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সব বয়সের মানুষজনের ভিড় জমবে বেইলি ব্রিজে। ব্রিজটি দেখতে খুবই সৌন্দর্যমণ্ডিত। দূর থেকে দেখলে যে কাউকে বিমোহিত করবে নবনির্মিত বেইলি ব্রিজ। বর্ষায় নদীর বহমান শ্রোত ও পানি শব্দে আগন্তুকদের আরো আকৃষ্ট করে তুলবে। ঘিলাতলী বেইলি ব্রিজটি ঘিরে একসময় ওই এলাকাটি হয়ে ওঠবে উপজেলার অন্যতম সম্ভাবনাময় একটি পর্যটন স্পট।
স্থানীয়রা জানান, ঘিলাতলী খালে বর্ষায় প্রচণ্ড শ্রোত থাকে।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তখন হাত নৌকা অথবা কলাগাছের ভেলায় পারাপার ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। উপজেলার নরসিংপুর ও বাংলাবাজার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষদের প্রচণ্ড শ্রোতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে নদী পারাপার হতে হয়। এ কারণে অনেক সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় পথযাত্রীদের। বৃষ্টিপাত হলেই দুর্ভোগ যেন লেগে থাকে এখানে। বর্ষায় ভারত থেকে নেমে আসা পানি ভরপুর থাকে খাল। দুই তীর ঘেঁষে তখন পানির প্রচণ্ড শ্রোত প্রবহমান থাকায় খালে যেন উত্তাল তরঙ্গ হয়ে ওঠে। উজানের পানি ভরে ওঠে খালটি এক সময়ে নদীর রূপ ধারণ করে।
বৃষ্টি-বাদলের দিনে বাংলাবাজার ভায়া শ্রীপুর, নরসিংপুর সড়কে মোটরসাইকেলসহ হাল্কা যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে। এছাড়া সারা বছর খালে পানি থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত পারাপার হতে হয় ঘিলাতলী, শ্রীপুর, বড়খাল, রামশায়েরগাঁও, বাংলাবাজার, নরসিংপুরসহ দুই তীরের কয়েকটি গ্রামের স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের। অনেক শিক্ষার্থী অভিভাবকরা জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদীসনতায় ওই খালে দীর্ঘ দিনেও ব্রিজ নির্মাণ না হওয়ায় ভোগান্তির অন্ত ছিল না। লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট কোম্পানি জনস্বার্থে নিজেদের অর্থায়নে এখানে ব্রিজ নির্মাণ করায় আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি লাফার্জ কোম্পানি এভাবে জনস্বার্থে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে এগিয়ে আসলে এখানকার বাসিন্দাদের জীবন মানের আরো উন্নতি ঘটবে।
লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট কোম্পানি কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, জনস্বার্থের কথা চিন্তা করে সম্প্রতি ছাতক লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট কোম্পানির ‘সামাজিক দায়বদ্ধ ফান্ড’ হতে প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন ওই বেইলি ব্রিজটি নির্মাণ করে। ফলে দীর্ঘদিনের জন ভোগান্তি দূরীভূত হয়ে সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের জন্য উপজেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটবে। তাছাড়া ব্রিজ নির্মাণের ফলে দুই পারের স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাপড়ুয়া শিক্ষার্থীরা এখন থেকে নিরাপদে পাহাড়ি ওই খালটি পারাপার হতে পারবে।
লাফার্জ সুরমা হোলসিম লিমিটেডের কমিউনিকেশন বিভাগের থাকা মুহিউদ্দিন বাবর জানান, জনস্বার্থের কথা চিন্তা করে লাফার্জ সিমেন্ট কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ঘিলাতলী খালে বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে এখানকার বাসিন্দা, বিশেষ করে বড়খাল স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ আশেপাশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের নিরাপদ নদী পারাপারের জন্য কোম্পানির নিজস্ব জিনিসপত্র দিয়ে লাফার্জের উন্নত কারিগরি প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যায়ে বেইলি ব্রিজটি নির্মিত হয়েছে। আশা করছি লাফার্জ কোম্পানির ওই উদ্যোগের ফলে এখানকার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি দূর হবে। তাছাড়া উপজেলার প্রসিদ্ধ বাণিজ্যিক বাজার বাংলাবাজারের সঙ্গে অন্য এলাকার সড়ক যোগাযোগ সহজতর হবে। সীমান্ত এলাকায় যানবাহন চলাচল ও পারাপারে আরো কোনো সমস্যা থাকবে না। নির্মিত ব্রিজ দিয়ে প্রতিনিয়ত হাল্কা যান, মিনি ট্রাক, পিকআপ, অটো রিকশা, সিএনজি, মোটরসাইকেল ঝুঁকিহীনভাবে চলাচল করতে পারবে।