× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট গ্রাম বিশ্বনাথের শ্রীমুখ!

বাংলারজমিন

আক্তার আহমদ শাহেদ, বিশ্বনাথ (সিলেট) থেকে
২০ অক্টোবর ২০১৮, শনিবার

বাংলাদেশের সবচে’ বড় গ্রামের নাম কী? জানতে চাইলে যে কেউ এক বাক্যে বলবে হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং। আর বাংলাদেশের সবচে’ ছোট গ্রাম কোনটি? এমন প্রশ্নে অনেকেই দ্বিধায় পড়ে যাবেন। ধারণা করা হচ্ছে, সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রাস্তাবিহীন ‘শ্রীমুখ’ গ্রামটিই বাংলাদেশের সবচে’ ছোট গ্রাম! কেননা, ইতিপূর্বে বাংলাদেশের সবচে’ ছোট গ্রাম হিসেবে আলোচিত হওয়া কুমিল্লা জেলার লালমাই উপজেলার বেলঘর ইউনিয়নের ‘তিলইন’ গ্রামের জনসংখ্যা ৪০ জন। যাদের সবাই হিন্দু ধর্মাবলম্বী বলে জানা যায়। অপরদিকে, বিশ্বনাথের শ্রীমুখ গ্রামের বর্তমান জনসংখ্যা পাঁচজন। এর মধ্যে তিনজন নারী, একজন পুরুষ ও একজন শিশু। এই গ্রামের একমাত্র পুরুষ সদস্য সৌদি প্রবাসী। ভোটার সংখ্যা মাত্র তিন।
সমাজ সচেতন অনেকেই মনে করেন, শ্রীমুখ শুধু এশিয়ারই নয়, বিশ্বের সবচে’ ছোট গ্রামও হতে পারে। বিশ্বনাথ উপজেলা সদর হতে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে স্থানীয় খাজাঞ্চী ইউনিয়নের পশ্চিম নোয়াগাঁও এবং তেলিকোনা গ্রামের মধ্যবর্তী জায়গায় এই গ্রামের অবস্থান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৬০শতক জায়গাজুড়ে ‘এক বাড়ি-একঘরে এক গ্রাম’ খ্যাত শ্রীমুখ গ্রামে একসময় হিন্দু পরিবারের বসবাস ছিল। ১৯৬৪ সালের রায়টের সময় ওই হিন্দু পরিবার বাড়িটি স্থানীয় আপ্তাব আলীর পূর্বপুরুষের কাছে বিক্রি করে ভারতে চলে যান। বর্তমানে আপ্তাব আলীর পরিবার এই গ্রামে বসবাস করে আসছেন। তবে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে সৌদি প্রবাসী। আর বাড়িতে বসবাস করছেন তার স্ত্রী-কন্যা ও দুই বোন।
শনিবার বিকালে সরজমিন শ্রীমুখ গ্রামে গেলে দেখা যায়, এর চতুর্দিক ধানী জমি-বাঁশঝাড়, জঙ্গল ও কাদামাটি পরিবেষ্টিত। খালি পায়ে কাদামাটি ও পানি পেরিয়ে কোনো রকমে ঢুকতে হয় নিজস্ব রাস্তাবিহীন উন্নয়ন বঞ্চিত এই গ্রামে। কথা হয় গ্রামের একমাত্র পুরুষ সদস্য, সৌদি প্রবাসী আপ্তাব আলীর স্ত্রী রাহিমা বেগমের সঙ্গে। জানালেন নানা বঞ্চনা, দুর্ভোগ ও দুর্গতির কথা। বললেন, বাড়ির (গ্রামটির) নিজস্ব কোনো রাস্তা না থাকায় অন্যের জায়গা দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। তাদের একমাত্র কন্যাশিশুকে প্রতিদিন কাদামাটি-পানি পেরিয়েই স্থানীয় কিন্ডারগার্টেনে যেতে হয়। বিশেষ করে, বর্ষা মৌসুমে নৌকা ছাড়া চলাচলই করা যায় না। আর্থিক দুরবস্থার দরুণ ব্যবহার করতে হয় কাঁচা পায়খানা। একমাত্র টিউবওয়েলটি নষ্ট থাকার কারণে পান করতে হয় পুকুরের পানি। এ সময় তিনি এ প্রতিবেদকের কাছে দুটি অভিযোগও করেন। জানান, অনেক কষ্টের বিনিময়ে গ্রামে বিদ্যুৎ নিয়ে এলেও মিটার রিডাররা বাড়িতে না গিয়েই মনগড়া বিল তৈরি করেন। তার এক ননদ বয়স্ক হলেও কোনো ভাতা পান না তিনি। খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তালুকদার মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, শ্রীমুখের পার্শ্ববর্তী জায়গার মালিকেরা যদি (জমি দিয়ে) সহযোগিতা করেন, তাহলে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে তাদের রাস্তার ব্যবস্থা করে দেয়া হবে। এ ছাড়া, আগামী ডিসেম্বর মাসে গ্রামের ভাতাবঞ্চিত সদস্যকে ভাতা প্রদান করা হবে। আমি মনে করি, সঠিক পর্যবেক্ষণ করা হলে আমার ইউনিয়নের এই শ্রীমুখ গ্রামটি শুধু বাংলাদেশ নয়, এশিয়া তথা বিশ্বের সবচে’ ছোট গ্রাম হতে পারে। যদি তাই হয়, তাহলে ‘শ্রীমুখ’ গিনেজ বুকে নাম লেখাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাভ পরাগ তালুকদার বলেন, শ্রীমুখ গ্রামের কথা আমি শুনেছি। শিগগিরই গ্রামটি পরিদর্শন করব।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর