রূপগঞ্জে ১৯শে অক্টোবর মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে অপহরণের পর তিন বছরের শিশুকে হত্যার নিষ্ঠুর বর্ণনা দিয়েছে এই ঘটনায় আটক এক খুুনি। পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করায় তাকে লুকিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে শিশুর নিজ বাড়িতেই মুখে স্কচটেপ মেরে বস্তায় পুরে রাখে ঘাতকরা। এ ঘটনায় শনিবার সকালে নিহত শিশু জুঁই আক্তারের পিতা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে দুজনকে নামীয়সহ আরো ৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ মামলার অভিযুক্ত আসামি ও আনোয়ার হোসেনের বাড়ির ভাড়াটিয়া খয়বর হোসেন (৩২)কে গ্রেপ্তার করেছে। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে খয়বরের ছোট ভাই প্রধান ঘাতক শাহজালাল ও তার সহযোগী আশরাফুল। আটক খয়বরের বসতঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৫টি ধারালো দেশি অস্ত্র।
ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম জানান, গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ভুলতা ইউনিয়নের টেকপাড়া গ্রামের কাপড় ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনের মেয়ে জুঁই আক্তার (৩) বাড়ির পাশে খেলতে গেলে একদল অপহরণকারী তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। দুপুর ২টার দিকে অপহরণকারীরা তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর থেকে অপহৃত জুঁইয়ের পিতা আনোয়ার হোসেনের মোবাইলে মুক্তিপণের জন্য ৫ লাখ টাকা দাবি করে ফোন করে।
এসময় তারা এ ঘটনায় থানা পুলিশের আশ্রয় নিলে অথবা মুক্তিপণের টাকা দিতে বিলম্ব করলে জুঁইকে হত্যা করা হবে হুমকি দেয়। এদিকে শুক্রবার সকালে আনোয়ার হোসেনের বাড়ির পাশে হাত-পা বাঁধা মুখে স্কচটেপ পেঁচানো বস্তাবন্দি অবস্থায় শিশু জুঁইয়ের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
জুঁইয়ের পিতা আনোয়ার হোসেন জানান, আট বছর যাবৎ তার বাড়িতে ভাড়া থাকতো কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী থানাধীন দক্ষিণ দলডাঙ্গা এলাকার ছোমেদ আলী ছেলে। কিছুদিন আগে তার আরেকটি কক্ষ ভাড়া নেয় খয়বরের ছোট ভাই শাহজালাল। বৃহস্পতিবার টাকার লোভে খয়বর, শাহজালাল এবং তাদের বন্ধু আশরাফুল মিলে তার মেয়ে জুঁইকে অপহরণ করে খয়বরের ঘরে লুকিয়ে রাখে। এ সময় তারা খোঁজাখুঁজি শুরু করলে মুখে স্কচটেপ মেরে বস্তায় পুরে রাখে তারা। পরে মুক্তিপণের জন্য ফোন করে। এদিকে বস্তাবন্দি থাকায় শ্বাসরোধে মারা যায় জুঁই। রাতেই বাড়ির পাশে তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় শাহজালাল ও আশরাফুল। শুক্রবার দুপুরে আটক হয় খয়বর। পরে শনিবার বিকালে তার বসতঘরে তল্লাশি চালিয়ে ৫টি ধারালো রামদা উদ্ধার করে ভুলতা ফাঁড়ির পুলিশ। এ ঘটনায় শনিবার সকালে নিহত শিশু জুঁইয়ের পিতা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে তার ভাড়াটিয়া খয়বর হোসেন ও শাহজালালকে নামীয় আসামিসহ আরো অজ্ঞাতনামা আটজনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। আশরাফুলকে মামলার এজাহারে সংযুক্ত করার পক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, শিশু জুঁই হত্যার ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়েছে। একজন আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।