× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

খাসোগি হত্যার দায় স্বীকার সৌদির

শেষের পাতা

মানবজমিন ডেস্ক
২১ অক্টোবর ২০১৮, রবিবার

অনেক জল ঘোলা করার পর অবশেষে সৌদি আরব আনুষ্ঠানিকভাবে দেশটির রাজপরিবারের সমালোচক ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটেই এক মারামারির ঘটনায় খাসোগি নিহত হন। আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, জামাল খাসোগি কনস্যুলেটে প্রবেশের অনতিবিলম্বেই তাকে হত্যা করা হয়। তবে তার লাশ কোথায় রয়েছে সেটা এখনো জানানো হয়নি। সৌদি আরবের পক্ষ থেকে আরো বলা হয়, এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে সৌদি আরবের উপ-গোয়েন্দা প্রধান আহমাদ আল-আসিরি ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সিনিয়র সহকারী সৌদ আল-কাহতানিকে বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে খাসোগি হত্যাকাণ্ডের তদন্তের অংশ হিসেবে ১৮ সৌদি নাগরিককে আটক করা হয়েছে। সৌদির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, বাদশাহ সালমান দেশটির গোয়েন্দা বিভাগকে ঢেলে সাজানোর জন্য প্রিন্স বিন সালমানকে প্রধান করে একটি মন্ত্রিপরিষদীয় কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে সৌদি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সৌদ আল-মোজেব জানিয়েছেন, খাসোগির সঙ্গে আলোচনারত অবস্থায় ঝগড়ার সূত্রপাত হলে তাকে হত্যা করা হয়। তিনি বলেন, জামাল খাসোগির সাক্ষাৎকার যিনি নিচ্ছিলেন তার সঙ্গে বাকযুদ্ধ এক পর্যায়ে মারামারিতে পরিণত হয়।
এতেই খাসোগির মৃত্যু হয়। তিনি খাসোগির আত্মার শান্তি কামনাও করেন। এই প্রথম সৌদি আরবের পক্ষ থেকে জামাল খাসোগির নিহত হওয়ার খবর স্বীকার করা হলো। এর আগে সৌদি বাদশাহ সালমান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেফ তাইয়্যেপ এরদোগানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। তার কিছুক্ষণ পরই রাষ্ট্রীয় টিভির নিউজ বুলেটিনে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

 সৌদি আরবের পক্ষ থেকে সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করে নেয়ার পর এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রামপ। শুক্রবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সৌদি আরবের ব্যাখ্যাকে আমি গ্রহণযোগ্য মনে করছি। সৌদি সরকারের প্রশংসা করে ট্রামপ বলেন, এই পরিস্থিতিতে সৌদি আরব ভালো একটি পদক্ষেপ নিয়েছে। সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, ডনাল্ড ট্রামপ সৌদি আরবকে পরম বন্ধু হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, যা ঘটেছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। ট্রামপ জানান, সৌদি আরবের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি হলেও প্রতিরক্ষা বাণিজ্যের আওতায় সেখানে অস্ত্র বিক্রি অব্যাহত থাকবে।

হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকেও সৌদির দায় স্বীকারকে স্বাগত জানানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, খাসোগি হত্যা নিয়ে তদন্তে যথাযথ স্বচ্ছতা নিশ্চিত ও দোষীদের বিচারে সৌদি আরবের ওপর চাপ অব্যাহত থাকবে। তবে তারা সৌদির বয়ান শুনেছে ও স্বাগত জানিয়েছে।

এ ছাড়াও খাসোগির মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। শনিবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি খাসোগির হত্যাকাণ্ডে গভীর দুঃখ প্রকাশ করে একটি নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। গুতেরেস বলেন, সবরকম প্রভাবের বাইরে থেকে এ হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে হবে।

এদিকে, ডনাল্ড ট্রামপ ও হোয়াইট হাউস খাসোগি হত্যা নিয়ে সৌদি আরবের ব্যাখ্যাকে স্বাগত জানালেও খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই অনেকে সৌদির কঠোর সমালোচনা করছেন। দেশটির অনেক আইন প্রণেতাই সৌদি আরবের দাবিকে অগ্রহণযোগ্য বলে তা নিয়ে তাদের সন্দেহ প্রকাশ করেছে। মার্কিন সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম এক টুইটারে লিখেছেন, প্রথমে বলা হলো খাসোগি কনস্যুলেট ত্যাগ করেছেন ও তার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় সৌদি আরবের কোনো হাত নেই।

এখন বলা হচ্ছে,  মোহাম্মদ বিন সালমানের (এমবিএস) অজ্ঞাতসারেই কনস্যুলেটের ভেতরে খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে। নতুন এ ব্যাখ্যা মেনে নেয়া যায় না। আরেক সিনেটর রিচার্ড ব্লুমেনথাল  সিএনএনকে বলেছেন, সৌদি আরবের এ ব্যাখ্যার কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। আমি এ হত্যাকাণ্ডের আন্তর্জাতিক তদন্ত চাই। এ ছাড়া, প্রতিনিধি পরিষদে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধি টেড লিউ সৌদি আরবের দাবিকে অর্থহীন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, মারামারিতে নিহত হলে খাসোগির মৃতদেহ করাত দিয়ে কেটে টুকরো করার প্রয়োজন ছিল না।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর