অবশেষে শঙ্কা উড়িয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সহজ জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। মিরপুর শেরেবাংলা মাঠে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ে হেরেছে ২৮ রানে। টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে  বাংলাদেশ ১৩৯ রানে হারিয়েছিল ৬ উইকেট। সেখান থেকে ইমরুল কায়েসের সেঞ্চুরি ও  মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের ফিফটিতে ম্যাচে ফিরে দল। দু’জনের সপ্তম উইকেটের জুটিতে আসে রেকর্ড ১২৭ রান। ইমরুল ১৪৪ ও সাইফুদ্দিন করেন ৫০ রান করে আউট হন।  তবে তাদের ব্যাটের কল্যানে ৮ উইকেট হারিয়ে জিম্বাবুয়ের কে ২৭২ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেয় দল। জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশের বোলিংয়ের সামনে প্রতিরোধ গড়তে পারেনি মাসাকাদজার দল।  ১৬৯ রানে হারায় ৮ উইকেট। এরপর অষ্টম উইকেটে ৬৭ রানের জুটি গড়েন উইলিয়ামস ও জার্ভিস। তবে তাদের শেষ মুহুর্তে এই প্রতিরোধেও হার এড়াতে পারেনি সফরকারিরা।  দেশের মাটিতে এ নিয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা ১৪ ম্যাচে জয় পেল টাইগাররা। ২০১০ এর পর বাংলাদেশ সফরে এসে আর কোন ওয়ানডেই জিততে পারেনি দলটি।

বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেয়া ২৭২ রান তাড়া করতে নেমে দলীয় ১০০ রানে পাঁচ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। দারুণ ডেলিভারিতে ওপেনিং জুটি (৪৮) ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান। অষ্টম ওভারে মোস্তাফিজের বলের সুইংয়ে পরাস্ত হন বিপদজনক হয়ে ওঠা চিপাস জুওয়াও (৩৫)। ক্লিন বোল্ড হয়ে ফেরেন সাজঘরে। মোস্তাফিজের পর দ্বিতীয় আঘাত হানেন স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপর। ১১তম ওভারে ব্রেন্ডন টেলরকে (৫) বোল্ড করেন এই বাঁহাতি স্পিনার। চার রান যোগ হতেই রানআউট হন ওপেনার হ্যামিল্টন মাসাকাদজা (২১)। দলীয় ৬৩ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। দুই রান নিতে গিয়ে ইমরুল কায়েসের থ্রো থেকে মাসাকাদজাকে রানআউট করেন মুশফিকুর রহীম। অপুর দ্বিতীয় শিকার দলে ফেরা সিকান্দার রাজা (৭)। দলীয় ১০০ রানে ক্রেইগ আরভিনকে (২৪) ফেরান মেহেদী হাসান মিরাজ। এবারও বোল্ড। ডানাল্ড তিরিপানোকে (২) রানআউট করেন ফজলে মাহমুদ। ৭ উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। আগের ওভারে ৪৫ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৩৬ ওভারের চতুর্থ বলে পিটার মুরকে (২৬) এলবিডব্লিউ করেন এই অফস্পিনার। ৩৭ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ১৪৯/৭। শেষ ৭৮ বলে জয়ের জন্য দরকার ১২৩ রান। কিন্তু ১ উইকেট হাতে থাকলেও নির্ধারিত ওভারে  শেষে ২৪৩ রানে থামে সফরকারিরা।  
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে চাপের মুখে সেঞ্চুরি করেন ইমরুল কায়েস। আর এতে তিনি স্পর্শ করেন মুশফিকুর রহিমকে। নিজের উইকেট দেয়ার আগে ১৪০ বলে ১৪৪ রান করেন ইমরুল। ওয়ানডেতে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। ওয়ানডেতে তামিম ইকবালের  করা ১৫৪ রানে ইনিংসটি সর্বোচ্চ। আর মুশফিকের রয়েছে ১৪৪ রানের ইনিংস। ক্যারিয়ারে তৃতীয় সেঞ্চুরি করলেন ইমরুল। ১৪৪ রানের ইনিংস খেলার পথে ১৩টি চার ও ৬টি ছক্কা হাঁকান তিনি। এরপর ক্যারিয়ারে প্রথম ফিফটি করে আউট হন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। ১৩৯ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর ইমরুল ও সাইফুদ্দিন মিলে ১২৭ রানের জুটি গড়েন। তার আগে মাত্র ২ রানের ব্যবধানে আউট হন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ। রিয়াদ ০ রানে এবং মিরাজ ১ রানে সাজঘরে ফেরেন। শুরুর ধাক্কা সামলে বাংলাদেশকে ভালোই এগিয়ে নিচ্ছিলেন মুশফিকুর রহিম ও ইমরুল কায়েস। কিন্তু মুশফিককে আউট করে দুইজনের ৪৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি ভাঙেন মাবুতা। ব্যক্তিগত ১৫ রান করে আউট হন মুশফিক। মুশফিকের বিদায়ে দলীয় ৬৬ রানে তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটে। এরপর মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে ৭১ রানের জুটি গড়েন ইমরুল। দলীয় ১৩৭ রানে আউট হন মিঠুন (৩৭)। এর আগের ওভারে মাত্র দলীয় ১৬ রানে ওপেনার লিটন দাসের (৪) উইকেট খোয়ায় বাংলাদেশ। ১ রান যোগ হতেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন অভিষিক্ত ফজলে মাহমুদ রাব্বি (০)। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। এ ম্যাচে অভিষেক হয় ব্যাটসম্যান ফজলে মাহমুদের। এছাড়া দলে জায়গা পেয়েছেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। অসুস্থতার কারণে একাদশে জায়গা হয়নি পেসার মোহাম্মদ রুবেলের।