টাঙ্গাইলের মধুপুর গড় এলাকার বহু পুরানো কাউছির বাজার-ধরাটি-দোখলা সড়কের বেহাল অবস্থা। লালমাটি অধ্যুষিত এলাকার অধিকাংশই গারো সম্প্রদায়ের। সড়কটি বেহালের কারণে গারো সম্প্রদায়ের লোকেরা ও স্থানীয়রা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এ এলাকার অর্থনীতির চালিকাশক্তি কৃষি। কৃষিনির্ভর কুড়াগাছা, অরনখোলা, শোলাকুড়ি, ফুলবাগচালাসহ ৪টি ইউনিয়নের ৩০-৩৫টি গ্রামের কৃষক তাদের কৃষি ফসল নিয়ে বিপাকে রয়েছে। কাঁচামাল পরিবহন করতে গুনতে হচ্ছে দিগুণ ভাড়া। এ এলাকার আদিবাসীদের দাবি সড়কটি পাকাকরণের।
সরজমিনে ধরাটি ও কোনাবাড়ী গ্রামে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রসুলপুর থেকে দোখলা হয়ে চাঁনপুর সড়কটি পাকিস্তান আমল থেকে ধনবাড়ী উপজেলার সঙ্গে সংযোগ হয়েছে।
এ সড়কটি শোলাকুড়ি ও অরণখোলা ইউনিয়ন পরে ইউনিয়ন ভাগের ফলে কুড়াগাছা ও ফুলবাগচালা ইউনিয়নের সীমান্ত সড়ক থাকার কারণে কোনো ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সড়কটির কোনো গুরুত্ব দেননি। ফলে যুগের পর যুগ ধরে অবহেলিত থাকার কারণে সড়কটি স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৭ বছর পরেও পাকার মুখ দেখেনি। সড়কটি দিয়ে কুড়াগাছা, অরনখোলা, শোলাকুড়ি ও ফুলবাগচালা ইউনিয়ন ও ধনবাড়ী উপজেলার হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে থাকে। সড়কটি আদিবাসী ও এ এলাকার কৃষকদের জন্য খুবই গুরেুত্বপূর্ণ। এ সড়ক দিয়ে আনারস, কলা, আদা, হলুদ, পেঁপে, কচুসহ নানা কৃষি ফসল বাজারে নিয়ে যেতে হয়। রাস্তা কাঁচা থাকার কারণে চলাচলে পোহাতে হয় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। বর্ষাকালে দুর্ভোগের মাত্রা আরোও বেড়ে যায়। কাদা জলে একাকার হয়ে পড়ে সড়কটি। কৃষিপণ্য পানির দামে বিক্রি করতে হয়। না হয় কয়েক গুণ ভাড়া বেশি দিয়ে কাঁচামাল বাজারে নিতে হয়। এজন্য কৃষি ক্ষেত্রে এ এলাকার কৃষকরা নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে কৃষি ফসল উৎপাদন করেও ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়। কাউচির বাজার থেকে কোনাবাড়ী অংশের অবস্থা করুণ।
ধরাটি গ্রামের আদিবাসী নিকেন মৃ জানায়, বর্ষাকালে তাদের হাটবাজারে যেতে ও যাতায়াত করতে সীমাহীন কষ্ট করতে হয়। এ গ্রামের ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয়ে যেতেও সমস্যা হয়। এ এলাকাটি কৃষি এলাকা। এ গ্রামের সিংহভাগ মানুষ আনারস কলাসহ নানা কৃষি ফসল উৎপাদন করে থাকে। রাস্তা খারাপ থাকার কারণে বাজারজাত করতে তাদের সমস্যা হয়। খরচও বেড়ে যায় কয়েক গুণ। বর্ষাকালে তাদের অনেকেই ভোট দিতে যেতে পারেন না। এই গ্রামের ইউপি সদস্য নাজিরুল ইসলাম রোমান ও অর্চনা নকরেক জানান, দ্রুত সড়কটি পাকাকরণের দাবি জানিয়ে বলেন, বর্ষাকাল এলে তাদের দুঃখ-দুর্দশা প্রকট আকার ধারণ করে। কুড়াগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল হক সরকার জানান, পাকিস্তান সময় থেকে সড়কটি অবহেলিত। দুই ইউনিয়নের সীমানা সড়ক হওয়ার কারণে কেউ গুরুত্ব দেয়না।