× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আমীর খসরু কারাগারে

শেষের পাতা

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
২২ অক্টোবর ২০১৮, সোমবার

নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে উস্কানির অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ (২) ধারায় দায়ের হওয়া মামলায় জামিন শুনানি শেষে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধা এজলাস ছেড়ে খাস কামরায় গিয়ে স্টেনোগ্রাফারের মাধ্যমে এই আদেশ দেন। এরপর এজলাস কক্ষে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকে বেরিয়ে বিক্ষোভ করার সময় বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে আইনজীবীদের হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর আইনজীবী মফিজুল হক ভূঁইয়া এ সময় বলেন, এ আদেশ সম্পূর্ণ সরকারপক্ষীয়। এতে আমীর খসরুর কোনো দোষ নেই। এই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে। ইনশাআল্লাহ তিনি জামিনে মুক্তি পাবেন।
তিনি জানান, নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হওয়া একটি অডিও কথোপকথনের ভিত্তিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের আওতায় চট্টগ্রাম মহানগর কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া এই মামলায় গত ২৭শে আগস্ট আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করে ৬ সপ্তাহের জামিন পান। হাইকোর্ট শর্ত দিয়েছিল মেয়াদের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
এই আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করেন। ১লা অক্টোবর আপিল বিভাগ সেটা খারিজ করে জামিন আদেশ বহাল রাখেন।

ছয় সপ্তাহের জামিনের মেয়াদ শেষে গত ৭ই অক্টোবর আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। আদালত ২০শে অক্টোবর পর্যন্ত জামিনের মেয়াদ বাড়িয়ে ২১শে অক্টোবর পূর্ণাঙ্গ শুনানির আদেশ দেন। আর শুনানি শেষে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
তিনি জানান, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক সঞ্জয় গুহ ফাঁস হওয়া আমীর খসরুর কথোপকথনের অডিও রেকর্ড শুনানির সময় উপস্থাপন করেন। আদালত প্রথমে তদন্তকারী কর্মকর্তার মোবাইলে রেকর্ডটি শোনেন। পরে লাউড সিপকারে সেটি শোনানো হয়। এ সময় কথোপকথনের কোথাও সরকার উৎখাত বা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কোনো উপাদান নেই বলে দাবি করেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর আইনজীবীরা।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, আসামিপক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্যে আমীর খসরুর কথোপকথন এবং নির্দেশনার বিষয়টি পরিষ্কার। দু’পক্ষের আইনজীবীদের এই বক্তব্যের পর জজ সাহেব খাস কামরায় চলে যান। পরে স্টেনোগ্রাফার এসে জামিন নামঞ্জুর করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশের কথা বলেন।
আদালত সূত্র জানায়, আদেশের পর এজলাস কক্ষে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। হট্টগোলের মধ্যে বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি হয়। দুপুর সোয়া ২টার দিকে কড়া পুলিশ প্রহরায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে প্রিজন ভ্যানে করে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। আদেশের সময় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ও সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ানও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ৪ঠা আগস্ট বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় মামলাটি দায়ের করেন চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সমপাদক জাকারিয়া দস্তগীর।
মামলায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাত ও ষড়যন্ত্রের চেষ্টার অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ (২) ধারা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫/৩ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

গত ২৯শে জুলাই দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের অদূরে বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজীব নিহত হয়। এ ঘটনার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের মধ্যে কুমিল্লায় অবস্থানরত নওমী নামে এক ছাত্রদলের কর্মীর সঙ্গে কথোপকথনের অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়। ওই কথোপকথন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বলে দাবি উঠে। কথোপকথনে ছাত্রদল কর্মী নওমীকে ঢাকায় এসে লোকজন নিয়ে নেমে পড়তে বলা হয়।

মামলার বাদী জাকারিয়া দস্তগীর দাবি করেন, আমীর খসরুর উস্কানির জেরে নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তার কথার জেরেই ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা হয়।
এদিকে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর জামিন আবেদনকে ঘিরে আদালত এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ। গতকাল সকাল থেকে আদালত ও নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয় বলে জানান নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. কামরুজ্জামান।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর