ঐক্যফ্রন্ট নেতারা সিলেটে সমাবেশকে কেন্দ্র করে নাটক করছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব দলকে সমাবেশ করার অনুমতির নির্দেশ দিলেও পুলিশ কেন ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সিলেট সফরের অনুমতি দিচ্ছে না? এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, অনুম?তি নিয়ে নাটক করা তাদের পুরনো অভ্যাস। এর আগেও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঠিকই সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছিল। কিন্তু এটা নিয়ে নাটক করতে দ্বিধা করে নি। অনুমতির ইঙ্গিত পুলিশ তাদের অলরেডি দিয়েছে। পুলিশ একটু খতিয়ে দেখছে। এখানে বড় বড় নেতারা যাবেন, তাদের নিরাপত্তা বিষয় রয়েছে। তারা অনুমতির ইঙ্গিত পেয়েছে।
অফিসিয়াল চিঠি হাতে পাওয়ার আগে অহেতুক নাটক করবে- এটা তাদের পুরনো অভ্যাস।
গতকাল রাজধানীতে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ‘বিজয় ৭১’ হলে ‘কার্যকর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা: দেশের সার্বিক উন্নয়নের অনুঘটক’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশন বিভক্ত- মির্জা ফখরুলের এমন অভি?যোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, কমিশনের ভেতর মতামতের বিষয়টি গোপনীয়। এটা তা?দের মধ্যে থাকতেই পারে। এটাইতো গণতন্ত্রের বিউটি। নির্বাচন কমিশন বিভক্ত বিষয়টি হাস্যকর।
অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের তার বক্তব্যে বলেন, সড়কে ৯০ ভাগ দুর্নীতি কমাতে সক্ষম হয়েছি। তারপরও অনেক সময় সড়ক বানানোর তিন মাসের মধ্যে এক পশলা বৃষ্টিতে রাস্তা নষ্ট হয়ে যায়। এসব ক্ষেত্রে চুরি-চামারি যে হচ্ছে না তা না।
চুরি-চামারি কমানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনি যেদিকে যাবেন বাংলাদেশে বিপুল কর্মযজ্ঞ দেখবেন। আমরা ভালো করছি। আমাদের দেশে পলিটিক্স যদি সঠিক হয়। পলিটিশিয়ানরা যদি রাইট থাকে তবে সব সেক্টর ঠিক হয়ে যাবে। ভিআইপি’রা আইন না মেনে উল্টো পথে চললে যানজট তো হবেই। মূল সমস্যা ইঞ্জিনিয়ারিং না। মূল সমস্যা আমাদের মন-মানসিকতায়। আমরা আইন মেনে চলছি না। রাস্তা পাড় হওয়ার সময় কানে মোবাইল ফোন লাগিয়ে মধুর মধুর কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হচ্ছি।
কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে শিক্ষার্থীদের রাস্তায় নেমে অবরোধ করার প্রসঙ্গে বলেন, দুর্ঘটনার জন্য দায়ী একটি গাড়ি, একজন চালক। দোষ চালকের হতে পারে, দোষ হতে পারে পথচারীরও। এই জন্য রাস্তা অবরোধ করলে লাখ লাখ মানুষ কষ্ট পায়। অনেক সময় দেখা যায় শিক্ষার্থীদের চাপে বিআরটিসি বাস রং সাইট দিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
তিনি বলেন, রাজধানীতে চলে মলিন চেহারার বাস। বাসগুলো দেখলে আমাদের লজ্জা হয়। আধুনিক গাড়ির পাশাপাশি ছালবাকলহীন মুড়ির টিনের মতো গাড়ি। এগুলো বন্ধের প্রাণপণ চেষ্টা করেছি। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। তিনি আরো বলেন, আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে একাদশ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। অল্প কয়েকদিনের মধ্যে ছোট আকারের মন্ত্রিসভা ঘোষণা করা হবে।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান সবুর খান অনুষ্ঠানের শুরুতে রাজধানীতে যানজট নিরসনের বিভিন্ন পন্থার উল্লেখ করেন। তার প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ছোট আকারের মন্ত্রিসভা মেজর কোনো পলিসি গ্রহণ করতে পারবে না। আমাকে প্রপোজালটা পাঠিয়ে দেবেন। পরবর্তীতে যদি মন্ত্রী থাকি অবশ্যই চেষ্টা করব।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথরিটির (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক অতিরিক্ত সচিব খন্দকার রাকিবুর রহমান, ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভিসি প্রফেসর ড. ইউসুফ এম ইসলাম, প্রোভিসি প্রফেসর ড. এসএম মাহবুব-উল হক মজুমদার, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষক পরিবহন বিশেষজ্ঞ শামসুল হক প্রমুখ।