× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কমলগঞ্জে পলো বাওয়া উৎসব উদযাপিত

বাংলারজমিন

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
২৪ অক্টোবর ২০১৮, বুধবার

‘নদী হাওর আর ধান এই তিনে মৌলভীবাজারের প্রাণ’। কমলগঞ্জ উপজেলার একটি নদীকে কেন্দ্র করে শত বছরেরও বেশি সময় ধরে পালিত হয়ে আসছে গ্রাম বাংলার প্রায় হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী মাছ ধরা উৎসব। পুরোদমে শুষ্ক মৌসুম শুরু না হলেও কমলগঞ্জ উপজেলার বুক দিয়ে প্রবাহিত ধলাই নদীসহ বিভিন্ন এলাকার প্রবহমান ছোট ছোট ছড়া বিলসহ বিভিন্ন জলাশয়ে শুরু হয়েছে পলো বাওয়া উৎসব। প্রতি বছর এই সময়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সৌখিন মৎস্য শিকারিরা দল বেঁধে উৎসবমুখর পরিবেশে পলো বাওয়ায় অংগ্রহণ করে। পলো বাওয়া উৎসব হলো  দল বেঁধে মাছ ধরা। সোমবার বেলা ১১টার দিকে কমলগঞ্জের ধলাই নদীতে ঐতিহ্যবাহী এ পলো দিয়ে মাছ ধরার উৎসব উদযাপিত হয়। এতে কমলগঞ্জ পৌর এলাকার দক্ষিণ কুমড়াকাপন, আলেপুর, চন্ডিপুর, কুমড়াকাপন গ্রামসহ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রায় তিন শতাধিক মানুষ অংশ নিয়ে অল্প পানিতে মাছ শিকারের উৎসবে সবাই মেতে উঠেন। ধলাই নদীতে বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে দল বেঁধে মাছ ধরার দৃশ্য দেখার মতো।
বিশেষকরে পলো, উড়াল জাল, পেলেন জাল এসব দিয়েই শিকার করা হয় মাছ। দলবদ্ধভাবে মাছ শিকারের এ দৃশ্য দেখতে নদীর দুই তীরে ভিড় জমান উৎসুক মানুষজন। উৎসবে অংশ নেয়া মানুষদের উৎসাহ দিতে হাততালি কিংবা জোরে জোরে চিৎকার করে উৎসাহ প্রদান করেন নদীর তীরে অবস্থানরত লোকজন। নদীতে বড়দের পাশাপাশি ছোট ছেলেমেয়েরাও যে যার মতো করে মাছ ধরতে সহযোগিতা করছে।
মাথা ও কোমরে আটসাঁট করে গামছা বেঁধে অনেকটা আনন্দ নিয়েই মাছ ধরতে দেখা যায়। সকাল থেকে শুরু হওয়া মাছ ধরার এ উৎসব চলে বিকাল পর্যন্ত। নদীতে ৩০-৪০ জনের একটি দল একদিকে জাল নিয়ে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। আর অপরপ্রান্ত থেকে ৪০-৫০ জনের সারিবদ্ধ দল পলো চাপিয়ে মাছ ধরতে সামনের দিকে এগিয়ে আসেন। আলাপকালে আলেপুর গ্রামের মাছ শিকারি নূর মিয়া বলেন, বছরের এই দিনটার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি। সবাই মিলে একসঙ্গে মাছ ধরার আনন্দটাই আলাদা। এক কেজি ওজনের একটি গাগট মাছ ধরেছেন তিনি। তাতেই তিনি বেশি আনন্দিত যে তার সঙ্গে কথা বলেই বুঝা গেল। প্রবীণ মাছ শিকারি মো. ইসমাইল মিয়া জানান, দিন দিনই পরিবেশ ও আবহাওয়ার প্রতিকূলতার কারণে নদী-নালা, খাল-বিল, হাওরের তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ার কারনে পানি হ্রাস এবং অধিকাংশ জলাশয় ইজারা দেওয়ায় বাওয়া উৎসব এখন অনেকটাই ভাটা পড়েছে। অভাব অনটন ক্রমশ গ্রাস করে ফেলছে চিরাচরিত এই গ্রামীণ উৎসবের অতীত ঐতিহ্যকে। তারপরও বছরের এই একটা দিনে সবাই মিলিত হয়েই অতীতের ন্যায় মাছ ধরার উৎসব পালন করছি। তিনি প্রাচীন এই উৎসবকে টিকিয়ে রাখতে সর্বমহলের উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানান।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর