সদর ইউনিয়নে অধিগ্রহণকৃত জমিতে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার ময়লার ভাগাড় স্থাপনা নিয়ে তিন গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে ফের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের জেটি রোডের হাওরসংলগ্ন এলাকায় ময়লার ভাগাড় নির্মাণ না করতে দক্ষিণ ভাড়াউড়া, উত্তর ভাড়াউড়া ও পশ্চিম ভাড়াউড়া গ্রামের প্রায় কয়েক শতাধিক লোক মতবিনিময় সভায় প্রতিবাদমুখী হয়ে উঠেছেন। সভায় বক্তারা বলেছেন, ‘জীবন দেব তবুও বসত বাড়ির ভিতরে ময়লা ফেলতে দেওয়া হবে না’। শহরের খালেদ কমিউনিটি সেন্টারে রোববার রাতে এলাকার স্থানীয় মুরব্বি গৌতম দেবনাথ সভাপতিত্বে ও ফয়েজ উদ্দিনের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন মো. আছাদ মিয়া, এম এ রহিম নোমানী, মো. আজিজ মিয়া, মো. সেলিম মিয়া, সুজিত চক্রবর্তী প্রমুখ। স্থানীয় চেয়ারম্যান ভানুলাল রায়ের উপস্থিতিতে এই মতবিনিময় সভায় এলাকার বাসিন্দা মো. আছাদ মিয়া বলেন জীবন দিয়ে দেব তবুও মানুষের বসত বাড়ির ভিতরে ময়লা ফেলতে দেওয়া হবে না। যেই আসুক কাজ করতে দেওয়া হবে না। এম এ রহিম নোমানী বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের টাকায় গেট নির্মাণ করা হয়েছে। সেই গেট ভাঙা হবে সেটা আমরা দেখে নিবো।
এসব বক্তব্যে উপস্থিত জনতা করতালি দিয়ে সমর্থন জানায়। মো. সেলিম মিয়া বলেন, শ্রীমঙ্গল পৌরসভার জন্য যে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে সেখানে ময়লা ফেলার উপযুক্ত জায়গা নয়। এখানে লোকজনের বসতি আছে। আছে হিন্দুদের দুটি তীর্থস্থান, একটি মসজিদ। এখানে ময়লা ফেলা যাবে না। আমাদের সকলের প্রশ্ন কেন এই জায়গা ময়লার ফেলার জন্য অধিগ্রহণ করা হলো। আমাদের দাবি পৌরসভার ময়লা ফেলার ভাগাড়ের স্থান পরিবর্তন করুন। পাহাড়ি এলাকায় অনেক খাসজমি আছে সেখানে তা করা হোক। নতবা গ্রামের কৃষক শ্রমিক মেহনতী মানুষ এর দাঁতভাঙ্গা জবাব দেবে। সুজিত চক্রবর্তী বলেন, জেটি রোডে ময়লা ফেলার জন্য শ্রীমঙ্গল পৌরসভা যে জায়গাটি অধিগ্রহণ করা হয়েছে তাতে আমারও জায়গা আছে, কিন্তু আমি জায়গা দিতে রাজি নই, এক প্রকার জোর করেই আমার জায়গা নেওয়ার চেষ্টা চলছে।
সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে যেকোনো উপায়ে জেটি রোডে ময়লার ডিপোতে ময়লা ফেলতে দেওয়া হবে না। এবং এরই পরিপ্রেক্ষিতে একটি প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ ব্যাপারে একটি কমিটি করা হবে এবং সমাবেশের তারিখ ঘোষণা করা হবে। বর্তমানে যদি কেউ কাজ করতে আসে তাহলে তা প্রতিহত করা হবে।
উল্লেখ্য, কলেজ সড়কে তিনটি প্রতিষ্ঠানের সামনে পৌরসভার ময়লার ভাগাড় ফেলা বন্ধের দাবিতে সম্প্রতি কয়েকহাজার শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী আন্দোলনে নামেন। এর পর মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কলেজ রোডের ময়লার ভাগাড় নিয়ে আন্দোলনকারীদের সাথে এক বৈঠকে জেলা প্রশাসক সিদ্ধান্ত দেন বর্তমান স্থানে আপাতত ময়লা ফেলতে এবং জেটি রোডে পৌরসভার অধিগ্রহণকৃত জমিতে অবকাঠামো ও স্থাপনা তৈরির পর সেখানে ময়লা ফেলতে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জেটি রোডের স্থানীয় এলাকাবাসী প্রতিবাদ সভা করে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি প্রদান করেন।