পাকিস্তানে রমজান সুগার মিলস মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএলএন) প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরীফকে। শনিবার তাকে গ্রেপ্তার করে জাতীয় জবাবদিহিতা বিষয়ক ব্যুরো (এনএবি)। তিনি পাকিস্তানের পার্লামেন্ট জাতীয় পরিষদে বিরোধী দলীয় নেতা। এর আগে আসিয়ানা হাউজিং স্কিম মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে এনএবির হেফাজতে রাখা হয়। এ ছাড়া তাকে রিমান্ডে দেয়া হয়। শুক্রবার তার রিমান্ড শেষে এনএবি কর্তৃপক্ষ শনিবার আদালতে উপস্থাপন করে। এ সময়ে তার রিমান্ডের মেয়াদ বাড়াতে বলা হয়। এনএবি কর্তৃপক্ষ তার ১৫ দিনের রিমান্ড দাবি করে আদালতের কাছে।
তাদের আবেদন অনুযায়ী আসিয়ানা হাউজিং স্কিম মামলায় আদালত শাহবাজ শরীফের রিমান্ড ১৪ দিনের জন্য মঞ্জুর করে।
অভিযোগ আছে, রমজান সুগার মিলে যাতায়াতের সুবিধার জন্য ৫০ কোটি রুপি ব্যায়ে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। অভিযোগ আছে, শাহবাজ শরীফ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় অবৈধভাবে ওই সেতুটি নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ মামলায় শাহবাজ শরীফকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে আদালতকে জানান এনএবির প্রসিকিউটর ওয়ারিস আলী জানজুয়া।
দু’দফা রিমান্ড শেষে শাহবাজ শরীফকে শনিবার আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় এনএবির লাহোর অফিসের কর্মকর্তারা তার সঙ্গে ছিলেন। দুর্নীতি বিরোধী এই প্রতিষ্ঠানটি এর আগে শাহবাজ শরীফের ছেলে সালমান ও হামজা শাহবাজকে তদন্তের জন্য তলব করেছিল। তারা ওই মিলের পরিচালক। তার মধ্যে আদালতে উপস্থিত হওয়ার পরিবর্তে বিদেশে চলে যান সালমান। অন্যদিকে মামলায় সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেন নি হামজা শরীফ।
শনিবার শাহবাজ শরীফকে আদালতে হাজির করার আগে আদালত প্রাঙ্গণের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। প্রবেশ পথগুলো বন্ধ করে দেয়া হয় কন্টেইনার রেখে। এ সময় আদালতে যেতে না পারায় পিএমএলএনের অনেক নেতাকর্মী পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করে পুলিশ।
আসিয়ানা হাউজিং স্কিম মামলায় গত মাসে আদালত শাহবাজ শরীফকে ৭ই নভেম্বর পর্যন্ত রিমান্ড দিয়েছিল। ওই হাউজিং স্কিমে বহু কোটি রুপি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এনএবি তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। শনিবার তাকে হাজির করা হয় এনএবি আদালতের বিচারক আনজুমুল হাসানের বেঞ্চে। সেখানে শুনানিকালে এনএবির প্রসিকিউটররা বলেন, আরো তদন্তের জন্য বিরোধী দলীয় এই নেতাকে আরো আটক রাখতে হবে তাদের। এ সময় শাহবাজ শরীফ বলেন, এনএবি কর্তৃপক্ষ তাকে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দিচ্ছে না। নিজের শারীরিক অবস্থা বর্ণনা করে তিনি বলেন, তিনি একজন ক্যান্সার রোগি। তিনি রক্ত পরীক্ষা ও অন্যান্য পরীক্ষার আবেদন করেছেন। কিন্তু এনএবি তাতে কান দিচ্ছে না।
শাহবাজ শরীফ লাহোরে তাকে গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে বলেন, তাকে পাঞ্জাব সাফ পানি কোম্পানি বিষয়ক মামলায় তদন্তের জন্য বক্তব্য রেকর্ড করতে গেলে তাকে আটক করা হয়। তার ভাষায় ‘আমাকে গ্রেপ্তার করার পর ২৫ দিন পাড় হয়েছে’।