যে বয়সে যাওয়ার কথা ছিল বিদ্যালয়ে, সে বয়সে জীবিকার তাগিদে অন্যের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতে হয়েছে সামসুন্নাহারকে। গত ৩০শে অক্টোবর দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর উপজেলার ভোয়ালদার গ্রামের কৃষক সামসুদ্দিন ও গৃহিণী হুসনেয়ারা দম্পতির একমাত্র মেয়ে সামসুন্নাহার একই এলাকার এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে কংক্রিটের ঢাকা শহরের ধানমন্ডির ৬নং এলাকার জয়নাল আবেদিনের বাসায় কাজ করতে আসে। কাজের প্রথম দিন থেকেই গৃহকর্ত্রীর নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাকে। সেই নির্যাতনের কথাই ফুটে উঠেছে সামসুন্নাহারের মুখে। সামসুন্নাহার জানায়, যেদিন সে প্রথম কাজে আসে সেদিন তার প্রতিবেশী এক খালা তাকে ঐ বাসার গৃহকর্ত্রীর নিকট তাকে হস্তান্তর করে ১০ হাজার টাকা নেন। যাবার সময় খালা তাকে আশ্বস্ত করেন তুই এখানে খুব ভালো থাকবি। কোনো চিন্তা করিস না। খালার কথায় প্রথমে সামসুন্নাহারের কচি মনে আনন্দের ঢেউ খেললেও পরক্ষণেই তা বিশাদে রূপ নেয়।
তার ওপর কারণে অকারণে চলতে থাকে নির্যাতন। কাজের ভুল ধরে নির্যাতন করতে থাকে গৃহকর্ত্রী। তাকে হুমকি দেয়া হয় নির্যাতনের কথা কাউকে জানালে তাকে চোর অপবাদ দিয়ে পুলিশে দেয়া হবে। নিরুপায় মেয়েটি সব নির্যাতন সহ্য করে কাজ করতে থাকেন। গত বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে গৃহকর্তা জয়নাল আবেদিন সপরিবারে ঢাকার দোহারের সাতভিটা তার নিজ গ্রামে বেড়াতে আসে। সঙ্গে নিয়ে আসেন গৃহপরিচারিকা সামসুন্নাহারকে। ঐদিন সন্ধ্যায় সুযোগ বুঝে মেয়েটি জয়নাল আবেদিনের বাসা থেকে পালিয়ে উপজেলার নয়াবাড়িতে আসে। দোহার থানা ওসি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ঘটনাটি শুনে ওর পরিবারকে আমরা খবর দিয়ে মেয়েটিকে তাদের হাতে তুলে দিয়েছি।