× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মনিরুল হক চৌধুরী অসুস্থ, জামিন মেলেনি

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
১৫ নভেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার

হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পরও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমন্বয়ক কারাবন্দি মনিরুল হক চৌধুরীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে পুরোনো দুই গায়েবি মামলায়। যে মামলায় তাকে জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল সে মামলায় জামিন হলেও নতুন করে গ্রেপ্তার দেখানোয় তিনি মুক্তি পাননি। সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়ার কারণে আগে থেকে অসুস্থ সাবেক এ এমপির শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে কারাগারে।

কিন্তু নতুন করে পুরোনো দুই মামলায় গ্রেপ্তারে দেখানোয় দীর্ঘায়িত হচ্ছে তার কারাবাস। চিকিৎসার স্বার্থে জামিনে মুক্তি দরকার মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এ নেতার। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২৪শে অক্টোবর তার জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের হস্তক্ষেপে হাইকোর্টে ডিএজি তিনবার সময় নিলেও ৪ঠা নভেম্বর তিনি জামিন পান। কিন্তু জামিনের কাগজপত্র কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় পৌঁছানোর পর পুরোনো দুইটি গায়েবি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সূত্র জানায়, মনিরুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে ওয়ান-ইলেভেনের আগ পর্যন্ত কখনো নাশকতা বা দুর্নীতির মামলা হয়নি। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের উদ্যোগে সে সময় তার বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজি মামলা ও একটি খারিজ হওয়া মামলায় পুনরায় অভিযোগপত্রে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
যা বাদীর মৃত্যুর কারণে স্থায়ীভাবে স্থগিত ও পরে খারিজ হয়ে যায়। স্থানীয় বিএনপি সূত্র জানায়, মনিরুল হক চৌধুরী বিএনপি চেয়ারপারসনের একজন উপদেষ্টা। জেলা রাজনীতির সঙ্গে তিনি অতটা জড়িত নন।

কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের উদ্যোগে ২০১৫ সালের এক ঘটনার দুই বছর পর সম্পূরক চার্জশিটে আসামির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয় তার নাম। এ মামলায় তিনি হাইকোর্ট থেকে জামিনে রয়েছেন। পরে ওই মামলায় নিম্ন আদালতে হাজিরা দিতে কুমিল্লা যাবার পথে নিমসারে এক সড়ক দুর্ঘটনায় পড়েন। প্রাণ বাঁচলেও তার বামহাতটি ভেঙে তিন টুকরো হয়ে যায়। তার আইনজীবী সূত্র জানায়, হাইকোর্ট এবং নিম্ন আদালত দুই জায়গায় বিচারক এ ঘটনায় মনিরুল হক চৌধুরীর সংশ্লিষ্টতার তথ্যপ্রমাণ চাইলেও পুলিশ সেটা উপস্থাপন করতে পারেনি। সূত্র জানায়, নতুন করে যে দুই মামলায় মনিরুল হক চৌধুরীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে তার একটি মামলায় দেখানো ঘটনার সময় তিনি পিতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গ্রামের বাড়িতে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছিলেন। সে মাহফিলে আসার সময় তার অনুসারি ২০ নেতাকর্মীকে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে সবাই হাইকোর্ট থেকে জামিন পান। আর অন্য মামলাটিতে যে ঘটনার অভিযোগ দেখানো হয়েছে সে ঘটনাই ঘটেনি।

এদিকে গতকাল কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ৯ নং আমলী আদালত মনিরুল হক চৌধুরীর জামিন ও পুলিশের দাখিল করা রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। একইসঙ্গে আদালত একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য পুলিশের দাখিল করা আবেদন মঞ্জুর করেছেন। মনিরুল হক চৌধুরীর পক্ষের আইনজীবী অ্যাড. কাজী নাজমুস সা’দাত জানান, আদালত একটি মামলায় আমাদের দাখিলকৃত তার জামিনের আবেদন ও পুলিশের রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করেছেন এবং অপর মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য পুলিশের আবেদনটি মঞ্জুর করেছেন। তিনি বলেন, এসব মামলার এজাহারে মনিরুল হক চৌধুরীর নাম নেই। তিনি আসন্ন সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৬ (সদর) ও কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট, সদর দক্ষিণ ও লালমাই) আসন থেকে বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী এবং উভয় আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার লক্ষ্যে তার পক্ষে গত মঙ্গলবার দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। বিষয়টি বিজ্ঞ আদালতকে অবহিত করা হয়েছে। সহসাই উচ্চ আদালতে আমরা তার জামিন চাইব।

মনিরুল হক চৌধুরীর পারিবারিক সূত্র জানায়, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর দেশে-বিদেশে চিকিৎসা নিলেও তিনি সুস্থ হননি। এ ছাড়া আর্থাইটিজের ব্যথার কারণে তার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। তার হার্টের সমস্যা রয়েছে। চিকিৎসকরা তাকে ওপেন হার্ট সার্জারির পরামর্শ দিলেও সড়ক দুর্ঘটনায় হাত ভেঙ্গে যাওয়ায় সেটা করতে পারেননি। এখন কারাগারে থাকার কারণে আরো বিলম্ব হচ্ছে। বর্তমানে তিনি তার বামহাত ব্যবহার করতে পারেন না। কারাগারে তাকে পরনের লুঙ্গিটিও সেবকদের পরিয়ে দিতে হয়। ফলে চিকিৎসার স্বার্থে তার জামিনে মুক্তি প্রয়োজন। অন্যথায় যে কোনো সময় তার শারীরিক পরিস্থিতির চরম অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর