শীত এখনো জেঁকে বসেনি। কিন্তু শীতের কাপড়ের পসরা সাজিয়ে বসে আছে ‘গাইড’ মার্কেটের বিক্রেতারা। বলছি, রাজধানীর সদরঘাটের সাইকেল মাঠ সংলগ্ন কমিশনার মার্কেটের কথা। স্থানীয়রা এই মার্কেটকে গাইড মার্কেট হিসেবেই চিনেন। ঢাকা নৌ বন্দরের ঠিক পাশেই এই মার্কেটটির অবস্থান।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, এই অস্থায়ী মার্কেটের ৯০ শতাংশ শীতের কাপড় বাইরের দেশ থেকে আমদানি করা। জাপান, কোরিয়া এবং তাইওয়ান থেকে এইসব কাপড় আমদানি করা হয়। কিন্তু এই কাপড়গুলো হচ্ছে পুরনো। বিদেশিরা একবার পরেই অনেক কাপড় ফেলে দেন।
আর সেগুলোই আমদানি করা হয়। তবে কাপড়গুলো থাকে ফ্রেশ এবং ভালো। সে হিসেবে এ মার্কেটের কাপড়ের দাম তুলনামূলকভাবে খুবই কম। শীতের কাপড়গুলোকে বাক্স আকারের প্যাকে ভর্তি করা হয়। আর এই বাক্সগুলোই ‘গাইড’ নামে পরিচিত। এই গাইডগুলোই আমদানি করে আনেন বড় ব্যবসায়ীরা। তারপর চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে গাইড কিনে আনে এই মার্কেটের বিক্রেতারা।
একেক গাইডে একেক ধরনের শীতের কাপড় থাকে। গাইডগুলো পরিচিত করা হয়ে থাকে বিভিন্ন প্রতীক দিয়ে। যেমন, কোনোটা দোয়েল কিংবা কোনটা ঘোড়া। জ্যাকেট, সোয়েটার, ট্রাউজার এমনকি লংকোর্টও মিলে এই অস্থায়ী মার্কেটে। নারী-পুরুষের পাশাপাশি বাচ্চাদের পোশাকও মিলে এখানে।
মো. ইলিয়াস (২৪), এই মার্কেটের একজন বিক্রেতা। কীভাবে এসব কাপড় সংগ্রহ করেন তা জানতে চাইলে তিনি বলেন। চট্টগ্রাম থেকে একবারে অনেক মাল নিয়া আসি। এইবার ৫ লাখ টাকার মাল আনছি। পোলা মাইয়াগো কাপড়ের লগে বাচ্চাগো মালও আনছি। এখনো তেমন শীত পড়ে নাই, তাই বেচাকেনা তেমন নেই। তবে শীত পড়লে বেচাকেনা বাড়বো।
এই কমিশনার কার্যালয় মার্কেটে অস্থায়ীভাবে বসেছে প্রায় দেড়শ’ থেকে দুশ’টি দোকান। এসব দোকানির একটা বড় অংশই হচ্ছে মৌসুমি শীতের কাপড় ব্যবসায়ী। শীত মৌসুমের দুই তিন মাস তারা এই ব্যবসা করেন। শীত মৌসুম চলে গেলে তারা অন্য ব্যবসা করে নিজেদের জীবিকা অর্জন করেন। এই মার্কেটের একদম পাশেই সদরঘাট নৌ বন্দর। গ্রাম থেকে আসা অনেক মানুষের কাছেই এই মার্কেট বেশ জনপ্রিয়। শহরের তুলনায় গ্রামে আগেভাগে শীত পড়ার কারণে অনেকে এখান থেকে আগেই শীতের পোশাক নিয়ে যান।