× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

৩৫ লাখ শ্রমিকের ডেটাবেস তৈরি করে বিজিএমইএ’র রেকর্ড

এক্সক্লুসিভ

এম এম মাসুদ
১৭ নভেম্বর ২০১৮, শনিবার

গত তিন বছরে আড়াই হাজার পোশাক কারখানার শ্রমিকের তথ্যভাণ্ডার বা ডেটাবেইজ তৈরির রেকর্ড গড়েছে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। বায়োমেট্রিকের মাধ্যমে শ্রমিকদের ডেটাবেইজ তৈরির জন্য আন্তর্জাতিক এসোসিও অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছে বিজিএমইএ। এসব কারখানায় শ্রমিক সংখ্যা ৩৫ লাখের বেশি। শ্রমিকের আঙুলের ছাপের মাধ্যমে স্থায়ী এবং বর্তমান ঠিকানা, বয়স, অভিজ্ঞতাসহ পরিপূর্ণ কর্মজীবনের বিস্তারিত তথ্য রয়েছে এই তথ্যভাণ্ডারে। একইসঙ্গে বিজিএমইএতে নিবন্ধিত এবং নিবন্ধনহীন কারখানা, কারখানা মালিকের নাম-ঠিকানাসহ বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। এছাড়া মাঝে মাঝে বিভিন্ন এলাকার পোশাক কারখানায় শ্রম অসন্তোষ হয়। এর সঙ্গে কারা জড়িত, এই তথ্যভাণ্ডারের মাধ্যমে এ বিষয়ে তথ্য পাওয়া যাবে।

সূত্র জানায়, ‘বায়োমেট্রিক আইডেন্টিটি অ্যান্ড ওয়ার্কার ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ওয়ার্কার ডেটাবেইজ)’ ব্যবহারের জন্য এসোসিও কর্তৃক এ বছরের শ্রেষ্ঠ ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানের পুরস্কার পেয়েছে বিজিএমইএ। এশিয়া এবং ওশেনিয়া অঞ্চলের ২৪টি ইকোনমি দেশ নিয়ে এশিয়ান-ওশেনিয়া কম্পিউটিং ইন্ডাস্ট্রি অর্গানাইজেশন (এসোসিও) গঠিত।
প্রতিবছর ২৪টি দেশ হতে মনোনীত শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান ও প্রজেক্টকে চারটি ক্যাটেগরিতে এসোসিও এই বিরল সম্মাননা দেয়া হয়ে থাকে। সমপ্রতি জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত ‘এসোসিও ডিজিটাল মাস্টার্স সামিট ২০১৮’-এ আন্তর্জাতিক এই সম্মাননা বিজিএমইএ-র হাতে তুলে দেন এসোসিও’র চেয়ারম্যান ডেভিড ওয়াং। বিজিএমইএ’র পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, বিজিএমইএ সহ-সভাপতি (অর্থ) মোহাম্মদ নাসির এবং সফটওয়্যার প্রস্তুত ও রক্ষণাবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সিসটেক ডিজিটাল লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী এম রাশিদুল হাসান।

তৈরি পোশাক শিল্পের উত্তর-উত্তর প্রবৃদ্ধি, মালিক ও শ্রমিকদের বিভিন্ন সুবিধা প্রদান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০১৩ সালে বিজিএমইএ’র উদ্যোগে ‘বায়োমেট্রিক আইডেন্টিটি অ্যান্ড ওয়ার্কার ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ওয়ার্কার ডেটাবেইজ)’ সফটওয়্যারটি সারা দেশে ব্যবহার করা হয়। এই সফটওয়্যার সিস্টেমের মাধ্যমে কারখানার সব শ্রমিকের বায়োমেট্রিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ছবি, চাকরি ও অন্য সব তথ্য স্থানীয় ও ক্লাউড সার্ভার  ডেটাবেইজে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যা পরে অন্য সব কারখানার শ্রমিকের সঙ্গে সব ধরনের শনাক্ত ও নিশ্চিতকরণ করা যায়। এ ছাড়া সার্ভিস বুক, ইন্স্যুরেন্স, ইউডি, ক্যাশ ইনসেন্টিভ ও অন্যান্য কাজের জন্য এই তথ্য ভাণ্ডার তৈরি পোশাক শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এক-ক্লিকেই সব ধরনের তথ্য সরবরাহ করে থাকে। বর্তমানে সারা দেশে বিজিএমইএ’র ২৫০০ অধিক কারখানায় ৩৫ লাখের অধিক শ্রমিকের জন্য এই সফটওয়্যার প্রতিদিন ব্যবহার হয়ে থাকে। বিশ্বে তথা দক্ষিণ এশিয়ায় অনন্য এই সফটওয়্যার সিস্টেমটির কারিগরি সহায়তা, উন্নয়ন, স্থাপন, প্রশিক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করেছে আমাদের দেশীয় প্রতিষ্ঠান 
 টাইগার আইটি বাংলাদেশ ও সিসটেক ডিজিটাল লিমিটেড।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে জিএসপি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জন্য সে দেশের বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয় (ইউএসটিআর) থেকে যে ১৬টি শর্ত দেয়া হয়েছিল, তার একটি হলো স্বচ্ছ তথ্যভাণ্ডার।
জানা গেছে, এখনো অনেক শ্রমিক তথ্যভাণ্ডারের বাইরে রয়ে গেছে। এ ছাড়া অনেক কারখানার শ্রমিকের তথ্য জমা হয়নি তথ্যভাণ্ডারে। বাকি কারখানার তথ্য দ্রুততম সময়ে জমা দেয়ার জন্য সদস্যদের সম্প্রতি চিঠি দিয়ে তাগিদ দিয়েছে বিজিএমইএ। শ্রম আইনের বিধিমালায় শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে রপ্তানি চালানের বিপরীতে শূন্য দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ হারে কেটে রাখা অর্থ কেন্দ্রীয় তহবিলে জমা হয়। সরকারি উদ্যোগে গঠিত এই তহবিল থেকে শ্রমিকদের কেন্দ্রীয়ভাবে বীমাসহ অন্যান্য কল্যাণমূলক উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এজন্য কারখানাভিত্তিক শ্রমিকের প্রকৃত তথ্য জানা জরুরি। অন্যদিকে আঙুলের ছাপসহ শ্রমিকের তথ্যভাণ্ডার না থাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা হলে শ্রমিকদের শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। এতে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা এবং ক্ষতিপূরণ দিতে সমস্যা হয়।

রানা প্লাজা ধস এবং তাজরীন ফ্যাশনস কারখানার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির পেছনে স্বচ্ছ তথ্য না থাকার বিষয়টিকে দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রয়োজনে পোশাক খাতের সংশ্লিষ্ট তথ্যের প্রয়োজন হয়।

বিজিএমইএর সহ-সভাপতি এসএম মান্নান কচি বলেন, তথ্যভাণ্ডারের সুবিধা পাওয়া শুরু হয়েছে। বিশেষ করে নিয়োগের ক্ষেত্রে কর্মী মূল্যায়নে প্রয়োজনীয় সব তথ্য খুব সহজেই এখন পাচ্ছেন তারা। কোন শ্রমিক কোন কাজে দক্ষ, আগের বেতন কত পেতো, কিংবা কী কারণে শ্রমিকরা এক কারখানা ছেড়ে অন্য কারখানায় গেল- এসব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর