নিরলস প্রচেষ্টার পর খসড়া ব্রেক্সিট চুক্তি বৃটিশ মন্ত্রিসভা অনুমোদন করলেও এর ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ব্রেক্সিট বিরোধীদের তীব্র সমালোচনার মুখে চুক্তি বাস্তবায়নে রীতিমতো সংগ্রাম করছেন প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। এই সংগ্রাম শুধু চুক্তি বাস্তবায়নেরই না, এর সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ। বিশ্লেষকরা বলছেন, একটি সফল ব্রেক্সিট চুক্তি তেরেসা মে’কে বৃটেনের ইতিহাসে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেবে। কিন্তু তীব্র বিরোধিতার মুখে তিনি যদি চুক্তি বাস্তবায়নে ব্যর্থ হন, তাহলে বৃটেনের ইতিহাসের অন্যতম ব্যর্থ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তেরেসা মে’র নাম লেখা থাকবে।
বার্তা সংস্থা এএফপি’র খবরে বলা হয়েছে, খসড়া চুক্তির পক্ষে গতকাল দিনভর যুদ্ধ করেছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী। আগের দিন চেকার্সের খসড়া ব্রেক্সিট চুক্তির বিরোধিতা করে পদত্যাগ করেছেন মন্ত্রিসভার চার জন সদস্য। তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর খসড়া চুক্তিতে তাদের মন সায় দিচ্ছে না।
একই সঙ্গে তেরেসা মে’র বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তারই দল কনজারভেটিভ পার্টির উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য। তারা তেরেসা মে’কে বহিষ্কার করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। দল মত নির্বিশেষে পার্লামেন্টের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক করেছেন যে, পার্লামেন্টে চেকার্সের ব্রেক্সিট প্ল্যান পার্লামেন্টের অনুমোদন পাওয়ার কোনই সম্ভাবনা নেই। কিন্তু তেরেসা মে তার ব্রেক্সিট প্ল্যান বাস্তবায়ন করতে অনেকটাই মরিয়া হয়ে উঠেছেন। পার্লামেন্ট সদস্যদের এ সতর্কবার্তাও তিনি আমলে নিচ্ছেন না। এদিকে, চেকার্সের প্রস্তাবিত খসড়া ব্রেক্সিট চুক্তির বিরোধিতা করে পদত্যাগ করেছেন ব্রেক্সিট মন্ত্রী ডমিনিক রাব। পরে প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে তার জায়গায় পরিবেশ মন্ত্রী মাইকেল গোভেকে দায়িত্ব নেয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, মাইকেল গোভে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। এ বিষয়ে গতকাল এএফপি গোভের মন্তব্য জানতে চাইলেও তিনি এতে সাড়া দেননি। বলা হচ্ছে, তিনি চেকার্সের ব্রেক্সিট খসড়ার পরিবর্তে অন্য আরেকটি চুক্তি বাস্তবায়ন করতে চান। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মে এতে সম্মতি দেননি। এরই প্রেক্ষিতে তিনি ব্রেক্সিট মন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিনের দরকষাকষির পর ব্রেক্সিট নিয়ে অবশেষে মতৈক্যে পৌঁছেছে ইইউ’র সমঝোতাকারী দল ও বৃটিশ কর্তৃপক্ষ। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী যদি চূড়ান্তভাবে পার্লামেন্টের সমর্থন পেতে সক্ষম হন, তাহলে এ মাসের শেষের দিকে ইইউ’র সঙ্গে বৈঠকে বসার সম্ভাবনা রয়েছে। সেখানে চূড়ান্ত চুক্তির বিষয়ে আলোচনা হবে।