× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

বিষাক্ত পটকা মাছ খেয়ে চট্টগ্রামে দাদি-নাতনির মৃত্যু

দেশ বিদেশ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
১৭ নভেম্বর ২০১৮, শনিবার

মিরসরাইয়ে বাজার থেকে কুড়িয়ে আনা বিষাক্ত পটকা মাছ খেয়ে দাদি-নাতনির মৃত্যু হয়েছে। এতে গুরুতর অসুস্থ আরো ৭ জনকে বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। মারা যাওয়া দাদির নাম ফজিলা খাতুন (৬০) ও তার নাতনি নাম মরিয়ম (৩)। চিকিৎসাধীন হচ্ছেন- মরিয়মের বাবা শফিকুল ইসলাম (৩৫), মা বিলকিস (৩০), ভাই রাব্বি (১০) ও সাব্বির (৭) বোন ঝর্ণা (৮) ও আতিয়া (২), মরিয়মের মামা আমজাদ হোসেন (২৬)। অসুস্থরা জানান, মিরসরাই উপজেলার বারৈয়ারহাট পৌরসভার অধীনে পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে কাজ করেন মরিয়মের বাবা ও দুই মামা। তাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর। তারা বারৈয়ারহাট পৌরসভার চিনকি আস্তানা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
সংসারের আর্থিক কষ্টের কারণে শিশু মরিয়মের দাদি ফজিলা খাতুন প্রতিদিন বারৈয়ার হাট বাজারে পরিত্যক্ত মাছ কুড়াতে যান। বৃহসপতিবার সকালে তিনি পটকা মাছ কুড়িয়ে আনেন। রান্না করা পটকা মাছ দুপুরে খেয়ে একে একে অসুস্থ হয়ে পড়েন সবাই। মাছ খাওয়ার পর তারা বমি করতে শুরু করেন। গুরুতর অসুস্থ হয়ে দাদি ফজিলা খাতুন ও নাতনি মরিয়ম বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে ঘরেই মারা যান বলে জানান মরিয়মের মামা হোসেন মিয়া। তিনি জানান, দাদি-নাতনির মৃত্যুও পর আতঙ্কিত হয়ে অসুস্থ হওয়া পরিবারের ৭ সদস্যকে প্রথমে মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন। রাত ৯টার দিকে চমেক হাসপাতালে তাদের ভর্তি করা হয়।

চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম জানান, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৩ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে বিষাক্ত পটকা মাছ খাওয়া ৭ রোগী। ঘরে মৃত্যু হওয়ার কারণে দাদি-নাতনিকে হাসপাতালে আনা হয়নি। অসুস্থদের মধ্যে সবার অবস্থাই গুরুতর বলে জানিয়েছেন ডাক্তাররা।

চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক সারোয়ার সুমন বলেন, আমাদের মিঠা পানিতে ২ প্রকার পটকা আছে। তবে অধিকাংশই মিঠা পানির পটকার বিষ সামুদ্রিক পটকার বিষের চেয়ে অধিক ক্রিয়াশীল ও ক্ষতিকর। পটকা মাছের ডিম্বাশয়, চর্ম ও যকৃতে বিষের মাত্রা সর্বাধিক। বর্ষাকালে পটকা মাছ অধিকতর বিষাক্ত হয়। অধিক বিষধারণকৃত পটকা খেলে মৃত্যু হতে পারে।
সামুদ্রিক পটকা মাছের we-l TTX (Tetrodotoxin) নামে পরিচিত। মিঠা পানির পটকার বিষ paralytic shellfish poison (PSP) নামে পরিচিত। পটকা মাছে সারা বছর একই মাত্রায় বিষ থাকে না। পটকা মাছের বিষাক্ততা স্থান, সময় ও প্রজাতি ভেদে ভিন্নতর হয়।
অনেকের ধারণা পটকা মাছ রান্না করলে এর বিষ থাকে না। এটা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা। রান্নার পরও এদের বিষ থাকে। পটকা মাছ খেয়ে বিষে আক্রান্ত হলে প্রথমে মাথা ব্যথা, বমি বমি ভাব এবং ক্রমশ শরীর অবশ হতে থাকে। এরূপ উপসর্গ দেখা দিলে রোগীকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হবে। স্থান, সময় ও প্রজাতি ভেদে কোন পটকা কতটুকু বিষাক্ত এ বিষয়ে জনসাধারণের ধারণা থাকে না বলে মৃত্যু ঝুঁকি এড়াতে পটকা মাছ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলেন তিনি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর