× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সংখ্যালঘুদের স্বার্থবিরোধী কাজে জড়িতদের মনোনয়ন না দেয়ার দাবি

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
১৭ নভেম্বর ২০১৮, শনিবার

সারা দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আবহ তৈরি হলেও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী নির্বাচন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাসগুপ্ত। নির্বাচনের পর নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা নিপীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন না- এমন আশাবাদও ব্যক্ত করেছেন তিনি। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ঐক্য পরিষদের পক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।  

লিখিত বক্তব্যে রানা দাসগুপ্ত বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে সব রাজনৈতিক দল ও জোটের মিলিত উদ্যোগে উৎসবের আবহ তৈরি হলেও দেশের ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী শঙ্কা ও উদ্বেগ থেকে মুক্ত হতে পারছে না।’ তিনি বলেন, ‘নব্বই পরবর্তী ব্যতিক্রম বাদে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের যতগুলো নির্বাচন হয়েছে তা সংখ্যালঘু জনজীবনে আসে বিপর্যয় ও হাহাকার নিয়ে।’ সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে এই শঙ্কা ও উদ্বেগ থেকে মুক্ত করার দায়িত্ব সরকার, নির্বাচন কমিশন, সব রাজনৈতিক দল ও জোটকে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন রানা দাসগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘আমরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি অতীতে প্রায় প্রতিটি নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশন সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা রক্ষা করা হয়নি। তবে, আশা করি এবার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা হবে।’

নির্বাচনে ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতার ব্যবহার বন্ধসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়কে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে ইসির কাছে আহ্বান জানান তিনি। এ ছাড়া নির্বাচনকালীন সময়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখানোর জন্য ইসি, সরকার ও সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দল ও জোটকে এ বিষয়ে তাদের সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দেশবাসীর সামনে ব্যক্ত করার কথাও বলেন রানা দাসগুপ্ত।


যারা অতীতে জনপ্রতিনিধি হয়ে ও থেকে ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষাভাবে লিপ্ত ছিলেন বা আছেন এমন কাউকে মনোনয়ন না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে রানা  দাসগুপ্ত বলেন, ‘এমন কাউকে প্রার্থী করা হলে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় সংখ্যালঘুদের ভোট দেয়া সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।’ তিনি বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্যি বৃটিশ ও পাকিস্তান আমল থেকে এখন পর্যন্ত গণতন্ত্র, অগ্রগতি, প্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য এত আত্মত্যাগ সত্ত্বেও রাষ্ট্র ও রাজনীতি সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে আজ পর্যন্ত বিবেচনায় আনার প্রয়োজন মনে করেনি। কেউ আপদ, কেউবা বিপদ ভেবে তাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করতে দ্বিধা করেনি। জনগণনার দিক থেকে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও আদিবাসী সম্প্রদায় ‘সংখ্যালঘু’। কিন্তু রাষ্ট্র ও রাজনীতি সম-অধিকার ও সম-মর্যাদাসম্পন্ন নাগরিক হিসেবে তাদের দেখতে চায়নি, দেখতে চেয়েছে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘দ্বিধাহীন চিত্তে বলতে চাই, দেশের ১২ শতাংশ ভোটারকে উপেক্ষা করে, পাশ কাটিয়ে কোনো রাজনৈতিক দল ও জোটের ক্ষমতায়ন যেমন সম্ভব নয়, তেমনি মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ বিনির্মাণও সম্ভব নয়। কেননা ভোটের রাজনীতিতে এরাই হলো নিয়ামক শক্তি।’

রানা দাসগুপ্ত বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাজাকার, স্বাধীনতাবিরোধী ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত পার্লামেন্ট চাই যেখানে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে নিপীড়কের ভূমিকা পালন করবে না। রাজনীতিকে ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবহার করবে না।’ জাতীয় রাজনীতিতে ইতিমধ্যে গুণগত পরিবর্তন হয়েছে- এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এ জন্য সরকার, দেশের সব রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতৃবৃন্দকে স্বাগত জানাই। উৎসবমুখর পরিবেশে এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে গোটা জাতির মতো আমরাও প্রত্যাশা করি।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিগত ছয়মাস ধরে সংখ্যালঘুদের সার্বিক পরিস্থিতি, আমাদের ভাবনা, আমাদের আহ্বান- এ নিয়ে দেশের সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ও নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দেখা করেছি। তারা আমাদের কথা শুনেছেন এবং আমরা যে অবস্থা তাদের কাছে তুলে ধরেছি সে ব্যাপারে তাদের কোনো দ্বিমত আছে বলে তারা বলেন নি।

কিন্তু তারপরও আমরা দেখতে চাই রাজনৈতিক দল ও জোট সামনের নির্বাচনে পরীক্ষায় অবতীর্ণ হবে এবং তারা যা  বলেছেন প্রকৃত অর্থে তা পালন করবেন কি-না?’ আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সংখ্যালঘু ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তার স্বার্থে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে একটি হেল্পলাইন ও মনিটরিং সেল চালু থাকবে বলে জানান রানা দাসগুপ্ত। ঐক্য পরিষদ নেতা ড. নিম চন্দ্র ভৌমিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজল দেবনাথ, বাসুদেব ধর, মঞ্জু ধর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি, তাপস পাল প্রমুখ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর