ঢাকার আশুলিয়ায় বাসে মেয়েকে হত্যা এবং বাবাকে ফেলে দেয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পারিবারিক বিরোধ থেকে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানতে পেরেছে তারা। মামলার বাদি জামাতা নূর ইসলাম শ্বাশুড়িকে খুন করতে ওই বাসচালকের সঙ্গে ১০ হাজার টাকায় চুক্তিও করে। ঘটনার এক সপ্তাহ পর বাসটি জব্দ এবং তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর আজ দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান, পিবিআইয়ের ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার।
গত ৯ই নভেম্বর সন্ধ্যায় আশুলিয়ায় টাঙ্গাইলগামী একটি বাসে হত্যা করা হয় জরিনা খাতুনকে (৪৫)। বাস থেকে ফেলে দেয়া হয়েছিল তার বাবা আকবর আলী মণ্ডলকে (৭০)। আকবর আলীর কাছে খবর পেয়ে ওইদিন রাতেই মরাগাং এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কের পাশ থেকে তার মেয়ের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে শ্বাশুড়ি খুন হওয়ার পর অজ্ঞাতদের আসামি করে আশুলিয়া থানায় অভিযোগ দিয়েছিলেন জামাতা ও নিহতের মেয়ে রোজিনার স্বামী নূর ইসলাম। কিন্তু তদন্তে বেরিয়ে আসে নূর ইসলাম নিজেই এই হত্যাকান্ডে সঙ্গে জড়িত।
এই অভিযোগে নূর ইসলাম, নূরের মা আমেনা বেগমকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। পাশাপাশি স্বপন নামে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ছিলেন নূর ও রোজিনার বিয়ের ঘটক।
পিবিআই ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে এই বাসে তুলে এই হত্যাকা- ঘটানো হয়। হত্যাকা- ঘটানোর জন্য বাসচালকের সঙ্গে ১০ হাজার টাকায় চুক্তি হয়েছিল বলে জানান তিনি। পিবিআই কর্মকর্তা জানান, বাসটি আটক করা হয়েছে। তবে চালক-হেলপারসহ চারজনকে খোঁজা হচ্ছে।
নিহত জরিনা সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালী থানার খাস কাওলিয়া গ্রামের মহির মোল্লার স্ত্রী। তিনি নিজের বাবাকে নিয়ে আশুলিয়ায় জামাতা নূরের বাড়িতে এসেছিলেন। সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জে ফেরার জন্য আশুলিয়ার ইউনিক এলাকা থেকে টাঙ্গাইলগামী বাসে ওঠেন আকবর ও জরিনা। ওই সময় আকবর বলেছিলেন, পথে বাসে তাকে মারধর করে মোবাইল ফোন ও টাকা-পয়সা কেড়ে নিয়ে বাসটি আশুলিয়ার দিকে ফেরত আসে এবং তাকে আশুলিয়া ব্রিজের কাছে ফেলে দেয়। তিনি তখন টহল পুলিশকে ঘটনা জানালে তারা প্রায় এক কিলোমিটার দূরে মরাগাং এলাকায় মহাসড়কের পাশে জরিনার লাশ পায়। জরিনার শরীরে কোনো ক্ষত না থাকলেও গলায় কালো দাগ ছিল।