× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

গাঁও-গেরামের ভোটের মাঠ প্রচারণাযুদ্ধ ফেসবুকে

বাংলারজমিন

ইমাদ উদ দীন, মৌলভীবাজার থেকে
১৮ নভেম্বর ২০১৮, রবিবার

ফেসবুক কিংবা হোয়াটসঅ্যাপ। এখন দল ও মনোনয়নপ্রত্যাশী আর প্রতীক বন্ধনায় উত্তাল। এ যেন এক অন্যরকম প্রচারণার প্রতিযোগিতা। একটু পর পর দেয়া হচ্ছে আপডেট সংবাদ। নিজের পছন্দের প্রার্থী কি বলছেন। কোথায় যাচ্ছেন। কি করছেন কিংবা ভাবছেন। কোথায় জনসভা বা অন্য অনুষ্ঠান সবই তথ্য জানানো হচ্ছে।
তুলে ধরা হচ্ছে ছবি সংবলিত মনোনয়ন প্রত্যাশীর রাজনৈতিক ও সামাজিক নানা কর্মকাণ্ড। ফিরিস্তি গাওয়া হচ্ছে দল, ব্যক্তি ও প্রতীকের। চলছে নীরবে এমন সরব প্রচারণা। নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন জনপ্রিয় এ মাধ্যম। ছোট্ট আয়োজনে কম খরচ আর অল্প সময়ে দ্রুত ব্যাপক প্রচারণা। তাই পছন্দনীয় হয়ে উঠছে এই মাধ্যম। সস্তা জনপ্রিয়তা ও প্রচারণার প্রতিযোগিতার এমন আসক্তিতে এখন ভুগছেন প্রার্থীরা। আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে এখন এমন দৃশ্যই প্রতীয়মান হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। প্রার্থীর নামে অথবা সমর্থক গোষ্ঠী কিংবা গ্রুপ। দলের নাম, প্রতীক কিংবা ছদ্মনাম। এখন নামে-বেনামে আর নানা ছুঁতায় খোলা হচ্ছে ফেসবুক কিংবা হোয়াটসঅ্যাপ আইডি। আর চালানো হচ্ছে জোর নির্বাচনী প্রচারণা। প্রার্থীর অতীত ও বর্তমান দলীয় কিংবা সামাজিক নানা কর্মকাণ্ড। সবই প্রতিদিন প্রতি ঘণ্টায় তুলে ধরা হচ্ছে এ সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থী। নবীণ কিংবা প্রবীণ সব বয়সের প্রার্থীদের কাছে এখন কদর এমন প্রচারণার। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে উপলক্ষ করে চলছে এমন সাইবার প্রতিযোগিতা। এ যেন এক অন্যরকম প্রচারণার যুদ্ধ। রাত-দিন চলে অবিরাম।
জানা যায় দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই আইডিগুলো নিজে চালাতে পারেন না বা ভালো বুঝেন না তিনি এই গুরুদায়িত্ব দিচ্ছেন নিজের আস্থাভাজন কাউকে। তারপরও সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখছেন। তথ্যগত কোনো ভুল হলে সঙ্গে সঙ্গে তা শুধরে দিচ্ছেন। আবার এদের মধ্যে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভালো বুঝেন এমন তরুণদের নির্দিষ্ট টাকা বেতন দিয়েও চালাচ্ছেন তাদের ফেসবুক। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নিজেদের পক্ষে চাইছেন বেশি বেশি স্ট্যাটাস বেশি বেশি আপলোড। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এসব প্রচার প্রচারণা যে সব সময় তাদের পক্ষে যাচ্ছে এমনও নয়। নিজ দল বা বিরোধীদলের প্রতিপক্ষের হাতেও হতে হচ্ছে নাজেহাল। একে অপরকে ঘায়েল করার জন্য নিজেদের পক্ষের আইডি থেকে দিচ্ছেন নানা ইঙ্গিতপূর্ণ স্ট্যাটাস। চলে একে অপরের প্রতি পাল্টাপাল্টি স্ট্যাটাস আর কমেন্টস। বসে নেই তাদের নিজ বলয়ের কর্মী, সমর্থক ও ভক্তরা। ওই স্ট্যাটাসগুলোতে নানা যুক্তিপূর্ণ কমেন্ট দিয়ে সাইবার এই যুদ্ধ বেশ জমিয়ে তুলছেন। কথার পিঠে কথায় প্রার্থীদের অনেক অজানা তথ্য বেরিয়ে আসছে জনসম্মুখে। এতে কোনো কোনো সময় চরম বিব্রতকর অবস্থায়ও পড়ছেন নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক নেতারা। আবার কখন এই ঝগড়া বা যুদ্ধ এমন পর্যায়ে পৌঁছায় থানা পুলিশ ও আদালত পর্যন্তও গড়ায়। তারপরও থেমেই নেই এই সাইবার যুদ্ধ। সারাক্ষণই চলে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। প্রার্থীরা এই প্রচারণার মাধ্যমে মনোযোগী ও খুশি হওয়ায় এদিকেই ঝুঁকছেন তাদের অনুসারী ও সর্মথকরা। সবার দৃষ্টি এই প্রচারণায় থাকায় এখন বেশ জমে উঠেছে এই সাইবার যুদ্ধ। মৌলভীবাজার জেলার ৭টি উপজেলা নিয়ে ৪টি সংসদীয় আসন। জানা যায়, এই ৪টি আসনের মধ্যে সব ক’টি আসনেই চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই প্রচার-প্রচারণা। তবে এখন সবচেয়ে বেশি প্রচার-প্রচারণা বা সাইবার যুদ্ধ চলছে মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে। এই আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা সাবেক ডাকসুর ভিপি ও এমপি সুলতান মো. মনসুর আহমদ ও বিকল্প ধারার মাধ্যমে সদ্য যুক্তফ্রন্টে যোগদানকারী সাবেক বিএনপি ও কিংসপার্টির নেতা ও এমপি এমএম শাহীনকে নিয়ে। এ আসনটিতে এই দু’জনকে নিয়েই পক্ষে-বিপক্ষে চলছে তুমুল সাইবার যুদ্ধ। আর এ মাধ্যমে সবচেয়ে কম প্রচারণা চলছে মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা ও জুড়ী) আসনে। তবে বসে নেই মৌলভীবাজার-৩ (মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর) ও মৌলভীবাজার-৪ (কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল) আসনের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ও তাদের সমর্থক ও অনুসারীরা। মৌলভীবাজার-১ আসন থেকে বেশি ও মৌলভীবাজার-২ আসন থেকে কম হলেও এই মাধ্যমে প্রচার-প্রচারণা থেমে নেই। যে যার মতো করে চালাচ্ছেন এই ব্যতিক্রমী প্রচারণা। জেলার ৪টি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগ থেকে ২৭ জন। বিএনপি থেকে ২৪ জন। অন্যান্য দল ও স্বতন্ত্র থেকে ২৫-৩০ জন প্রার্থী অংশ নিতে ইচ্ছুক বলে জানা গেছে। তাদের সবার প্রচার-প্রচারণায় এ জেলায় বেশ জমে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ভোটের মাঠের নির্বাচনী আমেজ। তবে সচেতন মহলের দাবি শুধু এই সাইবার যুদ্ধ চালিয়ে নয় এরই সঙ্গে মাঠে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মিশে চালাতে হবে আসন্ন ভোটের প্রচারণা। তবেই আসবে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর