মিরপুর-১৪ নম্বর পুলিশ কমিউনিটি হলের পেছনে গড়ে উঠেছে ‘বিজয় রাকিন সিটি’। এখানে ৫০ বিঘা জায়গার উপর নির্মাণ হচ্ছে বিশ্বমানের সিঙ্গাপুর-দুবাই আদলের ১৯৫০টি ফ্ল্যাট। এর মধ্যে সাড়ে চারশতাধিক ফ্ল্যাটের মালিক হচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা পরিবার। ইতিমধ্যে হস্তান্তরও শুরু হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে ফ্ল্যাট হস্তান্তর, গ্রাহকদের শতভাগ আস্থা অর্জন, রিয়েল স্টেট ব্যবসার একমাত্র উদাহরণ এ প্রকল্পের সার্বিক দিক নিয়ে আলাপকালে এসব কথা বলেন রাকিন ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি (বিডি) প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএকে একরামুজ্জামান। তিনি বাংলাদেশে টাইলস শিল্পের অন্যতম পাইওনিয়ার। তার আরএকে কোম্পানির টাইলস দেশব্যাপী সমাদৃত।
আরএকের কর্ণধার একরামুজ্জামান বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের জন্য তৈরি করা অত্যাধুনিক ‘বিজয় রাকিন সিটি’র মতো আবাসন দেশে দ্বিতীয়টি নেই।
সাড়ে চারশ’র অধিক মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ‘বিজয় রাকিন সিটি’ থেকে ফ্ল্যাট পাবেন। ইতিমধ্যেই ‘দ্য বিগিনিং অব আ নিউ ড্রিম’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গ্রাহকদের মাঝে ফ্ল্যাটের চাবি হস্তান্তর করা হয়েছে। ছয় মাসের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সব গ্রাহকের মাঝে ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা হবে। যথাসময়ে ফ্ল্যাট বুঝে পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন গ্রাহকরা।
একরামুজ্জামান বলেন, বর্তমানে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার দুর্দিনে বিজয় রাকিন সিটির গ্রাহকদের মাঝে ফ্ল্যাট হস্তান্তর ছিল একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে রাকিন গ্রাহকদের মধ্যে বিশ্বমানের ফ্ল্যাট হস্তান্তর করেছে। রাকিন সব সময় সততা ও বিশ্বমানের স্তম্ভ হিসেবে মাথা উঁচু করে থাকবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বাণিজ্যিক ভবনও হস্তান্তর করা হয়েছে। আগামীতে প্রতিমাসে ২ থেকে ৫টা করে ভবন গ্রাহকদের কাছে হস্তান্তর করা সম্ভব হবে। আগামী বছরের জুন মাসে পুরো প্রকল্প শেষ হবে। ইতিমধ্যেই কমিটমেন্ট অনুযায়ী পণ্য বিক্রি করায় গ্রাহক পছন্দের শীর্ষে উঠে এসেছে বিজয় রাকিন। তিনি বলেন, আমাদের একটা কমিটমেন্ট ছিল দেশের ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি। একটা উদাহরণ তৈরি করা। এটা তৈরি হয়েছে ‘বিজয় রাকিন সিটি’র মাধ্যমে। ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রকল্পে আরো বিনিয়োগ করার ইচ্ছা আছে। এটি দেশে একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সারা দেশে যেখানে ফ্ল্যাটের বিক্রি নিয়ে ক্রাইসিস চলছে। রাকিনের ক্ষেত্রে এটা সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। খুব সহজেই ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে বা হচ্ছে। গ্রাহকরা আমাদের ওপর আস্থা রাখায় তাদের ধন্যবাদ জানাই।
তিনি বলেন, গতানুগতিক ধারার যে ধরনের আবাসন প্রকল্প আমাদের দেশে হয়, সেখান থেকে বের হয়ে আসার জন্যই ‘বিজয় রাকিনে’র সৃষ্টি। ঢাকার যেকোনো জায়গায় ৫ কাঠা বা ১০ কাঠা জমি কিনে, কয়েক তলা বিল্ডিং নির্মাণ, তারপর বিক্রি। যেখানে আধুনিক বসবাসের জন্য কোনো উপযোগী ব্যবস্থা থাকে না। তিনি বলেন, সেখান থেকে বের হওয়ার জন্যই আলাদা প্রকল্প হাতে নেয়া। এরপর যে প্রকল্প হাতে নিতে যাচ্ছি সেটা হলো কাঁচপুর ব্রিজের কাছে ৫ হাজার ফ্ল্যাট তৈরি করা। এখানে ডিজাইন-ড্রয়িংয়ের কাজ শেষ। সাইট মোবিলাইজেশনের কাজ চলছে। আগামী বছরের শুরুর দিকে কাজ শুরু হবে। এই জায়গার আবাসন হবে স্বল্প আয়ের বা মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য একটা বসবাসের প্রকল্প। যাদের জন্য ঢাকায় একটা ফ্ল্যাট কেনা খুবই কঠিন বিষয়। এখানে ৩০ লাখ টাকায় একটা ফ্ল্যাট পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, যারা উচ্চবিত্ত মানসিকতা পোষণ করে তাদের কারো জন্য ‘রাকিন সিটি’র সেবা রাখার ইচ্ছা নেই। আমাদের টার্গেট হলো মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত। তাদের জন্য আবাসন তৈরি করা। মান হবে বিশ্বমানের।
প্রকল্প এলাকায় দেখা গেছে, দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে প্রকল্পের কাজ। প্রতিদিন প্রায় শতাধিক শ্রমিক নির্মাণকাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ ছাড়া এই প্রকল্পের আশেপাশে একাধিক ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও দৃশ্যমান মেট্রোরেল প্রকল্পের কারণে দ্রুত গড়ে উঠছে নতুন নতুন বসতি। এক দশক আগেও এলাকাটি ছিল জলাভূমি। কিন্তু ২০১৮ সালে এসে পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। পুরো এলাকা ছেয়ে গেছে সুরম্য অট্টালিকায়। স্থানীয়ভাবে জায়গাটি বাইশটেকী নামেই পরিচিত। কোম্পানির সিওও লে. কর্নেল (অব.) একেএম জহুরুল ইসলামের মতে, ক্রেতাদের দারুণ সাড়া পাচ্ছি। আমাদের প্রায় ৯০ শতাংশ ফ্ল্যাট ইতিমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে।
এক নজরে ‘বিজয় রাকিন সিটি’: প্রকল্প এরিয়া ৫০ বিঘা। আবাসিক ভবনের সংখ্যা ৩৬। প্রতিটি ভবন ১৫ তলাবিশিষ্ট। প্রতিটি ভবন বিল্ডিং কোড অনুসারে। ভূমিকম্প সহনীয়। প্রতিটির ছাদে থাকছে বাগান। দুইটি করে লিফট ও সিঁড়ি, স্বয়ংক্রিয় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ। ১২ তলাবিশিষ্ট কমিউনিটি বিল্ডিং, সুবিশাল মসজিদ, নার্সারি স্কুল ও আন্তর্জাতিক মানের সেকেন্ডারি স্কুল। থাকছে সুপারমার্কেট, ব্যাংক ও এটিএম বুথ। বিনোদন ও স্বাস্থ্যচর্চায় রয়েছে সুইমিংপুল, টেনিস, বাস্কেটবল ও চারটি খেলার মাঠ। বাচ্চাদের জন্য রয়েছে সুন্দর শিশুপার্ক। আরএকে ‘রাকিন’ দুবাই-মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক নির্মাণ কোম্পানি। রাকিন শব্দের অর্থ ‘স্তম্ভ ও বিশ্বস্ত’।
একরামুজ্জামান বলেন, এই প্রকল্প কোনো বাণিজ্যিক দিক বিবেচনা করে তৈরি করা হয়নি বরং সামাজিক দায়বদ্ধতার দিকটিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। মানুষ যেন এখানে এসে তার স্বপ্নের বাস্তবায়ন দেখতে পায়। এই প্রজেক্টে বসবাস করে গ্রাহকরা সিঙ্গাপুর, দুবাই ও ওয়াশিংটনের টেস্ট পাবেন।